• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯
শৈলকুপায় ৮ মাসেও খোঁজ মেলেনি ইজিবাইক চালক লিমনের

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

শৈলকুপায় ৮ মাসেও খোঁজ মেলেনি ইজিবাইক চালক লিমনের

  • শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১০ মার্চ ২০২১

গরীব কৃষক বাবার সংসারের অভাব দূর করতে ইজিবাইক নিয়ে রাস্তায় নামে ঝিনাইদহের শৈলকুপার ত্রিবেনী ইউনিয়নের আনন্দনগর গ্রামের রেজাউল শেখের ছেলে কিশোর লিমন হোসেন বাঙ্কার (১৬)। জানা যায়, গত ৮ মাস আগে প্রতিদিনের মত সকালে ইজিবাইক চালাতে বাড়ি থেকে বের হয় লিমন। কিন্তু আজও কোনো হদিস মেলেনি। প্রতিদিনই পথ চেয়ে বসে থাকে মা, কখন যেন তার সন্তান ফিরে আসবে। কোথাও লাশের সন্ধান পাওয়া গেলে দৌড়ে ছুঁটে যান সেখানে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় এখন পর্যন্ত খোঁজাখুজি করছে, কিন্ত তার কোনো সন্ধান কেউ দিতে পারেনি। আদেও বেচেঁ আছে না মারা গেছে কেউই তার খবর জানে না।

এদিকে নিখোঁজের ঘটনায় সন্দেহ করে কয়েকদিন আগে লিমনের বাবা আনন্দনগর গ্রামের আফান মন্ডলের নামে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। থানায় লিখিত অভিযোগ করায় গ্রাম্য শালিশ বসিয়ে লিমন এর পরিবারকে ৭ দিনের মধ্যে অভিযোগ তুলে নিতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অন্যথায় তাদের গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বলেছে ইউপি সদস্য ফজলু মন্ডল। একদিকে সন্তান হারানোর বেদনা অন্যদিকে অভিযোগ করে বিপাকে পড়েছে পরিবারটি।

এবিষয়ে ইউপি সদস্য ফজলু মন্ডল বলেন, লিমন হোসেন বাঙ্কার নিখোঁজের ঘটনায় তার বাবা একটি জিডি করে। তখন তার বাবা রেজাউলকে বলেছিলাম কারো প্রতি কোনো সন্দেহ হয় কি না হলে থানায় লিখিত অভিযোগ বা মামলা দিতে। লিমনের বাবা তখন বলেছিল, আমার কারো প্রতি সন্দেহ বা অভিযোগ নাই। তাহলে ৮ মাস পর কেন সে আনন্দনগর গ্রামের আফান মন্ডলের নামে অভিযোগ দিয়ে গ্রামটিকে অশান্তি ডেকে আনছে। যে কারণে লিমন এর পরিবারকে অভিযোগ তুলে নিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ না তুললে গ্রামের স্বার্থে তাকে গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে।

আনন্দনগর গ্রামের আফান মন্ডল জানায়, লিমন হোসেন বাঙ্কার তার বাড়ীতে ৩/৪ বছর ধরে থাকতো। নিখোঁজের দিন সকালে আনন্দনগর গ্রামের হাসেম এর কাছ থেকে ইজিবাইক ভাড়া করে চালাতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। লিমনকে পাওয়ার জন্য তারাও বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করছে।

বাবা রেজাউল শেখ বলেন, তার ছেলে লিমন হোসেন বাঙ্কার নিখোঁজের আগেরদিন রাতে আনন্দনগর গ্রামের আফান এর বাড়িতে ছিল। গত ৯/০৭/২০ ইং তারিখ সকালে লিমন ভাড়া মারার উদ্দ্যেশে ইজিবাইক নিয়ে শেখপাড়া যায়। দুপুর থেকে লিমন তার ব্যবহত মোবাইল ফোন রিসিভ করেনা। সন্ধ্যা থেকে লিমন এর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর থেকে লিমন আর বাড়ি ফেরেনি। নিখোঁজের একদিন পর সে শৈলকুপা থানায় একটি জিডি করেন। জিডি নং-৪৮৫, তাং-১০/০৭/২০২০ ইং। আজ পযন্ত লিমনের কোনো খোঁজ না পাওয়ায় কয়েকদিন আগে লিমনকে উদ্ধারের জন্য আফান মন্ডলের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে। এখন অভিযোগ তুলে নিতে গ্রামের মেম্বার ও মাত্বব্বরা বিভিন্ন চাপ দিয়ে চলেছে।

শৈলকুপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম জানান, লিমন নিখোঁজের ঘটনায় তার বাবা প্রথমে একটি জিডি করে। পরবর্তীতে একটি লিখিত অভিযোগ করেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে লিমনকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তিনি আরো বলেন, লিমনের পরিবারকে কেউ হুমকি-ধামকি দিলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। সে যেই হোক না কেন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads