• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
রায়েরবাজার গোরস্তানে দীর্ঘ হচ্ছে কবরের সারি

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

রায়েরবাজার গোরস্তানে দীর্ঘ হচ্ছে কবরের সারি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২০ এপ্রিল ২০২১

করোনা সংক্রমণে মৃত্যু বাড়তে থাকায় রাজধানীর করোনা ডেডিকেটেড একমাত্র কবরস্থান রায়েরবাজারে বাড়ছে কবরের সংখ্যা। চলতি মাসের দুই সপ্তাহে এখানে দাফন করা হয়েছে একশোরও বেশি মৃতদেহ।

কবরস্থানের একজন কর্মকর্তা জানান, গত মাসে এখানে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ২৬ জনের মরদেহ দাফন করা হয়েছিল। দাফনের সংখ্যা বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি সামাল দিতে অগ্রিম কবর খুঁড়ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এজন্য খনন যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। করোনাভাইরাসে গতকাল সোমবার ১১২ জন মারা যান, যা গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। কবরাস্থানের তত্ত্বাবধায়ক আবদুল আজিজ বলেন, মরদেহের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ডিএনসিসির খননযন্ত্র দিয়ে গত রবিবার থেকে প্রতিদিন ৩০টি করে কবর খোঁড়া হচ্ছে। মহামারী শুরু হওয়ার পর গত বছরের এপ্রিল ও জুন মাসে মরদেহ আসা বেড়েছিল। কারণ সাধারণ ছুটির কারণে মানুষ ঢাকার বাইরে মরদেহ নিয়ে যেতে পারছিল না। এই বছরের প্রথম তিন মাসে আসা মরদেহের সংখ্যা ছিল গড়ে ৩০টির কম।

কবরস্থানের কর্মীরা জানান, ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী (পিপিই), গ্লাভস ও স্যানিটাইজারের অভাবে মরদেহ দাফন করার সময় স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনাগুলো মেনে চলতে তাদের সমস্যা হচ্ছে। গত তিন বছর ধরে কবরস্থানে কাজ করা শাইখুল ইসলাম বলেন, দাফন কাজের জন্য আমাদের গতবছর পিপিই দেওয়া হয়েছিল। কিন্ত এবছর এখনো কোনো পিপিই দেওয়া হয়নি। স্বাস্থ্যবিধির দিকনির্দেশনাগুলো সঠিকভাবে না মেনেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। দাফনের জন্য কমপক্ষে ছয় জন মানুষের প্রয়োজন। দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আমরা উদ্বিগ্ন। ঢাকা মেডিকেল কলেজের ভাইরোলোজি (ভাইরাস বিদ্যা) বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সুলতানা শাহানা বানু জানান, কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত মরদেহ দাফন করার সময় পিপিই পরা এবং অন্য সুরক্ষাসামগ্রী বাধ্যতামূলক। যদিও মরদেহ থেকে ভাইরাস ছড়ায় না তবে একজন মানুষ মারা যাওয়ার পর কয়েক ঘণ্টা ভাইরাসটি বহন করতে পারে।

ডিএনসিসি পরিচালিত মোহাম্মদপুর এলাকায় ৮০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত রায়েরবাজার কবরস্থান ঢাকার সবচেয়ে বড় কবরস্থান। ডিএনসিসির সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অফিসার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, সমপ্রতি করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতদের দাফনের সংখ্যা বেড়েছে। গতবছর করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর পর থেকে এখানে এ পর্যন্ত প্রায় এক হাজার ১০০ জনের মরদেহ দাফন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আসাদুজ্জামান বলেন, ধারণা করছি কিছু মানুষ গোপনে রাজধানীর অন্য কবরস্থানে মরদেহ দাফন করছেন। এছাড়া, অনেকেই মরদেহ বিভিন্ন জেলায় তাদের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন।

কবরস্থানের কর্মীরা জানান, ব্লক-৮ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মরদেহ দাফনের জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে। এখানে এখনো অনেক জায়গা ফাঁকা রয়েছে। প্রতিটি মরদেহ দাফনের জন্য ৫০০ টাকা নেওয়া হলেও করোনাভাইরাসে মারা যাওয়াদের জন্য কোনো টাকা নেওয়া হয় না। কবরস্থানটিতে দুই শিফটে ৩২ জন কাজ করেন।

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads