• শনিবার, ৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪২৯
'বাংলাদেশে দ্রুত টিকা পৌঁছাবে'

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

'বাংলাদেশে দ্রুত টিকা পৌঁছাবে'

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৩ এপ্রিল ২০২১

ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেছেন, বাংলাদেশ যাতে টিকা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে, সেজন্য তার দেশ কাজ করে যাচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ খুব দ্রুত বাকি টিকাগুলো পেয়ে যাবে। চার দিনের ছুটি কাটিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে ঢাকায় ফেরার সময় সাংবাদিকদের তিনি এসব বলেন। 

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা টিকার প্রাপ্যতা নিয়ে সংকট রয়েছে। সরবাহের তুলনায় চাহিদা অনেক বেশি। সবাই মিলে টিকার প্রাপ্যতা ও সরবরাহ বাড়াতে কাজ করছি। বাংলাদেশে টিকার কার্যক্রম যেন চলমান থাকে, সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা যতগুলো দেশকে টিকা দিয়েছি, তার মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি টিকা গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশকে ৭০ লাখ টিকা সরবরাহ করা হয়েছে।

কিন্তু এখন সংক্রমণ পরিস্থিতিও নাজুক হয়ে উঠেছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউটা অনেক বড়। ভারতের অবস্থাও দিনদিন কঠিন হচ্ছে। ভারতে এ মুহূর্তে টিকা সংকট আছে। উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে। আমরা সবাই একত্রে কাজ করছি। আশা করছি, সবাই মিলে এই পরিস্থিতি থেকে বের হতে পারব। শিগগিরই বাংলাদেশেও টিকা সরবরাহ করা হবে। টিকার জন্য ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের কোনো ভাটা পড়বে না।

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণেই অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বেশি ভ্যাকসিন সরবরাহ চুক্তি আছে এবং চুক্তিমতে বাকি টিকাগুলো ক্রমান্বয়ে সরবরাহ করা হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে ভারত যে বিশেষ গুরুত্ব দেয়। এ কারণে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে এসেছেন। আখাউড়ার ইউএনও নূরে আলম এবং আখাউড়া থানা ওসি মিজানুর রহমান স্থলবন্দরে দোরাইস্বামীর সঙ্গে ছিলেন।

করোনার বিরুদ্ধে লড়তে বাংলাদেশে দেওয়া হচ্ছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড। এই টিকার তিন কোটি ডোজ কিনতে বাংলাদেশ সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি করে। সে অনুযায়ী মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে বাংলাদেশে দেড় কোটি ডোজ টিকা আসার কথা থাকলেও সেরাম ইনস্টিটিউট দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ পাঠাতে পেরেছে। এ ছাড়া ভারত সরকারের উপহার হিসেবে এসেছে আরো ৩২ লাখ ডোজ টিকা। ভারত অভ্যন্তরীণ চাহিদা আগে মেটানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় মার্চ থেকে টিকা রপ্তানি আটকে আছে।

প্রসঙ্গত, ভারত থেকে বাংলাদেশ যে পরিমাণ টিকা কিনেছে তার চালান না আসায় টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। ভারত টিকা রপ্তানি স্থগিত করায় এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা। তবে আগামী তিন মাসের মধ্যে এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বিশ্বের বৃহত্তম টিকা উৎপাদনকারী ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আদর পুনেওয়ালা। গত বুধবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, টিকা রপ্তানির কোনো নিশ্চয়তা নেই। এমন সংক্রমণের সময়ে আগামী দুই মাসের মধ্যে রপ্তানির দিকে তাকানো উচিত হবে না। জুন-জুলাইয়ে আমরা আবারো সামান্য পরিমাণে টিকা রপ্তানি শুরু করতে পারি। তবে এই মুহূর্তে আমরা দেশকেই অগ্রাধিকার দেব। তার এই বক্তব্যের পর টিকা পাওয়া নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে ভারতের হাইকমিশনার দোরাইস্বামী গতকাল নির্ধারিত সময়ে চুক্তির টিকা বাংলাদেশে পৌঁছাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, অক্সফোর্ডের তিন কোটি ডোজ টিকা আনতে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে গত বছরের পাঁচ নভেম্বর যে চুক্তি হয়েছিল তাতে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে তিন কোটি ডোজ টিকা রপ্তানি করবে। সে অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মার্চ ও এপ্রিলে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টিকা পায়নি। এ অবস্থায় দেশে টিকার যে মজুত রয়েছে, তা সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। তাই বিকল্প উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের জন্য তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনসহ অন্যান্য দেশ থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads