• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
দুস্থের খাদ্য সুস্থের পেটে!

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

দুস্থের খাদ্য সুস্থের পেটে!

  • নীলফামারী প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৮ মে ২০২১

জেলার সৈয়দপুরে দুস্থ ও অসহায় মানুষের জন্য সরকারের মাসিক খাদ্য সহায়তা প্রকল্পের (ভিজিডির) সুবিধাভোগীর কার্ড পেয়েছে সচ্ছলরা। উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের পানিশালপাড়ার মো. নুর ইসলামের স্ত্রী মেরিনা খাতুন নুরীর কার্ড নং ০০০২৭৫। প্রকল্পের নিয়মানুযায়ী তিনি কার্ড পাওয়ার যোগ্য নয়। কারণ তার আছে পাকা বাড়ি ও নিজস্ব সাত বিঘা জমি। একই ওয়ার্ডের মালিপাড়ার পুলিং চন্দ্রের স্ত্রী হুরিয়াও কার্ড পেয়েছে। তার কাঁচা বাড়ি হলেও ১০ বিঘা জমি, ১০টি গরু ও আটটি ছাগল রয়েছে। এসব মধ্যবিত্তরা সুবিধা পেয়েছেন মেম্বার ও চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে। মেরিনা বলেন, আমার ছেলে ওই ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা সানোয়ারের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করে। তাই উপজেলা প্রশাসন ডেকে আমাকে কার্ড দিয়েছে। এজাড়াও পুলিং বলেন, মেম্বার লুৎফর রহমানের মাধ্যমে আমার স্ত্রীর নামে কার্ড করে নিয়েছি।

জানা গেছে, প্রকল্পের নিয়মানুযায়ী সুবিধা বঞ্চিত মানুষ যার ন্যূনতম পাঁচ শতক জমি বা পাকা বাড়ি নেই এবং ১৮ থেকে ৪৯ বছর বয়সী। এমন নারীদের জন্য মহিলা অধিদপ্তরের অধীনে প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হয় দুই বছর। উদ্দেশ্য দরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষের খাদ্যাভাব দূর করার মাধ্যমে সমাজে আর্থিক স্থীতিশীলতা বজায় রাখা। উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত তালিকা করা হয়। সে অনুযায়ী তালিকাভুক্তদের কার্ড প্রদান করা হয়। ওই সারির নারীরা ২৪ মাস (২ বছর) পর্যন্ত ৩০ কেজি করে চাল পাবে।

সূত্র মতে, ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে আবেদন করা হয়। এই সুযোগে ইউপি ডিজিটাল সেন্টারসহ বিভিন্ন কম্পিউটার দোকান থেকে আবেদন করার সুযোগ পায় অনেক সচ্ছল ব্যক্তি। সে কারণে চেয়ারম্যান-মেম্বররা অবৈধ সুবিধা নিয়ে সচ্ছল ও দলীয় ব্যক্তিদের রেজিস্ট্রেশন করিয়েছে। এই ভুয়া আবেদনকারীদের তালিকা যাচাইয়ের কথা থাকলেও পরে তা করা হয়নি। একারণে সচ্ছলরাও কার্ড পেয়েছে এবং চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে যথারীতি চাল উত্তোলন করেন। প্রকল্পের শর্ত উপেক্ষা করে অবৈধ সুবিধা নিয়ে ওইসব ব্যক্তিদের কার্ড দেওয়ায় প্রকৃত দরিদ্র মানুষ বঞ্চিত হয়েছে। এ ব্যাপারে, তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন বঞ্চিত অসহায় মানুষরা।

উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুয়েল চৌধুরী বলেন, নিয়ম মেনে তালিকা তৈরি করা হয়েছে। যারা যোগ্য তারাই কার্ড পেয়েছে। দুই একটা হয়তো এদিক ওদিক হতে পারে। সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে উপজেলা প্রশাসনকে সব দায়িত্ব দেওয়ায় তারাই সব করেছেন। অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন হওয়ায় মন্ত্রণালয় থেকে তালিকা পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নুরুন্নাহার শাহজাদী মুঠোফোন বলেন, যথাযথ নিয়ম মেনে তালিকা করে কার্ড দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দিয়ে যাচাই-বাছাই করাও হয়েছে। এরপরও যদি কোনো সচ্ছল ব্যক্তি কার্ড পেয়ে থাকে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসিম আহমেদ বলেন, এ ধরনের অনিয়মের কোনো তথ্য প্রমাণ থাকলে, যাচাই-বাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads