• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জৈষ্ঠ ১৪২৯
তদন্ত শেষ হয়নি ২ মাসেও

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

সরকারি ওষুধ পাচার

তদন্ত শেষ হয়নি ২ মাসেও

  • এস এম মিজান (গৌরনদী) বরিশাল
  • প্রকাশিত ০৮ মে ২০২১

গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি হাসপাতালের লক্ষাধিক টাকার বস্তাভর্তি ওষুধ পাচারের আলোচিত ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও দুই মাসে রিপোর্ট দিতে পারেনি তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটিকে ম্যানেজ করে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে কমিটির এক সদস্য জানিয়েছেন। দুই মাসেও রিপোর্ট দিতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, গত ৭ মার্চ রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি হাসপাতালের লক্ষাধিক টাকার বস্তাভর্তি ওষুধ গোপন পাচার করছিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মাজেদুল কাওসার, স্টোরকিপার সাইদুর রহমান, স্টাফ আনোয়ার হোসেন, খোকন ও দুলালসহ বহিরাগত আরো ৪/৫ জন সহযোগী। স্থানীয়রা বিষয়টি দেখার পরে তারা চ্যালেঞ্জ করলে চিকিৎসক মাজেদুল কাওছার ভয়ভীতি দেখিয়ে জনতাকে সরিয়ে দেন। পরে স্থানীয়রা মিডিয়া কর্মীদের খবর দেন। বিপুল পরিমাণ সরকারি ওষুধ পাচারের খবর পেয়ে সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বস্তাভর্তি ওষুধ পাচারের ছবি ও ভিওি চিত্র ধারণ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং আবাসিক মেডিকেল অফিসারের নির্দেশে দুইটি গেট তালাবদ্ধ করে দশজন সংবাদকর্মীকে প্রায় দুইঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরবর্তীতে খবর পেয়ে অন্য সংবাদকর্মীরা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবরুদ্ধ সাংবাদিকদের উদ্ধার করেছেন। অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় সংবাদকর্মীদের ফেসবুক লাইভে বিষয়টি দেখে হাসপাতাল কম্পাউন্ডে শত শত এলাকাবাসী ও সংবাদকর্মীরা জড়ো হয়ে রাতেই অভিযুক্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে প্রত্যহারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ইউএনওর সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস পুরো ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দিয়ে উত্তেজিত এলাকাবাসীকে শান্ত করেছেন। পরবর্তীতে ইউএনওর নির্দেশে পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোয়ার্টারের বাসা, বাসার পাশের ঝোপজঙ্গল থেকে বস্তা ও কার্টুনভর্তি পাচার করা সরকারি ওষুধ ও ইনজেকশন জব্দ করে। যার প্রত্যেকটির মেয়াদ রয়েছে আগামী ২০২২ সাল পর্যন্ত।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস ঘটনার পরের দিন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাসুম বিল্লাহ, সদস্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফয়সাল জামিল ও গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তৌহিদুজ্জামান ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মাহামুদুল হাসানকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটি এক মাস সময়সীমা বেঁধে দেন। তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাসুম বিল্লাহ, সদস্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফয়সাল জামিল ও গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তৌহিদুজ্জামান সরেজমিনে সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। এ সময় অবরুদ্ধ সাংবাদিক গিয়াস উদ্দিন মিয়া, খোকন আহম্মেদ হীরা, কাজী আল আমীন, হাসান মাহমুদের কাছ থেকে ঘটনা শোনেন এবং লিখিত সাক্ষ্য, ভিডিও ও ছবি গ্রহণ করেন। তদন্ত কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও দুই মাসে রিপোর্ট দিতে পারেনি কমিটি।

কমিটির আহ্বায়ক উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাসুম বিল্লাহ বলেন, তদন্ত প্রায় শেষের দিকে খুবই শিগগির রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।

সার্বিক বিষয়ে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপিন চন্দ্র বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রিপোর্ট পাওয়ার পর যার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads