• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
ক্রেতাশূন্য আমের বাজার

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

ক্রেতাশূন্য আমের বাজার

  • কে এম আনিছুর রহমান, সাতক্ষীরা
  • প্রকাশিত ২০ মে ২০২১

 

কে এম আনিছুর রহমান, সাতক্ষীরা হ

জেলার সাতটি উপজেলায় আম বাজারে ধস নেমেছে। মৌসুমের শুরুতে ঢাকাসহ বাইরের পাইকাররা বাজারে না আসায় আম পেড়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বসে থাকার পরও ক্রেতার অভাবে তারা আম বিক্রি করতে পারেননি। ইতোমধ্যে আম পাড়ার সরকারি নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে। অন্যদিকে গাছে থাকা প্রতিটি আমই ৫০ থেকে ৭৫ ভাগ পেকে গেছে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঝড়-বৃষ্টির হাত থেকে পরিপক্ক আম রক্ষা করতে জেলার আমচাষিরা ক্রেতা ও বাজারের অবস্থা না জেনেই যে যার মতো আম পাড়তে শুরু করেন। এ কারণে আকস্মিকভাবে একসঙ্গে বাজারে আমের আমদানি বেশি হয়েছে। আর ক্রেতাশূন্য বাজারে চাহিদার তুলনায় জোগান বেশি হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় পাইকাররা।

জেলার কলারোয়া উপজেলার বেলতলা বাজারের আমের আড়তদার ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম জানান, অপরিপক্ক আম পাড়ার ব্যাপারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় আমচাষিরা আম পাড়তে পারেননি। সরকারি বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় চাষিরা একযোগে আম পাড়া শুরু করেন। বর্তমানে লকডাউন চলছে। ফেরি ও দূরপাল্লার গাড়ি বন্ধ থাকায় ঢাকা ও ঢাকার বাইরের পাইকাররা বাজারে আসেনি। আম পচনশীল পণ্য হওয়ায় লাখ লাখ টাকার আম কিনে ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও। এসব কারণে গাছ থেকে আম পেড়ে মহাবিপদেই আছেন চাষিরা।

লকডাউনের কারণে আম ঢাকা বা অন্য কোনো জেলায় পাঠানো যাচ্ছে না বলে জানালেন বড় বাজারের আড়তদার হাসান এন্টারপ্রাইজের মালিক আবুল হাসান। তিনি বলেন, গত ২০ বছরের মধ্যে এবারই আমের দাম সর্বনিম্ন। আজ গোপালভোগ আম ৯০০ টাকা ও হিমসাগর ১৪০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। অনেকে আম বিক্রি করতে না পেরে আড়তে রেখে চলে গেছেন।

ঢাকার পাইকার আম ব্যবসায়ী আনারুল ইসলাম বললেন, লকডাউনে ঢাকার বাজারে আম পাঠানো যাচ্ছে না। দুই ট্রাক মাল (আম) পাঠিয়ে লোকসান হয়েছে। এখন ঝুঁকি নিয়ে আমের ব্যবসা করার আগ্রহ নেই। বোঝেন তো পচে গেলে আঁটিও কাজে লাগে না।

সাতক্ষীরা বড় বাজার কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বাবু জানালেন, বাজারে আমের জোগান বেশি, এজন্য দাম কম। তিনি বলেন, সরকারি নির্দেশনা থাকায় মে মাসের ১৭ তারিখের পর হিমসাগর আম বাজারজাত করার কথা। ঈদের ছুটির পর হঠাৎ করেই প্রথম দিনের বাজারে শত শত টন আম নিয়ে আসেন বাগান মালিকরা। লকডাউনের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় দেশের অন্য অঞ্চল থেকে ক্রেতা আসছে না। বাজারে চাহিদার তুলনায় জোগান বেশি হওয়ায় চাষিরা কাঙ্ক্ষিত দাম পাননি। ফলে চাষি ও স্থানীয় আম ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম বলেন, আম গাছ থেকে পাড়ার পর তা দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায় না। ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যে তা বিক্রি করতে না পারলে কৃষকের ক্ষতি হয়। তিনি বলেন, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে এবার ৫০০ টন আম বিদেশে রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু আম বিদেশে গেছে। কিছুদিনের মধ্যে আরো আম রপ্তানি হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads