• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯
আওয়ামী লীগ নেতার দখল থেকে ৮ একর জমি উদ্ধার

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

আওয়ামী লীগ নেতার দখল থেকে ৮ একর জমি উদ্ধার

  • চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৯ মে ২০২১

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে ভূমিহীনদের মাঝে বিনামূল্যে বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার কাজে বার বার বাধাগ্রস্ত করছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী। উপজেলা প্রশাসনের নির্দিষ্ট করা ইউনিয়নের উচিতারবিল মৌজাস্থ সরকারের এক নাম্বার খাস খতিয়ানের দুই দাগের আট একর জায়গা দখলে রেখে সেখানে এক্সকাভেটর দিয়ে পুকুর খনন করছিলেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, খবর পেয়ে গত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত দুই মৌজায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে দখলে নেওয়া খাস জায়গা পুনরুদ্ধার করা হয়। এ সময় জব্দ করা হয় জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে পুকুর খননে ব্যবহূত আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াসের এক্সকাভেটরটি। একই সময়ে উদ্ধারকৃত জায়গার চতুর্দিকে লাল পতাকা উঁচিয়ে দেওয়াসহ সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। জব্দকৃত এক্সকাভেটরটি আজ শনিবারের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পৌঁছে দিতে আদেশমূলে পত্র পাঠানো হয়েছে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন এবং পরিষদের সচিবকে।

চিরিঙ্গা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা সলিম উল্লাহ অভিযোগ করেন, সরকারের এক নাম্বার খাস খতিয়ানের উচিতার বিল মৌজার বিএস ৪০৪ দাগের সাড়ে সাত একর জায়গা দখল করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, যে জায়গাটি ভূমিহীনদের জন্য বাড়ি তৈরির জন্য নির্ধারিত। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক গত ২৯ এপ্রিল তিনিসহ ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার, একদল কর্মচারী ও শ্রমিকেরা গিয়ে সংরক্ষিত বনের ভেতর অবৈধ ইটভাটা লাগোয়া প্রায় সাড়ে সাত একর খাস জায়গা পরিচিহ্নিত করে চারদিকে লাল পতাকা উঁচিয়ে দেওয়াসহ সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন। কিন্তু তারা চলে আসার পর সেই খাস জায়গার লাল পতাকা এবং সাইনবোর্ড গুঁড়িয়ে দেয় গিয়াস উদ্দিনের ইটভাটার ম্যানেজার অনুপ রূদ্রসহ তার লোকজন। এরপর সেই জায়গা ইটভাটার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেখানে ইট বানানো, লাকড়ি মজুত করাসহ বিভিন্নভাবে ব্যবহার করে আসছেন। শুধু তাই নয়, দখলে নেওয়া সেই খাস জায়গার টিলা শ্রেণির পাহাড় সাবাড় করে সেখানে এক্সকাভেটর দিয়ে পুকুর খননেরও কাজ শুরু করেন আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস। সরজমিন এই পরিস্থিতি গত বৃহস্পতিবার দুপুরে চিরিঙ্গা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা (তহসিলদার) সলিম উল্লাহ প্রত্যক্ষ করে আসার পর সেখানে সাড়াশি অভিযান শুরু করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে নেতৃত্ব দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানভীর হোসেন। এ সময় সঙ্গে ছিলেন পুলিশসহ ভূমি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানভীর হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীনদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার জন্য নির্ধারিত খাস জায়গা দখলে নিয়ে টিলা শ্রেণির পাহাড় সাবাড় ও নাল শ্রেণির জমি এক্সকাভেটর দিয়ে কেটে সেখানে পুকুর খনন করার অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় পাহাড় সাবাড় ও পুকুর খননে ব্যবহূত একটি এক্সকাভেটর জব্দ করাসহ ইটভাটার নিয়ন্ত্রণ থেকে খাস জায়গা পুনরুদ্ধার করে চারদিকে ফের লাল পতাকা ও সাইনবোর্ড সাঁটানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, সরকারি খাস খতিয়ানের জায়গা দখলে নিয়ে টিলা শ্রেণির পাহাড় কাটাসহ জমির শ্রেণি পরিবর্তনের অভিযোগে পরিবেশ আইনেও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘কিছু জারজ সন্তান আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads