• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জৈষ্ঠ ১৪২৯
চাঁদপুরে কৃষক অ্যাপে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

চাঁদপুরে কৃষক অ্যাপে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা

  • মো. মহিউদ্দিন আল আজাদ, চাঁদপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৩ জুন ২০২১

চলতি বোরো মৌসুমে কৃষক অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধিত কৃষকরা ধান বিক্রি করতে শুরু করেছেন। অন্য বছরের চেয়ে বোরো ধানের ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকরাও সরকারের নিকট ধান বিক্রি করতে আগ্রহী। বাজারের চেয়ে দাম বেশী পাওয়ায় লাভবান হচ্ছে কৃষক। চাঁদপুর জেলা ধান ও চাল সংগ্রহে সরকারের নির্ধারিত লক্ষমাত্র অর্জনে এখন পর্যন্ত পাশবর্তী জেলার তুলনায় এগিয়ে। ধান ও চাল ক্রয় প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে আরো আড়াই মাস।

চাঁদপুর জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, নদীবেষ্টিত চাঁদপুরের ৮ উপজেলায়ই কম বেশী বোরো ধানের আবাদ রয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমে সরকার অভ্যন্তরীণ খাদ্য শস্য সংগ্রহের জন্য জেলায় ৮ হাজার ৮৬ টন বোরো ধান ও ৭ হাজার ১০১ টন সিদ্ধ চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়। ধানের মূল্য নির্ধারণ করা হয় ২৭ টাকা এবং সিদ্ধা চালের মূল্য নির্ধারণ হয় ৪০ টাকা। ৯ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত  ধান ৩০.৫০% ও সিদ্ধ চাল ৩৭.৬০% সংগ্রহ হয়েছে। আগামী ১৬ আগস্টের মধ্যে লক্ষ্যমাত্র অর্জনের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে জেলা খাদ্য বিভাগ।

শাহরাস্তি উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মজিবুর রহমান বলেন, উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় এ বছরই প্রথম কৃষকের অ্যাপ ব্যবহার করে পাইলট প্রকল্প হিসেবে কচুয়া,শাহরাস্তি, সদর ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার নিবন্ধিত কৃষকরা সরাসরি খাদ্য গুদামে এনে ধান বিক্রি করছেন। বাকী মতলব উত্তর,মতলব দক্ষিণ, হাজীগঞ্জ  ও হাইমচর উপজেলায় কৃষি বিভাগ থেকে দেয়া তালিকা অনুযায়ী সরাসরি খাদ্য গুদামে এসে ধান বিক্রি করবেন কৃষকরা।

হাজীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু ছালেহ বলেন,বিক্রি প্রক্রিয়ায় কোনো ধরণের মধ্যসত্ত্বভোগী না থাকায় সঠিক মূল্য ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কৃষককে তার টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে। পূর্বেই কৃষকদেরকে মাইকিং করে ধান বিক্রি করার জন্য সরাসরি আসার অনুরোধ করা হয়েছে। যার জন্য কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জেগেছে এবং প্রতিদিন অফিস চলাকালীন সময়ে সরাসরি খাদ্য গুদামে এসে ধান বিক্রি করে যাচ্ছেন।

চাঁদপুর সদরের বিষ্ণুপুর উনিয়নের কৃষক মান্নান গাজী ও মজিবুর রহমান বলেন,তারা ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সেবা কেন্দ্রে অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করেছেন। এরপর তাদেরকে উপজেলা খাদ্য বিভাগ থেকে ফোন করে ধাণ বিক্রির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। এর মধ্যে মান্নান গাজী ৬৫ মণ এবং মজিবুর রহমান ৪৫ মণ ধান বিক্রি করেছেন।

হাজীগঞ্জ উপজেলার তালিকাভুক্ত কৃষকরা সরাসরি গুদামে এনে ধান বিক্রি করছেন। কৃষকদে মধ্যে মো. সারোয়ার বিক্রি করছেন ৪৬মণ এবং মো. বাবুল বিক্রি করেছেন ৪৪মণ। তারা বলেন, এখন আর খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করতে এসে কোন ধরণের হয়রানি হয় না। বিক্রির পরে রশিদ দেয়া হয়। সরাসরি ব্যাংক একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করতে হয়।

শাহরাস্তি উপজেলার মেহের উত্তর ইউনিয়নের বানিয়াচোঁ গ্রামের কৃষক রুহুল আমিন বলেন, তিনি মাইকে ধান বিক্রির প্রচারণা জানতে পেরে এই বছর প্রথম ৫৫ মণ ধান বিক্রি করেছেন। প্রচারণা করায় অনেক কৃষকই ধান বিক্রির জন্য আসছেন। কোন ধরণের হয়রানি হননি তারা।

একই উপজেলার রায়শ্রী উত্তর ইউনিয়নের কৃষক আবু তাহের বলেন, তিনি গত কয়েকবছরই খাদ্য গুদামে সরাসরি ধান বিক্রি করেন। এ বছর বাজার মূল্যের চাইতে বেশী ১০৮০ টাকায় ধান বিক্রি করে তিনি লাভবান হয়েছেন। সরকার যেন এই ধরণের নিয়ম অব্যাহত রাখেন।

চাঁদপুর খাদ্য গুদামের ইনচার্জ তামিম হাসান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাদ্য সংগ্রহের জন্য যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আমরা তা শতভাগ বাস্তবায়নে কাজ করছি। দিন ও রাতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি কৃষক ও মিলস্ মালিকরা আমাদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন।

চাঁদপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) নিত্যানন্দ কুন্ডু বলেন, চাঁদপুর জেলা ৩১ মে পর্যন্ত সরকারি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ধান ৩০% ও চাল ৩৭% সংগ্রহ করেছে। সরকারের নির্দেশনা রয়েছে জুনের মধ্যে ৭৫% লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা। আশা করা হচ্ছে তা সফল হবে। এছাড়াও জেলার ১৭টি অটো এবং ২টি হাস্কিং রাইস মিলস্ সিদ্ধ চাল সরবরাহ শুরু করেছেন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads