• মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪২৯
মাঠ ও খালে আশ্রয়ণ প্রকল্প

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

মাঠ ও খালে আশ্রয়ণ প্রকল্প

  • খায়রুল আহসান মানিক, কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৪ জুন ২০২১

জেলার দেবিদ্বারে প্রচুর সরকারি খাস জমি থাকলেও উপজেলার ভানীতে খাল ও রাজামেহারের সৈয়দপুরে শিশু-কিশোরদের খেলার মাঠে তৈরি হচ্ছে আশ্রয়ণ প্রকল্প। এর ফলে ভানীর ৭/৮টি গ্রামের প্রায় এক হাজার একর জমিতে জলাবদ্ধতা ও রাজামেহারের ৯টি গ্রামের শিশু-কিশোরদের খেলার কোনো জায়গা থাকবে না। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকাবাসীর দাবি, খাল ও খেলার মাঠ রক্ষা করে বিকল্প খাস জায়গায় আশ্রয়ণ প্রকল্প করা হোক। তারা বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্প যেমন জরুরি, ঠিক তেমনই জরুরি খেলার মাঠ ও পানি নিষ্কাশনের খাল।

ওই দুই এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ভানী ইউনিয়নের ভানী গ্রামের উপরে দিয়ে বয়ে যাওয়া খালটির অধিকাংশ এলাকা ভানী গ্রামের সাইফুলের বাড়ির কাছে ভরাট করা হয়েছে। খাল ভরাট করার ফলে খালের ওপর থাকা কালভার্টের নিচে যেখানে পানি প্রবাহিত হওয়ার কথা সেখানে এখন মাটির বাঁধ দেখা যায়। ভেকু মেশিন দিয়ে খালের অধিকাংশ অংশ ভরাট করে চারদিকে মাটির বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। ওই স্থান থেকে দুইশত গজ দূরে সরকারি খাস জমিতে অবস্থিত একটি পুকুরে ড্রেজার মেশিন বসানো হয়েছে। সেই স্থান থেকে ড্রেজার মেশিনে মাটি এনে এখানে জায়গা ভরাট করে আশ্রয়ণ প্রকল্প করা হবে।

ভানী এলাকাবাসীর পক্ষে আনোয়ার হোসেন, সাবেক মেম্বার মো. মমিন আলী, আল আমিন বলেন, শতবর্ষের পুরোনো এ খালটি ভানী গ্রামসহ আসাদনগর, খিরাইকান্দি, বখরিকান্দি, তেবাড়ীয়াসহ ৭/৮টি গ্রামের প্রায় এক হাজার একর জমির পানি বর্ষাকালে প্রবাহিত হয়ে গোমতী নদীতে নামে। ফলে এই এলাকায় তিন ফসলি ওই জমিগুলো জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত থাকে। এ খালটি ভানী এলাকায় ভরাটের ফলে ওই এক হাজার একর ফসলি জমি এবং হাজার হাজার বাড়ি ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

এদিকে, রাজামেহার ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামে অবস্থিত এলাকার একমাত্র খেলার মাঠটিকে শতাধিক বছরের পুরোনো খেলার মাঠ উল্লেখ করে ওই এলাকার আবদুর রহিম, জামাল সরকার, জাভেদসহ এলাকাবাসী বলেন, এটি সৈয়দপুর খেলার মাঠ হিসেবে পরিচিত হলেও আশপাশের বতরা, কটকশর, আন্ধিপাড়, ওখারী, চুলাশ, মরিচা, সাইতলাসহ অন্তত ১০টি গ্রামের শিশু-কিশোর তরুণরা এখানে খেলাধুলা করে। সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও খেলার মাঠ নেই। এ মাঠটি তারাও খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করে। ওই স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়াসহ সকল খেলাই এখানে হয়। এ মাঠটি ছাড়াও পাশের ওখারী ও চুলাশ গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় আরো ভালো সরকারি খাস জমি রয়েছে। বিশাল এলাকার শিশু-কিশোরদের ক্রীড়ামুখী করতে এলাকার একমাত্র খেলার মাঠটি রক্ষা করতে তারা সরকারের প্রতি জোর দবি জানান।

এ দুটি বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের কুমিল্লা জেলা সভাপতি মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, বিষয়গুলোর প্রতি আমরা অবগত আছি। যে মাঠটির কথা বলা হয়েছে, এটি বছরের একটি সময় পানিতে নিমজ্জিত থাকে, বাকি সময় শিশু-কিশোর তরুণরা এখানে খেলাধুলা করে। আর খালটি প্রাকৃতিকভাবেই কিছুটা ভরাট হয়ে গেছে। তবে খাল ভরাট করে গৃহনির্মাণ করা হবে না। আর খেলার মাঠ নিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রকল্প কর্মকর্তা সরেজমিনে গিয়ে দেখে স্থানীয়দের কথা বলে ব্যবস্থা নেবেন। যদি মাঠের একটা অংশে আশ্রায়ণ প্রকল্প ও আরেকটা অংশ খেলাধুলার জন্য ছেড়ে দিয়ে স্থায়ী মাঠ তৈরি করা যায় তহলে তারা এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে তা করবেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads