• শনিবার, ৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪২৯
সরিষাবাড়ীতে প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধের সংকট, কমিউনিটি ক্লিনিকে ভিড়

উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের বারইপটল কমিউনিটি ক্লিনিকে রোগিদের উপচেপড়া ভিড়

সারা দেশ

সরিষাবাড়ীতে প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধের সংকট, কমিউনিটি ক্লিনিকে ভিড়

  • সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৩ জুলাই ২০২১

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে করোনা সংক্রমনের বৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েই চলছে ঘরে ঘরে জ্বর, ঠান্ডা, কাশিসহ নানা রকম রোগের সংখ্যা। ফার্মেসিগুলোতে দেখা দিয়েছে প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধের সংকট। শেষ ভরসায় কসিউনিটি ক্লিনিকে রোগীদের উপচেপড়া ভিড় তবুও মিলছেনা প্যারসিটামল। এতে করে সাধারণ রোগীদের ভোগান্তি চরমে।

সরেজমিনে গিয়ে, হাসপাতাল গেট, আরামনগর বাজার, শিমলা বাজার, তারাকান্দি গেট পাড় এলাকা, আওনা পুরাতন ঘাট, পিংনা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বিভিন্ন ফার্মেসি মালিক ও পল্লী চিকিৎসকদের সাথে কথা বলে জানা যায় গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাসা বাড়ীতে দেখা দিচ্ছে জ্বর, ঠান্ডা, কাশির। করোনার ভয়ে হাসপাতালে না গিয়ে গ্রামের পল্লী চিকিৎসক ও ফার্মেসিগুলিই তাদের চিকিৎসার মাধ্যম। সেই সকল রোগির চাহিদার ফলেই বাড়ছে প্রয়োজনীয় ঔষধের চাহিদা। করোনা আক্রান্ত রোগীর পাশাপাশি সাধারণ রোগীর প্রয়োজন প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ।

আওনা ইউনিয়নের শামিম মিয়া জানান, আমার পরিবারের ১১ জন সদস্যের মধ্যে ৯ জনই ঠান্ডা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলো ঘরে থেকে নিয়মিত ঔষধ সেবনে এখন সুস্থ্য। একই এলাকার দুলাল মিয়া বলেন আমার পরিবারের চার জন সদস্যের তিনজনই ঠান্ডা,জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিল এখন সুস্থ্য। শুধু আওনা ইউনিয়নেই নয় উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের প্রতিটি বাড়ী বাড়ী এ জাতীয় রোগীর সংখ্যা হঠাৎ করেই বৃদ্ধি পেয়েছে।

তারাকান্দি যমুনা সার কারখানা এলাকার পল্লী চিকিৎসক বাবলু মিয়া বলেন, হঠাৎ করেই বেশ কিছুদিন যাবৎ রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে যার শত করা ৮০ ভাগ ঠান্ডা,জ্বরে আক্রান্ত। যার ফলে তাদের চিকিৎসা প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ দিয়েই করতে হয় বিধায় এতো রোগির চাপ বাড়ায় প্যারাসিটামলের  কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে।

গত সোমবার পিংনা বাজার এলাকায় রাহাত মেডিক্যাল হল, মা মেডিক্যাল হল, সরকার মেডিক্যাল হলসহ বিভিন্ন ফার্মেসিতে গিয়ে এ জাতীয় ঔষধের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা ঔষধ সর্বরাহ নেই বলে জানান। অপরদিকে ফার্মেসিতে এ জাতীয় ঔষধ না পাওয়ায় ভিড় পড়েছে কমিউনিটি ক্লিনিকের উপর।

হাসান কমিউনিটি ক্লিনিক (তারাকান্দি কমিউনিটি ক্লিনিক) এর কমিউনিটি হেল্থ কেয়ার প্রোবাইডার( সিএইচসিপি) মোছাঃ বিউটি আক্তার বলেন, সরকারী ভাবে আমরা প্রতিমাসের জন্য ১ হাজার ৫০০টি করে প্যারাসিটামল  পেয়ে থাকি যা দিয়ে প্রায় মাস চলে যেত। কিন্তু এ মাসে আমার এক সপ্তাহের মধ্যে সকল প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ শেষ হয়ে গেছে। না দিয়েও উপায় নেই শতকরা ৮০ ভাগ রোগিই ঠান্ড,জ্বরে আক্রান্ত। একই চিত্র পিংনা উপস্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বাসুরিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকে। বাসুরিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের (সিএইচসিপি) আবুল কালাম বলেন, বর্তমানে প্রতিদিন ৪০-৫০জন করে রোগি দেখতে হচ্ছে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত রোগী দেখেছি ৩২জন যার প্রায় সকল গুলিই ঠান্ডা ও জ্বর জাতীয় রোগি।

একমাসের জন্য যা বরাদ্ধ সে অনুপাতে প্রতিদিন ৫০টি প্যারাসিটামল বিতরনের সুযোগ থাকলেও রোগিদের চাপে বাধ্য হয়েই ঔষধ দিতে হচ্ছে যার ফলে একমাসের ঔষধ আমার ১১ দিনেই শেষ।

অপরদিকে কিছু কিছু ফার্মেসিতে বেশী দামে প্যারাসিটামল বিক্রির অভিযোগও রয়েছে। ফার্মেসিগুলোতে প্যারাসিটামল সংকট নাকি ব্যাবসায়ীরা কৃত্তিম সংকট তৈরি করে অতিরিক্ত মোনাফা আদায় করছে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষ্যকে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গহনের দাবী সচেতন মহলের।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা গাজী রফিকুল হক বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে আমরা ওষুধ কম্পানির প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করেছি। এছাড়া , যে ঔষধ নেই সেটার পরিবর্তে ঐ জাতীয় অন্য ঔষধ লিখে দিতে ডাক্তারদের কে বলে দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads