• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
বিষাক্ত বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে ধলেশ্বরী নদী

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

বিষাক্ত বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে ধলেশ্বরী নদী

  • নুরুজ্জামান, মানিকগঞ্জ
  • প্রকাশিত ২৮ আগস্ট ২০২১

মানিকগঞ্জের বিসিক শিল্পনগরীর বিভিন্ন কলকারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে নদী ও কৃষি জমি। এতে পানি ও বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়ানোর পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ।

স্থানীয়রা জানায়, মানিকগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরীর আকিজ টেক্সটাইল, করবেল ইন্ডাস্ট্রিজ, এগ্রিকালচার লিমিটেডের কেমিক্যাল মিশ্রিত কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলার কারণে দূষিত ও কালো হয়ে যাচ্ছে ধলেশ্বরী নদীর পানি। এতে মারা যাচ্ছে মাছসহ বিভিন্ন ধরনের জলজ প্রাণী। বিষাক্ত পানিতে নিজেরা গোসল করতে গিয়ে ও গরু-ছাগলসহ গবাদি পশুকে গোসল করাতে গিয়ে অনেকেই চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুও আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগে। আবাদি জমি ও নদীর পাড়ে অপরিকল্পিতভাবে এসব শিল্প কারখানা গড়ে ওঠায় বিষাক্ত শিল্পবর্জ্যের কারণে হারিয়ে যাচ্ছে নদী আর আবাদি জমি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আকিজ টেক্সটাইল মিল অপরিকল্পিত ড্রেনের মাধ্যমে সরাসরি ধলেশ্বরী নদীতে বর্জ্য ফেলছে। একই সঙ্গে করবেল করবেল ইন্ডাস্ট্রিজ, অ্যাগ্রিকালচার লিমিটেড বিষাক্ত বর্জ্য সারা বছর ধলেশ্বরী নদীতে ফেলার কারণে ওই এলাকার সাধারণ মানুষ ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যযের মুখে পড়েছে।

জাগীর মেঘশিমুল এলাকার শফিউদ্দিন ভান্ডারী বলেন, কৃষিকাজই এসব এলাকার মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যের কারণে দূষিত হচ্ছে ধলেশ্বরী নদী ও আশপাশের পরিবেশ। নদীতে গোছল করা যায়না, নদীর মাছও খাওয়া যায় না। ধলেশ্বরী নদীর বিষাক্ত পানির কারণে আশপাশের জমির ফসলও নষ্ট হয়ে যায়।

কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বারাহির চর এলাকার মশিউর রহমান রতন বলেন, জাগীর এলাকার বিভিন্ন কল কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যমিশ্রিত পানি ধলেশ্বরী নদীতে প্রবাহিত হয়ে সিংগাইরের ধল্লা পর্যন্ত যায়। ফলে আমরা নদীতে গোছল বা অন্যান্য কাজে নদীর পানি ব্যবহার করতে পারি না।

জাগীর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রউফ বলেন, বিষাক্ত বর্জ্যের কারণে ধলেশ্বরী নদীসহ আশপাশের এলাকা হুমকিতে পড়েছে। বিষাক্ত বর্জ্যের কারণে পরিবেশ দূষণের ফলে এই এলাকার মানুষ অনেক ভোগান্তিতে আছে। আমরা এর আগে অনেক প্রতিবাদ করেছি, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

আকিজ টেক্সটাইল মিলের এডমিন বি এজিএম শামীম বলেন, আমরা কোটি কোটি টাকা খরচ করে পানি পরিশোধন করেই ড্রেনের মাধ্যমে ফেলছি। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে প্রতি মাসে দুবার আমাদের কাছ থেকে স্যাম্পল নিয়ে চেক করে। নদীতে যে কালো পানি যায় সেটা কাপড়ের রং। এর জন্য নদীর পানি বা পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না।

এ প্রসঙ্গে মানিকগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নূর আলম বলেন, এসব কলকারখানার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, ইতোমধ্যে আকিজ টেক্সটাইলের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ এসেছে। সরেজমিনে তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads