• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯
প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ’র আজ ১২৮ তম জন্মদিন, ভূঞাপুরে নেই কোনো আয়োজন

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ’র আজ ১২৮ তম জন্মদিন, ভূঞাপুরে নেই কোনো আয়োজন

  • ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০১ সেপ্টেম্বর ২০২১

উপমহাদেশের প্রথম মুসলিম প্রিন্সিপাল প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ’র আজ ১২৮তম জন্মদিন। এ উপলক্ষে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে তার জন্মভূমিতে নেই কোন তেমন আয়োজন। তিনি ১৮৯৪ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর, টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর উপজেলার বিরামদী গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন।

বাঙালি মুসলিম নবজাগরণের ক্রান্তিলগ্নে ইব্রাহীম খাঁ’র আবির্ভাব। দীর্ঘকাল ইংরেজদের পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ থেকে ও সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সমাজের জুলুম-নির্যাতন ও বঞ্চনার শিকার হয়ে বাঙালি মুসলমানগণ অধ:পতনের চরম পর্যায়ে উপনীত হয়েছিল। সে সময় ঊনবিংশ শতকের শেষার্ধে এসে মুসলিম জাতির মধ্যে নবজাগরণের প্রেরণা সৃষ্টি করেছিলেন তিনিই। শিক্ষায় তাঁর অবদান হিসেবে প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ বাঙালি মুসলিম সমাজে শিক্ষার আলো জ্বালাতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে “ভূঞাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ইব্রাহীম খাঁ সরকারি কলেজ, করটিয়া জুনিয়র গার্লস মাদ্রাসা ইত্যাদি”। তিনি করটিয়া সরকারি সাদ’ত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রতিষ্ঠিত প্রিন্সিপাল ছিলেন।

ঢাকার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বাংলা একাডেমি’র অন্যতম উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা এবং সরকারি বাঙলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি ছিলেন তিনি। তিনি ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের জাতিসংঘের প্রতিনিধি প্রাদেশিক শিক্ষক সমিতি’র সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য।

তিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। তিনি ছিলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক। ইব্রাহীম খাঁ স্মৃতিকথা, শিক্ষা-সাহিত্য-ধর্ম-বিষয়ক প্রবন্ধ, নাটক, ভ্রমণ কাহিনী, রস-রচনা, গল্প, উপন্যাস, ইতিহাস ও জীবনচরিত, শিশু সাহিত্য, পাঠ্য বই ও অনুবাদ মিলিয়ে শতাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। ইব্রাহীম খাঁ’র রচিত গ্রন্থের সংখ্যা মোট ১১৮টি। এর মধ্যে ১৮টি অনুবাদ গ্রন্থ, ইংরেজিতে লেখা গ্রন্থের সংখ্যা ১২ এবং বাংলা ভাষায় রচিত মৌলিক গ্রন্থের সংখ্যা মোট ৮৮টি।

তার এক লেখায় তিনি বলেছিলেন “আমার কর্মজীবনের এক বিশাল এক অংশ আমি সাহিত্য সেবায় যাপন করেছি। সাহিত্য সাধনা আমার বিলাস ছিল না, এ ছিল আমার জীবনের অন্যতম তপস্যা। এ তপস্যার মারফত আমি তন্দ্রাহত জাতিকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। আমার সে আহ্বানে সমাজের সকল মানুষের নিন্দ্রা ভঙ্গ হয়নি সত্য, তবে অনেকে অর্ধজাগ্রত হয়েছে, আর এটাই সার্থকতা। তাঁর কর্মে তিনি নানা পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। এর মধ্যে “বাংলা একাডেমি” পুরস্কার ও “একুশে পদক”।

১৯৭৭ সালে তিনি ভূঞাপুর “সাহিত্য সংসদ” গঠন করেন, এবং তাতে একুশে পদকের সব অর্থ ও কিছু জমি সেখানে দান করেছিলেন। মুসলিম নবজাগরণ ও শিক্ষা- সাহিত্য ও সমাজ কল্যাণে কৃতিতপূর্ণ অবদান রেখে এই মহান ব্যক্তি ১৯৭৮ সালে ২৯শে মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।

এ বিষয়ে ইব্রাহীম খাঁ সরকারি কলেজের অধ্যাপক মো. কামরুজ্জামান সরকার জানান, সকালে তাঁর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়। তবে কোন আলোচনা সভা হয়নি। এনিয়ে উপজেলায় সচেতন মহল ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads