• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জৈষ্ঠ ১৪২৯
৭০ বছর পর মা-ছেলের সাক্ষাৎ

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

৭০ বছর পর মা-ছেলের সাক্ষাৎ

  • নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

আজ রোববার সকালে নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড্ডা গ্রামে আসেন আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে কুদ্দুস মুন্সি। বাবা কালু মুন্সি মারা যাওয়া পর ১০ বছর বয়সে নবীনগরের এক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে রাজশাহী বেড়াতে যান কুদ্দুস মুন্সি। সেখানে বাজার করতে গিয়ে হারিয়ে যান তিনি, তারপর অনেক খোঁজাখুঁজি করে পাওয়া যায়নি তাকে। এখন তিনি এসেছেন যখন নিজের বয়স ৮০।

হারিয়ে যাওয়ার ৭০ বছর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণের ১০ বছর বয়সে হারিয়ে যাওয়া একমাত্র ছেলে কুদ্দুছ মিয়াকে ফিরে পেলেন মা মঙ্গলের নেছা। গত শনিবার বাঞ্ছারামপুরের আশ্রাফবাদ গ্রামের বোন ঝড়না বেগমের বাড়িতে মা-ছেলের এ দেখা হয়। ছেলেকে ফিরে পেয়ে ১১০ বছর বয়সি মা আবেগে আপ্লুত হয়ে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ছেলেও মাকে ফিরে পেয়ে মাকে জড়িয়ে কাঁদতে থাকেন। এই দৃশ্য দেখে উপস্থিত শতাধিক নারী পুরুষের চোখের পানি চলে আসে। আগে বিধবা মা দুই মেয়েকে নিয়ে ছেলেকে ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন বরাবর। তার সে স্বপ্ন আজ পূরণ হলো। হারিয়ে যাওয়া ১০ বছরের শিশু আজ দীর্ঘ ৭০ বছর পর ৮০ বছর বয়সি একমাত্র ছেলে কুদ্দুছ মিয়াকে ফিরে পেলেন।

সাত বছর বয়সে কুদ্দুছ মুন্সি বাবা কালু মুন্সি মারা যান। এরপর মা মঙ্গলের নেছা ১০ বছর বয়সি ছেলেকে লেখাপড়া করাতে পাশের বাড়ি জামাই নবীনগর উপজেলার দীর্ঘশাইল গ্রামের পুলিশ সদস্য আব্দুল আউয়ালের সঙ্গে রাজশাহী জেলার আত্রাই উপজেলায় পাঠান। সেখানে গিয়ে সে হারিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে আর খুঁজে পাননি আউয়াল মিয়া। একই উপজেলার নিঃসন্তান সিংশাইর গ্রামের সাদেক মিয়ার স্ত্রী তাকে লালনপালন করেন। ৩০ বছরে বয়সে বাগমারা উপজেলার সবেদ মিয়ার মেয়ে শুরুজ্জাহানকে বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতেই বসবাস করতে থাকেন। তার তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে রাজ্জাক মুন্সি ইরাকে ও দ্বিতীয় ছেলে জান্নান মুন্সি সৌদি আরব থাকেন। ছোট ছেলে হাফেজ সোহেল মুন্সি বাড়িতেই থাকেন। পাঁচ মেয়ের সবার বিয়ে হয়ে গেছে।

আত্রাই উপজেলার সিংশাইর গ্রামে এমকে আইয়ূব নামে এক ব্যক্তি তার ফেসবুক আইডিতে কুদ্দুছ মিয়ার হারিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে একটি ভিডিও আপলোড করেন গত ১২ এপ্রিল। দেশে-বিদেশে ভাইরাল হয় ভিডিওটি। এই ভিডিওর সূত্র ধরে কুদ্দুছ মিয়ার নিজ গ্রাম নবীনগর উপজেলার কয়েকজন যোগাযোগ করেন আইয়ূবের সঙ্গে গত ৫ সেপ্টেম্বর। তারা সেখানে যান এবং মায়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন ভিডিওকলে। ছেলের হাতে কাটা চিহ্ন দেখে মা শনাক্ত করেন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads