• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯

সারা দেশ

বাবার জন্য ৪ দিন অপেক্ষার পর অবশেষে তরুণীকে দাফন

  • মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৬ ডিসেম্বর ২০২১

লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে ৪ দিন বাবার জন্য রাখার পর রহস্যজনকভাবে নিহত সেই তরুণীকে (২০) দাফন করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার কাইচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জানাজা শেষে কাইচাইল সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

এর আগে বুধবার গভীর রাত ২টার দিকে মালয়েশিয়া হতে নিজ বাড়িতে ফিরে নিহতের বাবা সাইদ সেখ। বাড়িতে ফেরার পর হতেই বারবার মূর্ছা যাচ্ছে সে। জানাজার আগেও কয়েকবার মূর্ছা যায় সে বলে জানান নিহত সানজিদার খালা সুমাইয়া।

এর আগে গত রবিবার রাতে স্বামীর সাথে এক বিছানায় ঘুমালেও সকালে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলছিল সানজিদার লাশ। মেয়ের এমন মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তার বাবা। যে মেয়ে স্বামীর সাথে ঘুমিয়ে ছিল এক বিছানায় সে লাশ হয়ে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলল কিভাবে তা নিয়ে এখনো চলছে জল্পনা কল্পনা।

নিহতের প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন জানান, ৪ দিন যাবৎ কাইচাইল চৌকিদার পারা জামে মসজিদের সামনে ফ্রিজিং গাড়ি এনে রেখে দেওয়া হয়েছিলো সানজিদার লাশ। সানজিদার বাবা মালয়েশিয়া হতে ফেরার অপেক্ষায় এ লাশ রেখে দেওয়া হয়েছিল। পরে সানজিদার বাবা গতকাল বুধবার গভীর রাতে বাড়ি ফিরলে তাকে আজ সকালে দাফন করা হয়েছে।

নিহত সানজিদার পরিবার সূত্রে জানা যায়, মাত্র ৭ মাস আগে একই গ্রামের শাহজাহান বেপারীর ছেলে সাহারিয়ার রাতুলের সাথে প্রেম করে বিয়ে হয় সানজিদার।গত রবিবার রাতে স্বামী রাতুলের সাথে একই বিছানায় ঘুমিয়েছিলেন সানজিদা । পরে সোমবার সকালে সানজিদাকে ঘরের আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্বামী সাহারিয়া রাতুল ও তার মা ঝুলন্ত অবস্থা থেকে লাশ নামিয়ে খাটের উপর রেখে এলাকাবাসীকে খবর দেয় । পরে এলাকাবাসী পুলিশ খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

পরে নিহত সানজিদা লাশ সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে পুলিশ তার স্বজনদের বুঝিয়ে দিলে রাত ৬টার দিকে ঢাকা থেকে ফ্রিজিং গাড়ি আনা হয়। পরে সানজিদার বাড়ির প্রায় ৫০০ গজ দূরে কাইচাইল চৌকিদার পাড়া জামে মসজিদের সামনে রাস্তায় গাড়ি রেখে তার ভিতরে নিহত সানজিদার লাশ ঢুকিয়ে রেখে সেখানে পাহারা দেয় তার পরিবার।

নিহতের মা সাহিদা বেগম বলেন, আমার মেয়ে ওই ছেলেকে পছন্দ করায় আমি পরিবারের সবাইকে বুঝিয়ে ওই ছেলের সাথে আমার মেয়েকে গত কোরবানির ঈদের এক সপ্তাহ আগে বিয়ে দেই। আমার মেয়ে কিভাবে মারা গেছে আমি কিছু বলতে পারিনা। 

এ ব্যাপারে টঙ্গিবাড়ী থানা ওসি মোল্লা সোয়েব আলী বলেন, আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে স্বজনদের বুঝিয়ে দিয়েছি। আমরা শুনতে পেয়েছি লাশ ফ্রিজিং গাড়ি এনে ওই নিহত তরুণীকে দাফন না করে তার বাবার মালয়েশিয়া হতে ফেরার অপেক্ষায় রেখে দেওয়া হয়েছে। ‌এখনও দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে কিনা এ ব্যাপারে আমার জানা নেই।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads