• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
নদীগর্ভে ধসে পড়ছে মসজিদ

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

ঠিকাদারের অবহেলা ও পাউবোর তদারকির অভাব

নদীগর্ভে ধসে পড়ছে মসজিদ

  • ফুলপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১০ জানুয়ারি ২০২২

ফুলপুরে ঠিকাদারের অবহেলায় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের যথাযথ তদারকি না থাকায় বহু বছরের পুরাতন ঐতিহ্যবাহী দনারভিটা জামে মসজিদটি নদীগর্ভে ধসে পড়ছে। এর প্রতিবাদে এলাকাবাসী ঠিকাদারের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ পাঠিয়েছে। মসজিদটি শেরপুরের নালিতাবাড়ি থেকে বয়ে আসা ভোগাই নদীর পূর্বপাড়ে ফুলপুর উপজেলার সিংহেশ্বর ইউনিয়নের দনারভিটা গ্রামে মরহুম মুফিজুদ্দিন মেম্বারের বাড়ির পাশে অবস্থিত। এতে জুমার দিন দেড়শ থেকে দুইশ মুসল্লি নামাজ আদায় করে থাকেন বলে জানিয়েছেন মসজিদের ইমাম মাওলানা আবু সাঈদ ও মুয়াজ্জিন মোফাজ্জল হোসেন। মসজিদটি ধসে পড়ায় দুশ্চিন্তা ও দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় মুসল্লিরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, মসজিদের পশ্চিম পাশঘেঁষা ভোগাই নদী। নদীতে মসজিদের মেহরাবের সম্পূর্ণ অংশ ও দেয়ালের কিছু অংশ ভেঙে পড়েছে। আর দক্ষিণ ও উত্তর পাশের দেয়ালে বড় ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় হাশেম আলী (৬৩) বলেন, এটি বহু পুরাতন আমাদের বাপের জন্মেরও বহু আগের একটি মসজিদ। মসজিদটি নদীর ভাঙনের মুখে পড়লে গত কয়েক মাস আগে বর্ষাকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শীতেষ চন্দ্র সরকার, উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল করিম রাসেল, ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া পারভীন লাকিসহ একটি টিম নৌকাযোগে পরিদর্শনে এসেছিলেন। তখন মসজিদের দেয়াল বা মেহরাবে কোনো ফাটল ছিল না এবং ধসেও পড়েনি। তবে মসজিদটি নদী ভাঙনের মুখে ছিল।

রূপচান মিয়া নামে স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী বলেন, মসজিদটি ভাঙনের মুখে দেখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে সংস্কারের সুপারিশ করলে পানি উন্নয়ন বোর্ড এর জন্যে ৩৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। পরে তসলিম নামে একজন ঠিকাদার এই কাজটি পান। তিনি অদক্ষ লোক দিয়ে কাজ করাতে গিয়ে মসজিদ থেকে অল্প দূরে নদীতে খুঁটি গাড়তে বোরিং করায় এবং বোরিংয়ে তাৎক্ষণিক খুঁটি না গেড়ে দেরি করায় মসজিদের গোড়ার মাটি সরে যায় এবং মসজিদের পাশের পাড় ভেঙে মেহরাব নদীতে ধসে পড়ে যায় ও দেয়ালে বড় ধরনের ফাটল ধরে। পরে ঠিকাদার কিছু জিওব্যাগ দিয়ে ভাঙনরোধের চেষ্টা করলেও রোধ হয়নি। মসজিদ নদীগর্ভে ধসে পড়ছে দেখে ঠিকাদার কাজ সম্পন্ন না করেই ৭শ বস্তা জিওব্যাগ খালি রেখেই দ্রুত কেটে পড়েন। পানি উন্নয়ন বোর্ড শুধু টাকাই দিলো। কেউ এসে উঁকি দিয়ে দেখলো না, কাজটি হলো কি না। মসজিদটি এখন ধ্বংসের পথে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য আমরা দুদকে একটি অভিযোগ পাঠিয়েছি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঠিকাদার তসলিম বলেন, ওই মসজিদে আমার যে কাজ ছিল তা শেষ হয়ে গেছে। এখন ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। এ বিষয়ে ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আখলাক উল জামিলের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখানে রিসেন্টলি জয়েন করেছি। এটা মনে হয় অনেক আগের কাজ। আপনি উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরাফাত আহমেদের সাথে কথা বলুন। পরে আরাফাত আহমেদের নিকট জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, মসজিদ যে ভেঙে পড়ছে এর কোনো ছবি কি আপনার কাছে আছে? থাকলে ছবি ও আপনি কোন পত্রিকায় কাজ করেন, এর আইডি কার্ড নিয়ে একদিন অফিসে আসেন। পরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া বরাদ্দের কত অংশ কাজ হয়েছে এ বিষয়ে কোনো তদারকি হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এভাবে বলা যাবে না। আপনি অফিসে আসেন। সাক্ষাতে কথা বলব। এরপর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শীতেষ চন্দ্র সরকারের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওখানে কতটুকু কাজ হয়েছে বিষয়টি আমার জানা নেই। পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads