নরসিংদীর সদর ও রায়পুরা চরাঞ্জলের সহিংসতা ও টেটাঁ যুদ্ধের মূলহোতা দুই ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া আন্তজেলা ডাকাতদলের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।গত দুই দিনে জেলার বিভিন্ন স্থানে পৃথক পৃথক অভিযান চালিয়ে মোট ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ সময় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে অস্ত্র ও ডাকাতের কাজে ব্যবহৃত গাড়ী ও ২টি বিদেশি পিস্তলসহ বিপুল পরিমান দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে নরসিংদী পুলিশ সুপারের কার্য্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান এসব তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী এলাকার আলোকবালী ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু (৫০), আবদুল মতিন মেম্বার (৫৮) ও তাদের পাঁচ সহযোগী, রায়পুরা থানার মির্জারচর এলাকার মির্জারচর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাফর ইকবাল মানিক ও স্থানীয় আরও তিন টেঁটাযুদ্ধের হোতা।
অন্যদিকে ডাকাতদলের সদস্যরা হলেন- মাধবদী থানার আমদিয়া এলাকার জাহিদুল হক টিপু, মো. শাহ আলম, সোহাগ মিয়া, পলাশের ঘোড়াশাল এলাকার নূরে আলম, রুবেল, আল আমিন ও আবু তাহের।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সোমবার সন্ধ্যায় মাধবদী থানার আমদিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে কুখ্যাত ডাকাত শাহ আলমসহ তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে মাধবদী থানা পুলিশ। এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি শনিবার দিনগত রাত দেড়টার দিকে ঘোড়াশাল মিয়াপাড়া এলাকা থেকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে বিদেশি পিস্তল, কাভার্ডভ্যান ও সিএনজিসহ মোট চার ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে গত ৩০ জানুয়ারি রবিবার বিকেলে সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু (৫০), স্থানীয় টেঁটাযুদ্ধের হোতা হিসেবে চিহ্নিত আবদুল মতিন মেম্বার (৫৮), আসাদুল্লা মিয়া ও তাদের ৪ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের সবার বিরুদ্ধে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে গ্রাম বাসিদের একাধিকভাগে বিভক্ত করে টেঁটাযুদ্ধের উস্কানির অভিযোগ রয়েছে।
এ ছাড়া সোমবার ৩১ জানুয়ারি সোমবার রাত ৮টার দিকে রায়পুরা উপজেলার মির্জারচর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাফর ইকবাল মানিককে একটি দুই নলা বন্দুক ও ৪টি কার্তুজসহ গ্রেপ্তার করে রায়পুরা থানা পুলিশ। একই দিনে মির্জারচর ও বাঁশগাড়ী এলাকার টেঁটাযুদ্ধের সহকারী হিসেবে চিহ্নিত আরও ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধেও আধিপত্য বিস্তার ও টেঁটাযুদ্ধের মাধ্যমে সহিংসতা সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে।
পৃথক চারটি অভিযানে গ্রেপ্তার আসামিদের কাছ থেকে ২টি বিদেশি পিস্তল, ১টি পাইপগান, ২টি চাইনিজ কুড়াল, ৬টি কার্তুজ, ৫রাউন্ড গুলি, ১টি রামদা, ২টি ছোরা, ১টি কাভার্ডভ্যান ও ১টি সিএনজি জব্দ করা হয় ।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৭ জন ডাকাতদলের সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি ও অস্ত্র মামলা রয়েছে। এছাড়া দুই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নিজেদের স্বার্থে উস্কানি দিয়ে চরাঞ্চলে সহিংসতার অভিযোগ রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।