• সোমবার, ৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪২৯
সাজানো আত্মহত্যার রহস্য উন্মোচন, প্রেমঘটিত কারণেই খুন

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

সাজানো আত্মহত্যার রহস্য উন্মোচন, প্রেমঘটিত কারণেই খুন

  • ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২

রাজধানীর ধামরাইয়ে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে সাজানো চাঞ্চল্যকর ও ক্লু-লেস শাহাদাত হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‍্যাব)। বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৪ এই তথ্য জানায়।

নিহত শাহাদাত ধামরাইয়ের যাদবপুর ইউনিয়নের আমরাইল গ্রামের কোহিনুর ইসলামের ছেলে। সে কালিয়াকৈর উপজেলার বারইপাড়ায় একটি কারখানার কর্মচারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. আক্কাছ আলীর ছেলে মোঃ জাহিদুল ইসলাম জাহিদ (২২), মো. শুকুর আলীর ছেলে আবু তাহের (২৪) ও মোঃ মিজানুর রহমানের ছেলে সবুজ হোসেন (২৮)। তারা সবাই ধামরাইয়ের যাদবপুর ইউনিয়নের আমরাইল গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা ও তাদের মাঝে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল।

র‍্যাব জানায়, গত বছর (২০২১) ১ আগস্ট ধামরাইয়ের আমরাইল থেকে কালিয়াকৈরে নিজের কর্মস্থলের যাওয়ার জন্যে বের হয় ভুক্তভোগী। এরপর ৪ আগস্ট থেকে সে বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। ৬ আগস্ট থেকে তার ফোন বন্ধ থাকায় ৮ আগস্ট কালিয়াকৈর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে তার পরিবার। এরপর ১২ আগস্ট ধামরাইয়ের আমরাইল গ্রামের একটি কাঠ বাগান থেকে নিখোঁজ শাহাদাত এর অর্ধগলিত ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে ১২ আগস্টেই ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে ধামরাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ২৩ সেপ্টেম্বর ধামরাই থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা (নং- ৩২) দায়ের করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত বছরের ১৪ আগস্ট জাহিদের প্রেমিকার সঙ্গে শাহাদাতের বিয়ের দিন ধার্য ছিলো। সেটা মানতে না পেরে মূল অভিযুক্ত অন্য দুইজনসহ ভুক্তভোগীকে হত্যার পরিকল্পনা করে। আগে থেকেই বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকায় তাদের নিয়মিত দেখা সাক্ষাৎ হতো ও তারা জুয়ার আসরেও বসতো। তারই ধারাবাহিকতায় ওই বছরের ৩ আগস্ট ভুক্তভোগীকে চন্দ্রায় কর্মস্থল থেকে গাজীপুরের কাশিমপুর উপজেলার মাটির মসজিদ এলাকায় ডেকে নেয়। এরপর তাকে নিয়ে ধামরাইয়ের আমরাইল এলাকায় এসে দুইদিন অবস্থান করায়। পরে ৬ আগস্ট আশুলিয়ার একটি ফাঁকা নির্জন এলাকায় নিয়ে এসে হাত পা বেঁধে ফেলে প্রথমে ভুক্তভোগীকে জাহিদ চর-থাপ্পর মারে ও গোপনাঙ্গে ৪-৫টি লাথি মারে। এসময় ২য় অভিযুক্ত ভুক্তভোগীর মাথা চেপে ধরে বসে ছিলো এবং অন্যান্যরা হাত পা ধরে ছিল। পরবর্তীতে তাদের সঙ্গে থাকা লাঠি দিয়ে ভুক্তভোগীর মাথায় আঘাত করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। 

এরপর ঘটনাটি আত্মহত্যা হিসেবে দেখাতে নিহতের মরদেহ গ্রেপ্তার সবুজ ভ্যানযোগে ধামরাইয়ের আমরাইল পুকুরিয়া এলাকায় মনুমিয়ার কাঠবাগানের কাছে নিয়ে গিয়ে গাছের একটি ডালে কাঁচা পাট দিয়ে ফাঁস বানিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। ঘটনার সময় প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে আশপাশে লোকজন না থাকায় ঘটনা ঘটিয়ে পরে সেখান থেকে তারা আবারও আগের ভাড়া বাসা চক্রবর্তী মাটির মসজিদ এলাকায় চলে যায়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগীর বন্ধু জাহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে ওই সময় সে বিষয়টি স্বীকার না করলে রিমান্ড শেষে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। পরে এতে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে ছায়া তদন্ত করে আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে র‍্যাব। 

র‍্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads