• বুধবার, ৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪২৯
আখাউড়ায় সরকারি গুদামে ধান দিতে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

আখাউড়ায় সরকারি গুদামে ধান দিতে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের

  • কাজী মফিকুল ইসলাম, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
  • প্রকাশিত ১৭ জুন ২০২২

চলতি মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় ৭৪৭ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। ইতিমধ্যে বোরো ধান কাটা ও ঘরে তোলার কাজ শেষ হওয়ায় চলছে কৃষকদের ধান বিক্রি। লটারি বিজয়ী কৃষকরা উৎসাহ নিয়ে তাদের উৎপাদিত ধান সরকারি গুদামে দিচ্ছেন। ন্যায্য দাম পাওয়ায় ধান দিতে কৃষকদের আগ্রহ ও বৃদ্ধি পেয়েছে।

আনুষ্ঠানিকভাবে ২৮ মে থেকে ধান কেনার কার্যক্রম শুরু হলেও এ পযর্ন্ত সংগ্রহের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৬১২ টন । যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই বেশী। নির্ধারিত সময়ের আগেই লক্ষমাত্র অর্জিত হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন। আগামী ৩১ আগস্ট পযর্ন্ত ধান সংগ্রহ করা হবে। এদিকে সরকারি গুদামে ধান দিতে পেরে লটারি বিজয়ী কৃষকরা খুবই খুশি।

খোঁজ নিয়ে ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ উপজেলায় ধান সংগ্রহের জন্য ৮৩৪ জন কৃষককের মধ্যে ৭৪৭ কৃষককে ধান বিক্রি করতে লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়। এ উপজেলা থেকে ৭৪৭ টন ধান কেনা হবে। সরকার প্রতি কেজি ২৭ টাকা প্রতি মণ এক হাজার ৮০ টাকা টাকা দরে ধান ক্রয় করছেন। এ পর্যন্ত লটারি বিজয়ী হওয়া পৌর শহরসহ উপজেলার প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে এ পযর্ন্ত ৬১২ টন ধান সংগ্রহ করা হয়।

এদিকে ধানের ন্যায্যমূল্য পেয়ে আনন্দের হাসি ফুটে উঠেছে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে। কিন্তু দীর্ঘ বছর ধরে সিন্ডিকেটের কবলে পড়ায় স্থানীয় কৃষকদের ধান বিক্রিতে নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়েছিল। গত কয়েক বছর ধরে লটারির প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা খুবই খুশি।

উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল হাকিম বলেন, বোরো মৌসুমে ১০ বিঘা জমিতে বর্গা ধান আবাদ করা হয়েছিল। সার সেচ সুবিধা ও সময়মতো বৃষ্টিপাত হওয়ায় তার জমিতে এবার ধানের ভালো ফলন হয়েছে। ধান বিক্রিতে লটারিতে নাম উঠায় তিনি ১ টন ধান গুদামে বিক্রি করেছেন। তিনি আরো বলেন এবারই প্রথম লটারি বিজয়ী হয়ে ন্যায্যমূল্যে ধান বিক্রি করেছেন। ধানের নায্যমূল্য না পেলে তার অনেক লোকসান গুনতে হতো।

কৃষক মো. আলম খাঁ বলেন, অনেক কষ্টে এবার বোরো ধান আবাদ করে ধান কাটা শেষ করেছেন। জমিতে গত কয়েক বছরের তুলনায় ফলন ভালো হয়েছে। ধান বিক্রিতে লটারিতে নাম উঠা ও ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় তিনি খুবই খুশি। কৃষিতে নানা সুবিধা দেওয়ায় সরকারকে তিনি ধন্যবাদ জানান।

আদর্শ কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, সরকারি ভাবে গুদামে ধানের ভালো দাম দিচ্ছে। তাই সেখানে নিয়ে গিয়ে ধান বিক্রি করছেন। তিনি বলেন গুদামে প্রতি একজন কৃষক ১ টনের বেশী দিতে পারলে আরো ভালো হতো। বাকী ধান বিক্রি নিয়ে কোন দুশ্চিন্তা হতো না।

কৃষক আবুল মিয়া বলেন, এবার তিনি ৮ বিঘা জমি বর্গা চাষ করে ধান কাটা শেষ করেছেন। লটারিতে জয়ী না হওয়ায় তিনি স্থানীয় ধান ব্যাপারীদের কাছে ধান বিক্রি করছেন। লটারির বাইরে আমাদেরকে সরকারি গুদামে বিক্রির সুযোগ দিলে ভালো হতো।

উপজেলা এল এস ডি কর্মকর্তা নাজমুন নাহার বলেন, এ উপজেলায় গত ২৮ মে কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ শুরু হয়। এ বছরে আমাদের ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৭৪৭ টন। এ পর্যন্ত ৬১২ টন বা তার চেয়ে একটু বেশি সংগ্রহ হয়েছে। আমাদের ধান সংগ্রহ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের আগেই লক্ষমাত্র পুরণ হবে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (অতিরিক্ত) দায়িত্ব মো. কাউছার সজীব জানান, এ উপজেলা থেকে ৭৪৭ টন ধান কেনা হবে। সরকার প্রতি কেজি ২৭ টাকা এবং প্রতি মণ এক হাজার ৮০ টাকা টাকা দরে ধান ক্রয় করছেন। এ পযর্ন্ত লটারি বিজয়ী হওয়া প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে এ পযর্ন্ত ৬ শত ১২ টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের আগেই ধান সংগ্রহ শেষ হবে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads