গত কয়েদিনের অবিরাম বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে সীমান্তবর্তী হালুয়াঘাটে বেড়েছে নদ-নদী খাল বিলের পানি। এতে বাড়ির পাশে জলাশয়গুলোতে বর্ষার নতুন পানি প্রবেশ করায় মাছ ধরার উৎসবে মেতেছে ছোট থেকে বৃদ্ধরাও। এতে পানি বৃদ্ধির এই মৌসুমে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মাছ ধরার ফাঁদ বিক্রিও।
নদী-খাল-বিলসহ বর্ষার পানি প্রবেশ করে এমন সব এলাকার লোকজন বর্ষার এই সময়টায় ব্যস্ত থাকে মাছ ধরা নিয়ে। এ সময় দেশি মিঠা পানির মাছ ধরার জন্য গ্রামের মানুষ ব্যবহার করে বাঁশের তৈরি বিশেষ এই ফাঁদ। বাঁশের শলা দিয়ে তৈরি মাছ ধরার এ ফাঁদের নাম চাঁই। গ্রামাঞ্চলে মাছ ধরার আদি উপকরণের মধ্যে একটি হচ্ছে বাঁশের চাঁই। বাঁশ, বেত দিয়ে তৈরি করা মাছ ধরার এসব সরঞ্জাম বিক্রেতারা হাটে নিয়ে বিক্রি করছে।
উপজেলা সদর, ধারা,ধুরাইল, বিলডোরা ,নড়াইল আমতৈল ও শাকুয়াই ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, সাপ্তাহিক হাট-বাজারে চাঁই, বুচনা, আইডা, গোলচাঁইসহ মাছ ধরার উপকরণের পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা। পেশাদার মাছ শিকারি থেকে শুরু করে শৌখিন শিকারিরা পর্যন্ত কিনে নিচ্ছে মাছ ধরার এসব সরঞ্জাম।
শুক্রবার বিলডোরা বাজারে গিয়ে কথা হয় চাঁই বিক্রেতা আবদুল এর সাথে তিনি জানান, মাছ ধরার এসব সামগ্রী তৈরির কাজ তিনি প্রায় ১০ বছর ধরে করছেন। বর্ষায় এসব সামগ্রীর কদর বহুগুণে বেড়ে যায়। তাই বাঁশ, সুতা ও প্লাস্টিকের রশি দিয়ে চাঁই, বুরুন, দোয়ারি, ছোট পার, বড় পারসহ বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করা হয়।
তিনি জানান, এসব তৈরিতে প্রকারভেদে বিক্রি হয় ১শ থেকে ৫শ টাকায়। বাঁশের দাম বাড়ায় মাছ ধরার ফাঁদের দামও বেড়েছে। ফলে আগের মতো আর লাভ হয় না।
ধারা বাজারে চাঁই নিয়ে আসা আঃ সাত্তার জানান, গত দুইদিন ধরে চাহিদা বড়েছে দিগুণ। আগে সাপ্তাহে একদিন বসতাম এখন প্রতিদিন বসি।
চাঁই কিনতে আসা ধুরাইল এলাকার কৃষক আহম্মদ আলী বলেন, ছোট ছেলেটা বাইনা ধরছে তাই চারটা চাঁই নিলাম। বাড়ির পালানে ঢলের পানি নামতে শুরু করেছে সেখানে মাছ ধরবে।
বিক্রেতারা জানান, মাছ ধরার এসব সরঞ্জাম আকার ও গুণগত মানভেদে বিক্রি হয় বিভিন্ন দামে। বৈশাখ থেকে আষাঢ় মাসে মাছ শিকারের এসব সামগ্রী বিক্রি হয় সবচে বেশি। নদী-খাল-বিলসহ বর্ষার পানি প্রবেশ করে এমন সব এলাকার লোকজন বর্ষার এই সময়টায় ব্যস্ত থাকে মাছ ধরা নিয়ে। পানি বৃদ্ধির এই মৌসুমে পাল্লা দিয়ে বেড়ে যায় মাছ ধরার ফাঁদ বিক্রিও।