• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪২৯
রাজার বেশে ফিরছেন সাকিব

সংগৃহীত ছবি

ক্রিকেট

রাজার বেশে ফিরছেন সাকিব

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ০৫ নভেম্বর ২০২০

গেল একটা বছর দুঃসহ কেটেছে। তবে এখন আর মাথার ওপর নেই আইসিসির নিষেধাজ্ঞা। মুক্ত সাকিব আল হাসান। ফেরাটাও হচ্ছে দারুণ সুখকর অনুভূতি নিয়ে। নিষিদ্ধ হওয়ার সময় আইসিসি ওয়ানডে অলরাউন্ডারদের র্যাংকিংয়ের শীর্ষে ছিলেন সাকিব। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর প্রথম র্যাংকিং হালনাগাদেই তিনি ফিরে পেলেন জায়গা। আবারো ওয়ানডের এক নম্বর অলরাউন্ডার এখন সাকিব।

পাকিস্তান-জিম্বাবুয়ে ওয়ানডে সিরিজ শেষে গতকাল বুধবার ওয়ানডের নতুন র্য্যাংকিং প্রকাশ করেছে আইসিসি। ৩৭৩ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে সাকিব আছেন শীর্ষে।

জুয়াড়ির কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়েও সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষকে না জানানোয় গত বছরের ২৯ অক্টোবর এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন সাকিব। র্যাংকিংয়ের নিয়ম অনুযায়ী কোনো ক্রিকেটার এক বছর বা তার বেশি সময় নিষিদ্ধ হলে র্যাংকিংয়ের বাইরে রাখা হয় তাকে। তিন সংস্করণেই র্যাংকিং থেকে তাই কাটা পড়ে সাকিবের নাম। ওয়ানডেতে সাকিবের জায়গায় শীর্ষে উঠে যান তখন মোহাম্মদ নবি। এখন সাকিবকে ফের জায়গা দিয়ে এই আফগান অলরাউন্ডার নেমে গেছেন দুইয়ে। রেটিং পয়েন্টে সাকিবেরে চেয়ে অনেকটা পেছনে তিনি (৩০১)।

সাকিবের নিষেধাজ্ঞার এই সময়টায় অবশ্য কেবল তিনটি ওয়ানডে ম্যাচই খেলেছে আফগানিস্তান। সেটিও গত বছরের নভেম্বরে। ওয়ানডে ব্যাটসম্যানদের র্যাংকিংয়ে সাকিব যৌথভাবে ২১তম স্থানে তামিম ইকবালের সঙ্গে। ১৬তম স্থানে থেকে এখন বাংলাদেশের সবার ওপরে মুশফিকুর রহিম। বোলারদের র্যাংকিংয়ে সাকিবের অবস্থান ২৮। এখানে বাংলাদেশের সবার ওপরে মেহেদী হাসান মিরাজ (১৪তম)। এছাড়া মোস্তাফিজুর রহমান আছেন ১৯তম স্থানে। নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তির পর টেস্ট ও টি-টোয়েন্টির পরবর্তী হালনাগাদে এই দুই সংস্করণেও র্যাংকিংয়ে ফিরবেন সাকিব।

উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন বলতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ৫ উইকেট শিকারি শাহিন শাহ আফ্রিদি ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ঢুকেছেন সেরা বিশে। ৮ ধাপ এগিয়ে বোলারদের র্যাংকিংয়ে এখন ১৬তম স্থানে তরুণ এই বাঁহাতি পেসার।

গত বছরের অক্টোবরে ক্রিকেটারদের তিন দিনের ধর্মঘটের ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই বাংলাদেশের ক্রিকেটকে নাড়িয়ে দিয়েছিল সাকিবের নিষেধাজ্ঞার খবর। আইসিসি সেসময় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল, এই চার মাসের মধ্যে তিনবার প্রস্তাব আসে সাকিবের কাছে। একবারো তিনি কোনো কর্তৃপক্ষকে জানাননি।

আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী ধারা অনুযায়ী, কারো কাছ থেকে সন্দেহজনক কোনো বার্তা পেলেই আইসিসি বা সংশ্লিষ্ট বোর্ড কিংবা দায়িত্বশীল কাউকে জানাতে হয়। এটা গোপন করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রতিটি সিরিজ, টুর্নামেন্ট, ফ্র্যাঞ্চাইজি আসরের আগে ক্রিকেটারদের এই নিয়ম মনে করিয়ে দেওয়া হয় বার বার। এসব নিয়ে ক্লাসও করানো হয়। অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী ৬ মাস থেকে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা পর্যন্ত হতে পারে শাস্তি।

নিষেধাজ্ঞার পর প্রথম কয়েক মাস দেশেই ছিলেন সাকিব। পরে করোনাভাইরাসের দুর্যোগ শুরু হলে যুক্তরাষ্ট্রে যান স্ত্রী-সন্তানের কাছে। তার দ্বিতীয় সন্তান পৃথিবীর আলোয় আসে গত এপ্রিলে। তাদের সঙ্গে সাড়ে ৫ মাস কাটিয়ে তিনি দেশে ফেরেন গত ২ সেপ্টেম্বর। শুরু হয় মাঠে ফেরার প্রস্তুতি পর্ব।

বিসিবির কোনো সুযোগ-সুবিধা ব্যবহারের নিয়ম নেই বলে সাকিব অনুশীলনের জন্য বেছে নেন তার বেড়ে ওঠার প্রতিষ্ঠান বিকেএসপিকে। সেখানে তার ঘনিষ্ঠ দুই কোচ নাজমুল আবেদিন ফাহিম ও মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের তত্ত্বাবধানে চলে তার অনুশীলন। পাশাপাশি বিকেএসপির বিভিন্ন অনুশীলন সুবিধা কাজে লাগান তিনি। বিকেএসপির অ্যাথলেটিকস কোচ, বক্সিং কোচরাও সহায়তা করেন তাকে।

বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কা সফরে দ্বিতীয় টেস্ট দিয়ে সাকিবের অফিসিয়াল ক্রিকেটে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু সফরটি স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর গত ১ অক্টোবর তিনি আবার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান। সেখানে অবশ্য অনুশীলন চালিয়ে গেছেন।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আজ রাতে দেশে ফেরার কথা রয়েছে সাকিব আল হাসানের। অন্যবারের চেয়ে এই ফেরাটা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। মুক্ত সাকিব ফিরছেন এবার। চলতি মাসেই বিসিবি আয়োজন করতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। এই আসর দিয়েই ক্রিকেটে ফিরবেন সাকিব আল হাসান। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads