• সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪২৯
এবার টেস্ট চ্যালেঞ্জ টাইগারদের

সংগৃহীত ছবি

ক্রিকেট

এবার টেস্ট চ্যালেঞ্জ টাইগারদের

  • তারিক আল বান্না
  • প্রকাশিত ৩০ জানুয়ারি ২০২১

টেস্ট ক্রিকেটে জয়, এটা হওয়াটাই স্বাভাবিক। একটি দল জিতলে, প্রতিপক্ষ হারবে। কিন্তু কিছু কিছু জয় ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নেয়। অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে গত ১৯ জানুয়ারি সমাপ্ত রুদ্ধশ্বাস চতুর্থ টেস্টে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াকে মাত্র ৩ উইকেটে হারায় করে ভারত। এই জয় দুটি কারণে রেকর্ড বুকে স্থান পাচ্ছে। এক, ৩৮ বছর পর ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়ার পরাজয়। দুই, চতুর্থ ইনিংসে রান চেজ করে জয়ের বিশাল তালিকায় ১৯ নম্বরে চলে এলো ভারত। এই চতুর্থ ইনিংসে রান চেজ করে জয়লাভ করা যে কতটা কঠিন, তা বাংলাদেশও জানে বেশ ভালোভাবে। সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। এখন টেস্ট সিরিজের পালা। ফেব্রয়ারিতে দুটি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ ক্যারিবীয়দের সঙ্গে। চেষ্টা থাকতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আন্ডারস্টিমেট না করার। এখন ওরা যতই দুর্বল হোক, রান চেজের বিশ্বরেকর্ড কিন্তু তাদের দখলে। তাই গুরুত্ব দিতে হবে টেস্ট সিরিজকেও।

ভারতের জয়টা ছিল উল্লেখযোগ্য। কারণ, তাদের জয়টা ছিল স্বাগতিকদের বিপক্ষে। অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে ৩৬৯ রান করে, জবাবে ভারত ৩৩৬ রানে অলআউট হয়। দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ২৯৪ রান করে এবং ভারতকে জয়লাভের জন্য ৩২৮ রানের টার্গেট দেয়। তখন অনেকেই ভেবেছিল, ব্রিসবেনের গ্যাবার উইকেটের যে চরিত্র, আর অজি পেসারদের কারণেই ভারত নির্ঘাত হারবে। কেউ কেউ ধারণা করে, ভারত পরাজয় এড়াতে উইকেটে টিকে থাকতে চেষ্টা করবে, তাতে ম্যাচটি ড্র হবে। দুটি ধারণাই মিথ্যে প্রমাণ করেছে ভারত। চতুর্থ ইনিংসে ভারত সেটা যথার্থই প্রমাণ করে। কয়েকজনের দায়িত্বপূর্ণ ব্যাটিংয়েই জিতেছে ভারত। এই ধরনের চর্চা বাংলাদেশের মধ্যেও থাকতে হবে। 

চতুর্থ ইনিংসে রান চেজ করে টেস্ট ম্যাচে জয়ের তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তারা ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে ৪১৮ রান করেছিল। যেটা গত ১৮ বছরেও কোনো দল ভঙ্গ করতে পারে নি ওই বিশ্বরেকর্ডটি। এছাড়া ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চতুর্থ ইনিংসে ৪১৪ রানের টার্গেট নিয়ে সফল হয় দক্ষিণ আফ্রিকা, জয়লাভ করে ৬ উইকেটে। ১৮৪৮ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৪০৪ রানের টার্গেট নিয়ে ৭ উইকেট হাতে রেখেই জয়লাভ করে অস্ট্রেলিয়া। ১৯৭৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চতুর্থ ইনিংসে ৪০৩ রানের টার্গেট নিয়ে খেলে ভারত ৬ উইকেটে জয়ী হয়। ওই তালিকায় বাংলাদেশের নাম রয়েছে ২৯৭ নম্বরে! ২০০৯ সালে গ্রানাডায় স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে এক টেস্টে বাংলাদেশ ২১৫ রানের টার্গেট নিয়ে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ২১৭ রান করে এবং ৪ উইকেটে জয়লাভ করে। এছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মাঝারি ধরনের টার্গেট পেয়ে হেরে গেছে বাংলাদেশ।

যেসব দেশ ৩০০ রানের অধিক টার্গেট নিয়ে সফল হয়েছে, তারা কিন্তু কেউ ছোট দল নয়। টেস্টে অভিজ্ঞ ও দক্ষ দেশগুলোই সফল হচ্ছে। বাংলাদেশকেও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে, হতে হবে দক্ষ। বাংলাদেশের বিশ্বরেকর্ড গড়ার দরকার নেই। আপাতত চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশকে ৩০০ কিংবা এর চেয়ে কিছু কম বা কিছু বেশি রানের টার্গেট নিয়ে জয়লাভের যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশ টেস্টে অভীষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে। আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টে এবং ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় দ্বিতীয় টেস্টে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একসময়ের বিশ্ব কাঁপানো দল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সহজভাবে নিয়ে চলবে না। আচমকা জেগে উঠতে পারে তাদের আগের রূপ।      

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads