• রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪২৯
লিটনের বিরুদ্ধে ধ্বংসের রাজনীতির অভিযোগ

এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন

সংরক্ষিত ছবি

নির্বাচন

লিটনের বিরুদ্ধে ধ্বংসের রাজনীতির অভিযোগ

  • বিজয় ঘোষ, রাজশাহী
  • প্রকাশিত ২৪ জুলাই ২০১৮

রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ধ্বংসের রাজনীতিতে মেতে উঠেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। গতকাল সোমবার নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ধানের শীষের গণসংযোগের সময় সাংবাদিকদের বুলবুল বলেন, সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থী ধ্বংসের রাজনীতিতে মেতে উঠেছেন। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। তারা বিএনপি ও ২০-দলীয় জোটের গণজোয়ার দেখে ভীত হয়ে নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার করাচ্ছে।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, ‘বিএনপির তথাকথিত জনপ্রিয়তায় ভীত হওয়ার আমাদের কোনো কারণ নেই। কারণ জাতীয়ভাবেই তাদের কোনো জনপ্রিয়তা নেই। নির্বাচনে পুলিশকে ব্যবহারের যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তার কোনো ভিত্তি নেই। কারণ আওয়ামী লীগ জনগণের দল। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করে।

বিএনপির প্রার্থী বুলবুল বলেন, বিএনপি হচ্ছে বাংলাদেশ এবং রাজশাহী নগরীর একমাত্র উন্নয়নের রূপকার। এই উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে এবং নগরীর মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ বসবাস আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এবং তাদের অন্য নেতাকর্মীরা হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন দাবি করে বুলবুল বলেন, তিনি রাজশাহীতে বসে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। কিন্তু রাজশাহীবাসী জানেন রাজশাহীর উন্নয়ন করার জন্য বিএনপির কোনো বিকল্প নেই। তাই গণগ্রেফতার ও জোর করে কোনো লাভ নেই। ভোটের দিন প্রতিটি কেন্দ্র বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা পাহারা দিয়ে রাখবে। কোথাও কোনো প্রকার অসঙ্গতি ও জোর করে সরকারদলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট নিতে গেলে পাল্টা জবাব দেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে কোটি কোটি টাকার পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন সারা শহরে টানিয়ে রেখেছেন। সিটি করপোরেশনের বিজ্ঞাপনী স্থানগুলোতেও লিটনের ফেস্টুন টানানো রয়েছে। এতে করে সিটি করপোরেশন রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কিন্তু এগুলো দেখার কেউ নেই। পুলিশ বিভাগ, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন শুধু বিএনপির নেতাকর্মীদের দেখতে পায়। বুলবুল আরো বলেন, নির্বাচন কমিশনকে অনেক অভিযোগ দিয়েও কোনো লাভ হয়নি।

বুলবুলের গণসংযোগে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাসিকের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, তানোর পৌরসভার মেয়র মিজানুর রহমান প্রমুখ।

অপরদিকে গতকাল নির্বাচনী গণসংযোগের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, ‘বিএনপির তথাকথিত জনপ্রিয়তায় ভীত হওয়ার আমাদের কোনো কারণ নেই। কারণ জাতীয়ভাবেই তাদের কোনো জনপ্রিয়তা নেই। তাদের নেতাকর্মীরা কে কোথায় চলে গেছেন, তার কোনো ঠিক নেই। তারা ক্ষমতায় থেকে সুবিধাবাদী দল, আন্দোলনের কোনো দল নয়। সে কারণে তারা রাজশাহীতে ব্যর্থ মেয়রের পেছনে কাতারবদ্ধ হতে পারেনি। তারা নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোল করে, বোমাবাজি করে।’

সকাল সাড়ে ১০টায় নগরীর ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের মঠপুকুর থেকে গণসংযোগ শুরু করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এরপর বালিয়াপুকুর, ছোট বটতলা ও বড় বটতলা মোড়, রানীনগর, সাধুর মোড়, মোন্নাফের মোড়, ইসলামপুর, বেদীসিংপাড়া, উপর ভদ্রা এবং ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভদ্রা এলাকায় গণসংযোগ করেন ও লিফলেট বিতরণ করেন তিনি।

ইসলামী আন্দোলন প্রার্থীর ৩২ দফা ইশতেহার : রাসিক নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। গতকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি তার ৩২ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন। ‘হাতপাখা’ প্রতীকের প্রার্থী শফিকুল ইসলামের ইশতেহারে দুর্নীতিমুক্ত নগর ভবন গড়ার বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল ইসলাম বলেন, সিটি করপোরেশনের কোটি কোটি টাকা লোপাট করা হয়। তিনি এই দুর্নীতি বন্ধ করে সেই টাকায় নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে চান। আমূল পরিবর্তন আনতে চান নগর ভবনে। নির্বাচিত হলে জীবন দিয়ে হলেও ইশতেহার বাস্তবায়ন করবেন বলেও মন্তব্য করেন শফিকুল।

আগামী ৩০ জুলাইয়ের নির্বাচনকে সামনে রেখে মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম তার ইশতেহারে বলেছেন, নির্বাচিত হলে তিনি হোল্ডিং ট্যাক্স অর্ধেকে নামিয়ে আনবেন। মওকুফ করে দেবেন রিকশা ও ভ্যানের নিবন্ধন ফি।

এ ছাড়া তিনি নাগরিক সেবার আরো নানা প্রতিশ্রুতি দেন নিজের ইশতেহারে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাজশাহী মহানগরের সভাপতি শফিকুল ইসলাম এবারই প্রথম নির্বাচন করছেন। তার ইশতেহার ঘোষণার সময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনৈতিক উপদেষ্টা আশরাফ আলী আকন্দ, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে দলটির পরাজিত মেয়র প্রার্থী নাসির উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads