• রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪২৯
গাজীপুর ও খুলনার পথেই হাঁটছে সরকার

তিন সিটির নির্বাচন সমন্বয়ের জন্য দলের তিন স্থায়ী কমিটির সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে

সংরক্ষিত ছবি

নির্বাচন

তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন

গাজীপুর ও খুলনার পথেই হাঁটছে সরকার

বিএনপির অভিযোগ

  • রেজাউল করিম লাবলু
  • প্রকাশিত ২৯ জুলাই ২০১৮

সরকার খুলনা ও গাজীপুরের পথেই হাঁটছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা। তারা বলছেন, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার কারচুপির পরিকল্পনা করছে। আর এতে সহযোগিতা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এত কিছুর পরও কঠোর কোনো অবস্থানে যাবেন না দলের নেতাকর্মীরা। কারণ খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতিতে এখন ব্যস্ত তারা। ফলে এখনই শক্তি ক্ষয় নয় বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা।

তিন সিটির নির্বাচন সমন্বয়ের জন্য দলের তিন স্থায়ী কমিটির সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বরিশালে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, রাজশাহীতে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং সিলেটে আমীর খসরু মাহমুদ কাজ করছেন। তারা নিয়মিত দলের প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনজনের সঙ্গেই কথা বলেছেন বাংলাদেশের খবরের এ প্রতিবেদক। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় জানান, খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মতো রাজশাহীতেও কারচুপির আশঙ্কা করছেন তিনি। এর অংশ হিসেবে বিএনপির বাছাই করা নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। একেক সিটিতে একেক কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। পেছনের খেলোয়াড়রা হলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ভোট কারচুপির পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে জেলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে কি না তা নিয়ে শঙ্কায় আছে ভোটাররা।

মির্জা আব্বাস বলেন, সুষ্ঠু ভোট হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখছেন না তিনি। তবে বরিশালের ভোটাররা অন্য সিটির মতো না। এখানে কারচুপি হলে স্থানীয় জনগণ তা রুখে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি বাংলাদেশের খবরকে বলেন, কারচুপির মাধ্যমে তিন সিটিতে সরকারদলীয় প্রার্থীর বিজয় সুনিশ্চিত করতে নিত্যনতুন কৌশল নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর আগে গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকার ভোটারদের পুলিশ গ্রেফতার করে তাদের নিজ নিজ জেলায় পেন্ডিং মামলায় জড়িয়ে কারাগারে পাঠিয়েছিল। এখন রাজশাহীতে একই কৌশলে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে পার্শ্ববর্তী জেলায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার রাজশাহীর বিএনপি প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের পর নগরীর বাইরে এমনকি পাশের জেলায় নেওয়া হচ্ছে। সিটি নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর পর থেকে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অন্তত দেড়শ নেতাকর্মীকে এভাবে নেওয়া হয়েছে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, খুলনা ও গাজীপুর নির্বাচনের অনিয়ম স্থানীয় জনগণ যেমন দেখেছে, তেমনি দেখেছেন ঢাকায় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে ওই অনিয়ম বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার কাছে জানতে চেয়েছেন তিনি। 

বিএনপি নেতাদের পাশাপাশি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) একই অভিযোগ করেছে। গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার অভিযোগ করেন, উৎসবমুখর পরিবেশে প্রচারণা শুরু হলেও নির্বাচনের মাঠ ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে। ইসির নির্দেশনা সত্ত্বেও গ্রেফতার হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। প্রথমে মামলা শুরু হয়েছে রাজশাহীতে। এখন সিলেটেও মামলা, গ্রেফতার ও হয়রানি শুরু হয়েছে। রাজশাহীতে পথসভায় ককটেল বিস্ফোরণ, সিলেটে নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বরিশালে নাশকতার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। এ ঘটনাগুলো ভোটারদের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads