• বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪২৯
সিইসিকে ব্যর্থ বলে নির্বাচন থেকে সরলেন লতিফ সিদ্দিকী

লতিফ সিদ্দিকী

ছবি : সংগৃহীত

নির্বাচন

সিইসিকে ব্যর্থ বলে নির্বাচন থেকে সরলেন লতিফ সিদ্দিকী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার সঙ্গে দেখা করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন টাঙ্গাইল-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য ও সাবেক এই মন্ত্রী গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান।

লতিফ সিদ্দিকী বলেন, দেশে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই, আমার কারণে আমার নেতাকর্মীরা মার খাবে, তা আমি মেনে নিতে পারব না। তাই আমি নিজেই নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছি।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমি আর নির্বাচন করছি না। কারণ মাঠ নির্বাচন করার মতো সমতল নয়। যারা সমর্থক তাদের পুলিশ প্রতিনিয়ত টেলিফোন করে ভয় দেখাচ্ছে। এর পরে ইলেকশন করা যায় নাকি?

তিন দফা দাবিতে টাঙ্গাইলে চার দিনের অনশনে অসুস্থ হলে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে আনা হয়েছিল লতিফ সিদ্দিকীকে। হাসপাতালের ৪১২ নম্বর ভিআইপি কেবিনে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার বিকালে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

লতিফ সিদ্দিকী রোববার সকালেই লিখিত অভিযোগ নিয়ে সিইসির সঙ্গে দেখা করেন। নির্বাচনী পরিস্থিতির অবনতির কারণ দেখিয়ে সরে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছে অভিযোগপত্রে। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হূদয়ে জানাচ্ছি যে, আমি ১৩৩ টাঙ্গাইল-৪ জাতীয় সংসদ আসনে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলাম। কিন্তু পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে নির্বাচন করার পরিবেশ নেই। নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় রাজনৈতিক দলে, নেতায় নেতায়, জনমতকে পক্ষে পাওয়ার জন্য থাকে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা। কিন্তু বর্তমান সংসদ সদস্য বালু ব্যবসায়ী এবং মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে পুলিশের ছত্রছায়ায় আমার ওপর হামলা করে গাড়ি ভাঙচুর করে, এতে ২০-২১ জন সমর্থক আহত হয়।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান এমপি এলাকাকে ত্রাস ও সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত করেছে। আমি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। দীর্ঘদিন পুলিশি জুলুমের বিরদ্ধে লড়েছি, কিন্তু পুলিশ এমন উলঙ্গভাবে কোনো প্রার্থীর সমর্থন করে নিরীহ মানুষদের হুমকি দেয়, আমার মিছিল বন্ধ করে সংসদ সদস্যের মিছিলে সহযোগিতা করে- এমন দেখেনি। পুলিশের অত্যাচারের পরও আন্দোলন করা যায়, পুলিশ বিপক্ষে অবস্থান নিলে নির্বাচন করা যায় না।’

লতিফ সিদ্দিকী আরো বলেন, ‘প্রতিদিন আমার সমর্থকদের গ্রেফতার করে হয়রানি করছে। সংসদ সদস্যের সরাসরি হস্তক্ষেপে, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার উসকানিতে আমার অফিস ভেঙে দিচ্ছে। পরিস্থিতির এহেন অবনতিতে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর। আমি আপনার মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাতে চাই, আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে আমি সরে দাঁড়ালাম। আমি অসম্মানিত হই সম্মানিত হওয়ার জন্য।’

তবে ভোট থেকে সরে দাঁড়ালেও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্ধারিত সময় পার হয়ে যাওয়ায় তা কার্যকর  হবে না। সে ক্ষেত্রে ব্যালটে তার নাম ও প্রতীক থাকবে।

গত ১৬ ডিসেম্বর লতিফের নির্বাচনী এলাকা কালিহাতীর গোহালিয়াবাড়ি ইউনিয়নের সরাতৈল এলাকায় তার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা ও চারটি গাড়ি ভাঙচুর হয়। হামলার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য হাছান ইমামের কর্মী-সমর্থকদের দায়ী করে কালিহাতী থানার ওসির প্রত্যাহারসহ তিন দফা দাবিতে সেদিনই জেলা রিটার্নিং কার্যালের সামনে অবস্থান নেন লতিফ সিদ্দিকী। ২৪ ঘণ্টা পরও প্রশাসন সেসব দাবির বিষয়ে কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় সোমবার তিনি আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন। অনশনের একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে বুধবার ভোরে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকায় এনে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads