• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জৈষ্ঠ ১৪২৯

নির্বাচন

রাজনীতিতে নির্বাচনি হাওয়া

বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ার উদ্যোগ

  • এম এ বাবর
  • প্রকাশিত ০২ সেপ্টেম্বর ২০২১

এখনো বাকি প্রায় আড়াই বছর। এরই মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলো। আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ সব দলই তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠন গুছিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোও গত মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব দেওয়া শেষ করেছে।

এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পুরো ভোটগ্রহণ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ইসি। আর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ বছরই কেনা হচ্ছে আরো প্রায় ৩৫ হাজার ইভিএম মেশিন। সব মিলিয়ে দেশের রাজনীতি নির্বাচনি হাওয়া বইতে শুরু করেছে।

রাজনৈতিক বিশ্নেষকরা বলছেন, আবারো কারসাজির নির্বাচনের শঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এতে জাতি হিসেবে চরম সংকটের দিকে ধাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন না হলে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথও রুদ্ধ হয়ে যাবে। তাই বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সাংগঠনিক দুর্বলতা দ্রুত কাটিয়ে তুলতে হবে। নইলে সুষ্ঠু নির্বাচনের কাঙ্ক্ষিত দাবি আদায় করা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন তারা।

সংবিধান অনুযায়ী আগামী ২০২৩ সালের শেষের দিকে কিংবা ২০২৪ সালের শুরুর দিকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। এর আগেই আওয়ামী লীগ নিজেদের গুছিয়ে নেবে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে আওয়ামী লীগের জাতীয় ত্রিবার্ষিক সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি রয়েছে। তার আগেই ৭৮টি সাংগঠনিক জেলাসহ উপজেলা, থানা, পৌরসভা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। দলটি কয়েকজন সিনিয়র নেতা বলেছেন, তৃণমূল সম্মেলনের পর পুরোদমে আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হবে। সেইসঙ্গে ভোটের হিসাব-নিকাশ মেলানোর জন্য কয়েকটি ইসলামী দলের সঙ্গে সখ্য বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে আওয়ামী লীগ। একই চিন্তা রয়েছে কয়েকটি বামপন্থি রাজনৈতিক দল নিয়েও। এ ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেলে মহাজোটে নির্বাচনি জোটের পরিধি বাড়ানো হবে। অন্যদিকে রাজনীতির মাঠে কোণঠাসা বিএনপিও দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন টার্গেট করে ভেতরে ভেতরে সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। নিয়েছে তৃণমূলকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ। প্রথমেই তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠন গুছিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ রয়েছে। এরপর সুনির্দিষ্টভাবে চারটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।

বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানে এক দফা দাবিতে ‘নতুন রূপে’ আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। এবারের আন্দোলনকে ‘বাঁচা-মরার’ লড়াই হিসেবে বিবেচনায় নিয়েই ঢাকার রাজপথ দখলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। সরকারবিরোধী সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে দলটির হাইকমান্ড।

এদিকে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধনে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর ২০২০-এর আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার সময় শেষ হয়েছে মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট)। নিয়ম অনুযায়ী দলগুলোকে এই সময়ের মধ্যেই আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রতিবছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আগের পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব দেওয়ার কথা। তবে এই বছর বড় দলগুলোসহ বেশিরভাগ দলই নির্ধারিত সময়ে আয়-ব্যয়ের হিসাব ইসিতে জমা দেয়নি। এমনকি হিসাব দেওয়ার সময় বাড়ানোর জন্যও কমিশনে আবেদন করেনি। তারপরও করোনা সংক্রমণ বিবেচনা করে হিসাব জমা দেওয়ার জন্য একমাস বাড়তি সময় দেয় কমিশন।

আগামী নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিকের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন শীর্ষ নেতা। বর্তমানে জাতীয় পার্টিকে নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা থাকলেও নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাদের আরো কাছে টানার ভাবনা রয়েছে। ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের সঙ্গে সম্পর্কের আরো উন্নয়ন ঘটানোর উদ্যোগ থাকবে।

এছাড়া বেশ কয়েকটি জেলায় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক থাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে কিছুটা স্থবিরতা এসেছে। দ্বন্দ্ব-বিবাদ লেগেই আছে। নানামুখী জটিলতাও তৈরি হয়েছে। এমনকি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মাগুরা, সাতক্ষীরা, নরসিংদী, চট্টগ্রাম মহানগর, কক্সবাজারে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং সিরাজগঞ্জ, নরসিংদীতে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকরা দায়িত্ব পালন করছেন। এই জেলাগুলোতে আগেভাগে সম্মেলন করার প্রস্তুতি রয়েছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরের সম্মেলন নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

তাছাড়া বছর দেড়েক আগে সম্মেলন হলেও কয়েকটি জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনো অনুমোদন পায়নি। এ নিয়ে সংশ্নিষ্ট জেলাগুলোতে সাংগঠনিক জটিলতা তৈরি হয়েছে। সাংগঠনিক বিধান অনুযায়ী, সম্মেলন যখনই হোক না কেন-পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের দিন থেকেই কমিটির মেয়াদকালের গণনা শুরু হয়। এ কারণে এবার তৃণমূল পর্যায়ে সম্মেলনের পর দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের প্রস্তুতি রয়েছে। সেই ক্ষেত্রে আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে যেসব শাখার সম্মেলন হবে, সেসব শাখা কমিটির পূর্ণাঙ্গ কমিটি দ্রুত অনুমোদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি মাস থেকে ঢাকা বিভাগে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা ও উপজেলা কমিটিগুলোর সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথমেই রাজবাড়ী জেলার সম্মেলন হবে। এরপর নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি রয়েছে। দলের জাতীয় সম্মেলনের আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ জেলাগুলোর সম্মেলন করা হবে বলে জানিয়েছেন এই বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন।

এদিকে বিএনপি দলীয় সূত্র জানায়, দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি আদায়ে ডান-বাম সব রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে এক প্ল্যাটফরমে একত্র করতে চায় বিএনপি। এ ব্যাপারে দলের পক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয়েছে। অভিন্ন দাবিতে প্রথমে দলগতভাবে আদর্শভিত্তিক যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি এবং পরে একমঞ্চ থেকে ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে দলটি। এরই মধ্যে ২০ দলকে কার্যত ‘নিষ্ক্রিয়’ করে রাখার কৌশল চলছে, যাতে বৃহত্তর ঐক্যজোটের পথে অন্যতম বাধা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীকে ধীরে ধীরে জোটের বাইরে ঠেলে দেওয়া যায়।

সূত্র জানায়, বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের ‘সখ্য’ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দেশে-বিদেশে ‘ব্র্যান্ডিং’ করে লাভবান হয়েছে। এবার জামায়াত ইস্যু থেকে বিএনপি বেরিয়ে আসতে এবং বিদেশিদের সামনে নিজেদের নতুন অবস্থান পরিষ্কার করতে চায়, যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপির হাত ধরে জামায়াতই ক্ষমতায় আসবে-আওয়ামী লীগ এ প্রচার চালাতে না পারে। এ বিষয়ে ঐক্যফ্রন্ট, বাম, ইসলামী দলসহ অন্যান্য দলের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করা হয়েছে।

দেশের রাজনৈতিক অবস্থা ও আগামী নির্বাচন নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সংগঠনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ২০১৪ সালের একতরফা ও ২০১৮ সালে মধ্যরাতের নির্বাচনে মানুষের ভোটাধিকার ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। আবারো কারসাজির নির্বাচনের শঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। জাতি হিসেবে চরম সংকটের দিকে ধাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন না হলে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথও রুদ্ধ হয়ে যাবে। এটি কারো জন্য মঙ্গলজনক হবে না। এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে আমরা আশা করব, সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করে দেশকে সংকটের হাত থেকে রক্ষা করবে। একই সঙ্গে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির নেতৃত্বে সংকট রয়েছে। তারা আশা করেন, এ সংকটের উত্তরণ ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক ও দায়বদ্ধ দলে পরিণত হবে। বিরোধী দল ছাড়া গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় না।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, গভীর খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে বিএনপিতে সৎ, যোগ্য, ত্যাগী ও মেধাবী নেতাকর্মীদের খুঁজে নেতৃত্বের আসনে বসাতে হবে। শুধু নিজেদের অযোগ্য ও অন্ধ সমর্থকদের মাধ্যমে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়ে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন সুদূরপরাহত হবে। দলমত নির্বিশেষে দেশের বিভিন্ন সেক্টরের জ্ঞানী ও গুণী ব্যক্তিদের পরামর্শ গ্রহণ এবং দলে টেনে গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগাতে হবে। একইসঙ্গে নিজেদের ভুলত্রুটিগুলো চিহ্নিত করে তা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। দাবি আদায়ে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল বিএনপির সামনে অগ্নিপরীক্ষা বটে। আবার আগামী আড়াই বছর পর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও ক্ষমতায় না এলে অস্তিত্ব সংকটে পড়তে পারে দলটি। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগকে আগামী নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। নইলে দেশের রাজনীতিতে আবার নতুন করে সংকট সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহ্‌দীন মালিক বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে বড় দাগে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। আদর্শের তাগিদে আন্দোলনকারী দল, আর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য রাজনৈতিক দল। আমাদের বামপন্থি দলগুলো এবং আওয়ামী লীগ আদর্শের জন্য রাজনৈতিক দল। অন্যদিকে বিএনপি, জাতীয় পার্টি ইত্যাদি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার জন্য গঠিত রাজনৈতিক দল। দুঃসময়ে দ্বিতীয় শ্রেণির রাজনৈতিক দলগুলো বেশি বেকায়দায় পড়ে-এখন বিএনপির এই দশা। উত্তরণের জন্য দলটির নেতৃত্বের প্রথম সারিতে নতুন মুখ দরকার। দ্বিতীয়ত, লন্ডনকেন্দ্রিক নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল চলতে পারে না। সেখানে পরিবর্তন প্রয়োজন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি রাজনৈতিক মাঠে নয়, নিরাপত্তা বেষ্টনীতে বসে শুধুমাত্র লিপ সার্ভিসের মাধ্যমে গণমাধ্যমের ওপর ভর করে টিকে আছে। আসলে বিএনপি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি, নেবেও না।  সরকার দেশকে কখনোই বিএনপি শূন্য করতে চায়নি, এটি আওয়ামী লীগের রাজনীতিও নয়; বরং বিএনপি নীতিবিবর্জিত হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের রাজনীতিকে বৈধতা দিয়েছে। অতীত কর্মকাণ্ডের ফল হিসেবে বিএনপি আজ নিশ্চিহ্ন প্রায়। বিএনপির মিথ্যা-বানোয়াট-ভ্রান্তিমূলক বয়ান বাংলার জনগণ সবসময় ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।

তিনি জানান, আগামী নির্বাচন কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা ও পৌর নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে সাংগঠনিক টিম গঠনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই সাংগঠনিক টিমের সদস্যরাই তৃণমূল পর্যায়ের সম্মেলন কার্যক্রম নিয়ে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছেন। আর আগামী নির্বাচনে জোটের শরিক দলের সংখ্যাও বাড়তে পারে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে হটাতে জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন। জোটবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। তাই বর্তমান দুঃসময়ে জনগণকে সংগঠিত করার কোনো বিকল্প নেই। খুন-খারাবি, নারী-শিশু নির্যাতন, অপহরণ, গুপ্তহত্যা ইত্যাদি অনাচারের মাত্রা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ সরকার যেখানে জনগণের প্রতিপক্ষ সেখানে মানুষের জানমালের কোনো নিরাপত্তা থাকতে পারে না। সুতরাং জনগণের নিরাপত্তা বিধানের জন্যই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে।

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরেও জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেনি। জাতীয় ঐক্য ছাড়া স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা কঠিন। জামায়াত স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং অধিকার আদায়ের সংগ্রামে জুলুম-নির্যাতনের শিকার হওয়া সত্ত্বেও রাজপথে প্রতিবাদমুখর থেকেছে। আগামী দিনেও সবাইকে সঙ্গে নিয়ে জামায়াতে ইসলামী দেশ গড়ার রাজনীতি অব্যাহত রাখবে।

দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, এ সরকার যথেষ্ট করেছে। পুঁজিবাজার থেকে অর্থ লুট করেছে, নিজেরা অনেক সম্পদের মালিক হয়েছে। এবার দ্রুত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে বিদায় দেব। আমরা ২৮ বছর ধৈর্য ধরেছি, প্রত্যেকবারই আন্দোলন করে মুক্ত করেছি। কিন্তু এরপরও স্বৈরাচার সরকার অত্যাচার করে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। এবার আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শুধু ক্ষমতা পুনরুদ্ধারই করব না, ক্ষমতা ধরে রাখব। যাতে তারা আমাদের আর সহজে বঞ্চিত করতে না পারে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads