• বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪২৯
পাবনা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

ছবি : সংগৃহীত

শিক্ষা

পাবনা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ

১০ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

  • পাবনা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৬ নভেম্বর ২০১৮

ছয় দফা দাবিতে গতকাল সোমবার শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন, বিক্ষোভ ও উপাচার্যের কার্যালয়ে অবরোধের পর পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ১০ ছাত্রকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের এক জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

পাবিপ্রবির জনসংযোগ বিভাগের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন চৌধুরী জানান, দুটি আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের মঙ্গলবার (আজ) সকালের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। আগামী ১৬ নভেম্বরের প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে এবং অফিস খোলা থাকবে। এর আগে পাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবিতে ক্লাস বর্জন করে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে ভাইস চ্যান্সেলরকে অবরুদ্ধ করে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় ভাইস চ্যান্সেলর প্রশাসনিক ভবন থেকে বের হয়ে বাসভবনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে ধাওয়া করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীরা ভিসির বাসভবনও অবরুদ্ধ করে রাখে। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের প্রবেশের মূল ফটক ও প্রশাসনিক ভবন আটকে রাখে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ছয় দফা দাবি জানিয়ে আসছি। দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসও দেয় প্রশাসন। অথচ গত ৩-৪ মাস অতিবাহিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো প্রকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ইতোপূর্বেও আমরা ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধারাবাহিকভাবে আমাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন করেছি। প্রতিবার আমাদের আশ্বাস দিয়ে আন্দোলন থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের দাবি না মেনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের খেয়ালখুশিমতো ক্যাম্পাস পরিচালনা করে আসছে।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষসহ পরবর্তী সব ব্যাচের অর্ডিন্যান্সের আওতাভুক্ত করা, হলের ডাইনিংয়ের খাবার উন্নয়নের জন্য ভর্তুকি প্রদান, ক্লাস রুম ও চেয়ার সঙ্কট দূর করা, পরিবহন সঙ্কট, ক্যাম্পাসে ওয়াইফাইয়ের ব্যবস্থা করা এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন।

এদিকে দুপুর আড়াইটার দিকে ভিসি তার অফিস কক্ষ থেকে বের হয়ে বাসভবনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা তার পিছু নিয়ে ধাওয়া করে ইটপাটকেল ও জুতা-স্যান্ডেল নিক্ষেপ করে। পরে ভিসি ড. রোস্তম আলী দৌড়ে বাসভবনে গিয়ে আশ্রয় নিলে শিক্ষার্থীরা বাসভবনও অবরুদ্ধ করে রাখে। 

এ বিষয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি আওয়াল কবির জয় বলেন, বিষয়টি উদ্বেগের। তবে এটি প্রত্যাশিত নয়। আশা করি ভিসি স্যার দ্রুত এ অবস্থা নিরসনের জন্য উদ্যোগ নেবেন।

এ বিষয় নিয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. রোস্তম আলীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং ধাওয়ার কথা বললে তিনি বলেন, আমি পেছনে না তাকিয়ে দ্রুত বাসায় চলে আসি। এখন পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করছি, পরে কথা বলব বলে মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

পাবনা সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ছাত্ররা তাদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করছে। ভিসি স্যারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করবেন। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads