• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জৈষ্ঠ ১৪২৯
গবেষণা আছে ১৬ শতাংশ শিক্ষকের

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

সংরক্ষিত ছবি

শিক্ষা

রাবির কলা অনুষদ

গবেষণা আছে ১৬ শতাংশ শিক্ষকের

  • রাবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন নিয়মিত প্রকাশের চেষ্টা করা হলেও শিক্ষকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হওয়ায় তথ্য বিভ্রাট থেকে যাচ্ছে দেশের ২য় বৃহত্তম এই বিদ্যাপীঠের বার্ষিক প্রতিবেদনে। প্রকাশিত তথ্য মিলছে না ব্যক্তি তথ্যের সঙ্গে। নেই অর্থনৈতিক হিসাব, শিক্ষকদের গবেষণার বিস্তারিত তথ্যও। সংশ্লিষ্টদের দাবি, বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয়ের দলিল হলেও প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিনিধিত্ব করতে পারছে না। তাই ‘নামমাত্র প্রতিবেদন’ প্রকাশ হিসেবেই মনে করছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের। এর আগে ২০১৩ সালের জুন মাসে মাসে ২০০৯-২০১০ শিক্ষাবর্ষের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এর আগে ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যার প্রকাশকাল হিসেবে দেওয়া হয়েছে এপ্রিল ২০১০। পরে ২০১৬ সালে ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, পূর্বের বছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে অর্থ ও হিসাব দফতরের তথ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় ব্যয়ের হিসাব দেখানো হয়েছে। তবে সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি কোনো হিসাব।

একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য দুটি ধাপে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়, তবে যে বরাদ্দ দেওয়া হয় তাতে শিক্ষকরা কখন গবেষণা জমা দিয়েছেন বা এখনো কতজন দেননি সে বিষয়েও নেই তথ্য।

বার্ষিক প্রতিবেদনে তথ্য নেই শিক্ষকদের ধারাবাহিক গবেষণার তথ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের দুই শতাধিক শিক্ষকের মাত্র ১৬ শতাংশ শিক্ষকের গবেষণা আছে বলছে বার্ষিক প্রতিবেদন। ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের চিত্রও একই। ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের শতাধিক শিক্ষকের মধ্যে মাত্র গবেষণা আছে ৪টি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। তবে অনুষদগুলোর শিক্ষকদের দাবি, অনেকে গবেষণা করছেন তবে সেগুলো জমা দেওয়া হচ্ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক শাহ আজম বলেন, বছরে একের অধিক গবেষণা পাবলিকেশন হয়েছে এমনও তথ্য আমাদের কাছে আছে। কিন্তু অনেক শিক্ষক জমা দেন না। জমা না দেওয়ায় তথ্যগুলো বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয় না।

কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ফজলুল হক বলেন, আমার দেখা অনেক শিক্ষক আছেন যারা নিয়মিত গবেষণা করেন। বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য আসলে যে সঠিক তথ্য সেটি নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তার অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লিখিত তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিনিধিত্ব করে না।

অনুসন্ধানে মিলেছে সত্যতা। শিক্ষকদের তথ্য না দেওয়ার কারণেই বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ কমিটি সঠিক তথ্য দিতে পারেন না। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিপত্তি বাধে তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের প্রতিবেদনের জন্য জুলাই মাসে তথ্য দেওয়ার জন্য বিভাগে বিভাগে নোটিশ দেওয়া হলেও ডিসেম্বরের শুরুর দিকে তথ্য দিচ্ছে কিছু বিভাগ। এমনও হয়, ৪ থেকে ৫ বার নোটিশ দেওয়ার পর তথ্য পাওয়া যায়। সর্বশেষ যে তথ্য পাওয়া যায় সে তথ্য দিয়েই বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে কমিটি।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগগুলোর অনেক সভা, সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীরাও বিভিন্ন কো-কারিকুলার কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকে। বার্ষিক প্রতিবেদন যেহেতু একটা দলিল এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিনিধিত্ব করার প্রশ্ন। তখন এ সম্পর্কিত তথ্যও সেখানে উল্লেখ করা যেতে পারে।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ কমিটির সদস্য সচিব সাদেকুল ইসলাম বলেন, আমার দায়িত্ব বিভাগ থেকে যে তথ্য দেবে সেই তথ্য নিয়ে আসা ও সম্পাদনা করা। একাডেমিক কোনো বিষয়ে মন্তব্য করার এখতিয়ার আমার নেই।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিনিধিত্ব করতে না পারার কারণ কারণ ব্যাখ্যা করে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ কমিটির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা বলেন, আমরা নিয়মিত ও তথ্যবহুল প্রকাশের চেষ্টা করছি। তবে বিভাগে বিভাগে তথ্য চেয়ে ৪-৫ বার রিমাইন্ডার দেওয়া সত্ত্বেও তারা তথ্য দেয় না। এতে যে তথ্য সর্বশেষ পাওয়া যায় সে তথ্য দিয়েই প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা প্রায়োজন।

এদিকে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের বার্ষিক প্রতিবেদন আগামী জানুয়ারি মাসে সবার কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিশ্ববিদ্যায়ের এই উপ-উপাচার্য।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads