• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯
৪১ প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করেনি

ছবি : সংগৃহীত

শিক্ষা

৯০৯ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই পাস

৪১ প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করেনি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৮ জুলাই ২০১৯

চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় ৯০৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই পাস করেছে। অন্যদিকে ৪১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কেউই পাস করতে পারেনি। এছাড়া গত বছরের তুলনায় এবার শতভাগ পাস প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫০৯টি বেড়েছে। শূন্য পাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও ১৪টি কমেছে। গতকাল বুধবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলের পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, এবার আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে ৩৩টি শূন্য পাস প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বোর্ডে ১৫, রাজশাহী বোর্ডে ৭, কুমিল্লায় ৩, চট্টগ্রামে ১, বরিশালে ও দিনাজপুর বোর্ডে ৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। যশোর, বরিশাল ও সিলেট বোর্ডে কোনো শূন্য পাস কলেজ নেই। মাদরাসা বোর্ডের ৭টি ও ঢাকা বোর্ডের অধীনে ডিআইবিএসে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। কারিগরি বোর্ডেও শূন্য পাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই।

এদিকে শতভাগ পাস প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানেও রয়েছে ঢাকা বোর্ড। এ বোর্ডে ৫২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই পাস করেছে। এ ছাড়া যশোর বোর্ডে ১৮, রাজশাহী বোর্ডে ৩৪, কুমিল্লা বোর্ডে ৩১, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৪, বরিশাল বোর্ডে ৫, সিলেট বোর্ডে ৭ ও দিনাজপুর বোর্ডে ২০টি শতভাগ পাস প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মাদরাসা বোর্ডে ৬১৫টি এবং কারিগরি বোর্ডে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই পাস করেছে।

এদিকে আমাদের রাজশাহী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে চলতি বছর এইচএসসির ফলাফলে শতভাগ ফেল করেছে ৭টি কলেজ। গত বছর এর সংখ্যা ছিল ৬। ফেলের তালিকায় থাকা নওগাঁর মান্দা উপজেলার চকওলি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে ১৪ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে সবাই ফেল করেছে। একই উপজেলার চককামদেব আদর্শ কলেজে পরীক্ষার্থী ৯ জন সবাই ফেল করেছে। জয়পুরহাট সদরের জয়পুরহাট নৈশ্য বিদ্যালয়ের ৩ জন পরীক্ষার্থীর সবাই ফেল করেছে। এছাড়া রাজশাহীর দুর্গাপুরের দাবিপুর কলেজ ও বগুড়ার সারিয়াকান্দি গণকপাড়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২ জন করে পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে ফেল করেছে সবাই। জয়পুরহাট সদর উপজেলার ইছামতি আদর্শ কলেজ থেকে একজন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে ফেল করেছে। সিরাজগঞ্জ সদরের চৌগাছা মহিলা কলেজের মাত্র একজন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েও ফেল করেছে।

অন্যদিকে দিনাজপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের ৭টি কলেজ থেকে কেউই পাস করতে পারেনি। এই কলেজগুলো হলো- পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার আলহাজ তজিম উদ্দিন কলেজ, কুড়িগ্রামের রাজারহাট সিঙ্গার দবরিরহাট বি এল হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ ঘনশ্যাম স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আদিতমারী উপজেলার নামুরী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঠাকুরগাঁওয়ের পীলগঞ্জ উপজেলার পীরগঞ্জ আদর্শ কলেজ, দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার ব্যাপারীটলা আদর্শ কলেজ ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা এম এম আলহাজ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

প্রকাশিত ফল থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মানবিক, ইসলাম শিক্ষা ও সংগীত বিভাগে পাসের হার ৬৫ দশমিক শূন্য ৯ ভাগ, যা অন্য দুই বিভাগের চেয়ে কম। এইচএসসির ৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের গ্রুপভিত্তিক তথ্য যাচাই করে দেখা গেছে, বিজ্ঞান বিভাগে সবচেয়ে বেশি ৮৫ দশমিক ৫৭ ভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৩ হাজার ১৯২ জন। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৩ হাজার ৯৯০টি জিপিএ-৫সহ পাস করেছে ৭৩ দশমিক ৫১ ভাগ।

তবে সবচেয়ে কম পাস করেছে মানবিক ইসলাম শিক্ষা ও সংগীত বিভাগে। এই বিভাগে ৫ লাখ ৯৮ হাজার ২৯৪ জনের মধ্যে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৪২১ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ হাজার ৬২৫ জন শিক্ষার্থী। মানবিক বিভাগের কম পাসের হারের কারণেই গড় পাসের হার কমে গেছে বলে জানিয়েছে বোর্ড।

প্রসঙ্গত, গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল হস্তান্তর করেন। এরপর সংবাদ সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফল ঘোষণা করেন। এবারের পরীক্ষায় সারা দেশে গড় পাসের হার ৭৩.৯৩ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪৭ হাজার ২৮৬ জন। গত বছর গড় পাসের হার ছিল ৬৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। সে হিসাবে এবার পাসের হার বেড়েছে ৭ দশমিক ২৯ শতাংশ।

পরীক্ষার্থীদের তালিকা অনুযায়ী, এ বছর ৯ হাজার ৮১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৩ লাখ ৫১ হাজার ৫০৫ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। ৬ লাখ ৬৪ হাজার ৪৯৬ ছাত্র ও ৬ লাখ ৮৭ হাজার ৯ ছাত্রী। এর মধ্যে ৮টি সাধারণ বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী ১১ লাখ ৩৮ হাজার ৫৫০ জন ও মাদরাসার আলিমে ৮৮ হাজার ৪৫১ এবং কারিগরিতে এইচএসসি (বিএম) ১ লাখ ২৪ হাজার ২৬৪ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। গত ১ এপ্রিল চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের তত্ত্বীয় পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হয় ১১ মে। এরপর ১২ মে থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হয় ২১ মে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads