• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জৈষ্ঠ ১৪২৯
ধর্মঘটে অচল জাবি: ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণে বাধার অভিযোগ

ছবি: বাংলাদেশের খবর

শিক্ষা

ধর্মঘটে অচল জাবি: ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণে বাধার অভিযোগ

  • প্রকাশিত ২৮ অক্টোবর ২০১৯

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তাকে অপসারণের দাবিতে সবার্ত্মক ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ধর্মঘটে একদিকে প্রশাসনিক কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের ক্লাস পরীক্ষায় অংশ নিতে বাধা প্রদান করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে চলমান আন্দোলন নিয়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষে বিপক্ষে বক্তব্যে পাওয়া গেছে।

আজ সোমবার সকাল থেকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে নতুন ও পুরাতন প্রশাসনিক ভবন এবং কলা ও মানবিকী অনুষদ, সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ অবরোধ করে রাখেন আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এতে শিক্ষার্থীরা ক্লাস পরীক্ষায় অংশ নিতে গেলে বাধার মুখোমুখি হয়। এসময় কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বাকবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ করার অধিকার আন্দোলনকারীদের কেউ দেয়নি। শিক্ষা যেমন আমার অধিকার, তেমন আন্দোলনকারীদের আন্দোলনের অধিকার রয়েছে। কিন্তু শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে তাদের আন্দোলনের কোনো যৌক্তিক কারণ আছে বলে মনে করি না।

ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, আন্দোলনকারীরা কোনোভাবেই আমাদের ক্লাস-পরীক্ষা বানচাল করতে পারে না। আন্দোলনে যাদের সংহতি আছে তারা ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে না। কিন্তু পেশি শক্তি দেখিয়ে কাউকে তারা ক্লাস-পরীক্ষা থেকে বিরত রাখতে পারে না।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি ক্লাস করতে এসেছিলাম। তবে আন্দোলনকারীদের দাবি যৌক্তিক মনে হওয়ায় আমি ক্লাসে অংশগ্রহণ করিনি।

এদিকে, কলা ও মানবিকী অনুষদে প্রবেশ করতে না পারায় ইতিহাস বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের শহীদ মিনারের পাদদেশে বসে পরীক্ষা দিতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে ইতিহাস বিভাগের কোর্স শিক্ষক আরিফা সুলতানা বলেন, পরীক্ষা নিতে ঢুকতে না দেয়ায় আমি শহীদ মিনারে পরীক্ষা নিচ্ছি। আমার লক্ষ্য নির্দিষ্ট সময়ে ক্লাস পরীক্ষা শেষ করা যাতে সেশন জট না হয়। এতে কোনো বাধা আসলে আমি যেভাবেই হোক, ক্লাস পরীক্ষা বজায় রাখবো।

আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আন্দোলনকারীদের অধিকার আছে আন্দোলন করার, তেমনি অন্যদেরও অধিকার আছে ক্লাস পরীক্ষা দেয়ার। প্রত্যেকের অধিকার তার নিজের কাছে। এখানে বাধা দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।

এদিকে, শিক্ষার্থীদের ক্লাস পরীক্ষায় অংশগ্রহণে বাধা দেওয়ার অভিযোগ প্রত্যাখান করেছেন আন্দোলনকারী ও ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদি) জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত দে বলেন, আমরা গতকাল (রবিবার) ঘোষণা করেছিলাম যে, ক্লাস-পরীক্ষায় কেউ অংশ নিতে চাইলে তাকে বাধা দেওয়া হবে না। আজকে তার ব্যত্যয় ঘটে নি। তবে কলা অনুষদে সকাল বেলা আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বকারী পর্যায়ের কেউ ছিল না। যা ঘটেছে তা অনাকাঙ্খিত।

ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদ অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে আন্দোলনকারীদের সাথে শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছে ফ্যাসিবাদী প্রশাসন।

এদিকে চলমান আন্দোলনে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ বিঘ্ন ঘটছে বলে  মনে করছেন উপাচার্যপন্থী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্মিলিত সংগঠন ‘অন্যায়ের বিপক্ষে ও উন্নয়নের পক্ষে জাহাঙ্গীরনগর। সকাল সাড়ে দশটার দিকে পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলনকারীদের উপাচার্য ‘অপসারন মঞ্চে’ গিয়ে এ আলোচনার আহ্বান জানান তারা। কিন্তু তাতে কোনো সাড়া দেননি আন্দোলনকারীরা। ফলে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসেন উপাচার্যপন্থী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

এদিকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবন অবরোধ কর্মসূচি শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আন্দোলনকারীরা। পরে সংক্ষিপ্ত সবাবেশের মাধ্যমে অবিলম্বে উপাচার্যকে পদত্যাগের কঠোর হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনকারীরা। নয়তো আরও কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন বলে জানান তারা।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads