• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জৈষ্ঠ ১৪২৯
শিক্ষকের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাবি ভিসিপন্থীদের মানববন্ধন

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

শিক্ষা

আন্দোলনকারীদের চিত্রকর্ম প্রদর্শন ও উইকেন্ড ক্লাস বন্ধের ঘোষণা

শিক্ষকের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাবি ভিসিপন্থীদের মানববন্ধন

  • জবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ৩১ অক্টোবর ২০১৯

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্বের শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ শৈবালের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছে ভিসিপন্থী শিক্ষকরা। অন্যদিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের অপসারনের দাবিতে টানা চার দিনের ধর্মঘট কর্মসূচির অংশ হিসাবে ক্যাম্পাসে চিত্রকর্ম প্রদর্শন ও মৌন মিছিল করেছে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে 'বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ' এর ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন ভিসিপন্থী বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকেরা।

মানবন্ধনে বক্তারা বলেন, বুধবার ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভবনে প্রবেশে সহযোগিতা করার সময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় শিক্ষক মহিবুর রহমান শৈবালের। এক পর্যায়ে কতিপয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী অতর্কিত হামলা করে শৈবালের ওপর। এই 'ন্যাক্কারজনক' ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং দোষীদের অতিদ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

মানববন্ধনে নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নুহু আলম বলেন, নীতি-নৈতিকতাভুক্ত কোনো শিক্ষার্থী একজন শিক্ষকের গায়ে হাত তুলতে পারে না। ছাত্র নামধারী 'জামাত-শিবির' এই কাজ করেছে।

নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম বলেন, আন্দোলন করা গণতান্ত্রিক অধিকার। তাদের যেমন আন্দোলন করার অধিকার রয়েছে, তেমনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্লাস করার অধিকার রয়েছে। এটি একটি পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা। এই ধরনের ঘটনা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে অবশ্যই আতঙ্কের মধ্যে ফেলছে।

এদিকে উপাচার্যকে অপসারনের দাবিতে চতুর্থ দিনের ধর্মঘট কর্মসূচির অংশ হিসাবে চিত্রকর্ম প্রর্দশন ও মৌন মিছিল করেছে আন্দোলনকারীরা। এসময় তারা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।

চিত্রকর্ম প্রর্দশন কর্মসূচি সম্পর্কে বাংলা বিভাগের শিক্ষক ও আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক অধ্যাপক তারেক রেজা বলেন, ভিন্ন রকমভাবে চিত্রকর্মের ভেতর দিয়ে উপাচার্যের দুর্নীতির প্রতিবাদ জানানোর চেষ্টা করেছি। কাপড়ে ছবি এঁকে, শিল্পের মাধ্যমে লুটপাটের প্রতিবাদ জানিয়েছে। এই প্রথম ক্যাম্পাসে এরকম ব্যতিক্রমধর্মী কর্মসূচি পালন করা হলো। অবিলম্বে দুর্নীতিবাজ উপাচার্যের অপসারনের দাবিতে আমাদের এই আয়োজন।

তিনি আরও বলেন, আগামীকাল থেকে সকল প্রকার উইকেন্ড কোর্সের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করা হবে। যতদিন পর্যন্ত এই সৈরাচার উপাচার্য দুর্নীতির কালিমা সঙ্গে নিয়ে পদত্যাগ করবে না ততোদিন আমাদের এই আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে।

এদিকে ভিসিপন্থী শিক্ষকদের মানববন্ধনের প্রতিক্রিয়ায় 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' ব্যানারের আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র ও দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, "তারা মিথ্যাচার করছেন। ঘটনার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আন্দোলনকারী জয়কে সহকারী প্রক্টর টেনে মাটিতে ফেলে দেন এবং সাথে নিজেও পড়ে যান। যারা এ ধরনের মিথ্যাচার করতে পারেন, তারা শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা রাখেন না।

এদিকে, সকালে সাড়ে ৮টা থেকে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনকারীরা নতুন ও পুরাতন প্রশাসনিক ভবন এবং বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক ভবনের প্রবেশ ফটক আটকে অবস্থান নেন। অবরোধের কারণে উপাচার্য ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেননি। ফলে প্রশাসনিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারেন নি কোন কর্মকর্তা। তবে মাসের শেষ দিন হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্ত্বরে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ভাতার রশিদ দিতে দেখা যায় হিসাবরক্ষককের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাকে। গুঞ্জন আছে আন্দোনরত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বেতন যেন হয় সেজন্য আন্দোলনকে কিছুটা শিথিল করেছেন আন্দোলনকারীরা। অন্যদিকে ধর্মঘটের কারণে অধিকাংশ বিভাগে পূর্ব নির্ধারিত ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে বিভিন্ন বিভাগে উপাচার্যপন্থী শিক্ষকদের ক্লাস-পরীক্ষা নিতে দেখা গেছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads