• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারী ঘোষণা করল দিল্লি

সংগৃহীত ছবি

ভারত

ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারী ঘোষণা করল দিল্লি

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৯ মে ২০২১

প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগকে অবশেষে মহামারী হিসেবে ঘোষণা করল দিল্লি। গত বৃহস্পতিবার ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত ১৫৩ রোগী শনাক্তের পরই এই ঘোষণা দেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বাইজাল। এ সময় কিছু নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে। এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডে

এসব নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে, দিল্লির সরকারি-বেসরকারি সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাক ফাঙ্গাস শনাক্ত ও চিকিৎসার জন্য রাজ্য সরকার, কেন্দ্রীয় সরকার ও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের জারি করা নির্দেশিকা মেনে চলবে। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত ও সন্দেহভাজন প্রতিটি ঘটনা দিল্লির সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তরের অন্তর্ভুক্ত স্বাস্থ্য সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ঘোষণা করবে।

ভারতের মহামারী রোগ আইন ১৮৯৭ এর আওতায় জারি করা নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি দিল্লিতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইসিস রোগ বা এ রোগে আক্রান্তদের বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করতে চান, সেক্ষেত্রে অবশ্যই ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমতি নিতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটে সেক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারবে দিল্লির রাজ্য সরকার।

মিউকরমাইসিটিস নামে এক ধরনের ছত্রাকের কারণে ঘটে থাকে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিস রোগটি। ভাইরাসটি আশপাশের পরিবেশেই থাকে, তবে সবাই এই ছত্রাকটির শিকার হবেন, এমন নয়। মিউকরমাইসিটিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের শিকার হন সাধারণত সেই সব ব্যক্তি যাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা সাধারণ লেভেল বা স্তরের অনেক নিচে এবং যাদের রক্তে উচ্চ মাত্রার শর্করা বা ডায়াবেটিস প্রবণতা আছে। 

করোনা চিকিৎসার সঙ্গে এই রোগটির সম্পর্ক হলো করোনায় আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় স্টেরয়েড ব্যবহূত হয়। স্টেরয়েড করোনায় আক্রান্ত রোগীর ফুসফুসের প্রদাহ উপশমসহ অন্যান্য কিছু সুবিধা দিলেও মাত্রাতিরিক্ত স্টেরয়েডের ব্যবহার রোগীর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্তের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে।

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস মূলত মানুষের নাসারন্ধ্র, ফুসফুস এবং মস্তিষ্ককে আক্রমণ করে। এ রোগে আক্রান্ত রোগীর মুখের একপাশ ফুলে যাওয়া, তীব্র মাথাব্যথা, চোখ ফোলা, মুখের নাক বা মুখের ওপরের দিকে কালো ক্ষত, বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দেয়।

রোগটি যদিও ছোঁয়াচে নয়, তবে করোনার কারণে আক্রান্ত রোগীর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া ও এই রোগের চিকিৎসা প্রক্রিয়ার কারণে এতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে ভারতে। এই রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। শতকরা ৫৪ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে থাকে এই শঙ্কা।

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারতে দিন দিন বেড়েই চলেছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের দৌরাত্ম্য। এদিকে, এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ভারতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১১ হাজার ৭১৭ জন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত রোগী হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দেখা যাচ্ছে দেশটির গুজরাট রাজ্যে। সেখানে বর্তমানে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৮৫৯ জন। তারপরই আছে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্র। সেখানে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৭৭০ জন; আর এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য অন্ধ্রে এ পর্যন্ত ৭৬৮ জন শনাক্তের খবর পাওয়া গেছে।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে সব রাজ্যকেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারী রোগ হিসেবে ঘোষণা করার আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি ঘটনা তদারকির জন্য রাজ্যগুলোর স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে।

-

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads