চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী রিগ্যান আচার্য্যের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেওয়া ও ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে অর্থ আদায়ের চেষ্টার অভিযোগে পটিয়া থানা পুলিশের পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ ইসমাইল হোসেনের আদালতে মামলাটি করেন ভুক্তভোগী রিগ্যান আচার্য্য। মামলার আসামিরা হলেন- চট্টগ্রামের পটিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খাজু মিয়া, মো. খোরশেদ, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. মাসুম, মো. বশির ও কনস্টেবল হুমায়ুন। মামলার বাদীর আইনজীবী সেলিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মামলায় দুর্নীতি দমন আইন ১৯৪৭-এর (৫) ২ ধারার সঙ্গে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলাটি গ্রহণ করে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তদন্তের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রামের পটিয়ার ধলঘাটে শ্বশুরবাড়ি থেকে বিশ্বকর্মা পূজা শেষ করে শহরে আসার উদ্দেশে গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাত সোয়া ১টায় পটিয়া ধলঘাট ক্যাম্পের কাছে একটি গাড়িকে হাত উঁচিয়ে সিগন্যাল দেন ভিকটিম রিগ্যান আচার্য্য। সামনে থামলে দেখতে পান সেটি পুলিশের গাড়ি। এ সময় পুলিশ অ্যাডভোকেট রিগ্যানকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। এর প্রতিবাদ জানালে গাড়িতে থাকা পুলিশ সদস্যরা রিগ্যানকে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে নিয়ে তার পকেট থেকে আট হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। এ সময় পরিবারের সদস্যদের ফোন করে এক লাখ টাকা নিয়ে পটিয়া থানার সামনে আসতে বলার জন্য চাপ দিতে থাকে। বাদী পরিবারের সঙ্গে কথা বলার ভান করে চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নাজিমউদ্দিন চৌধুরীকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে সেই ফোন থেকে পুলিশের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। পরিচয় পাওয়ার পর বাদীকে ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয় পুলিশ।
কিন্তু পরক্ষণে তারা আবার সিদ্ধান্ত নেয়, বাদীকে মাতাল সাজিয়ে ছাড়বে। এ জন্য পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় আইনজীবী রিগ্যানকে। এরপর সেখান থেকে ভোরে থানায় নিয়ে গিয়ে ডিউটি অফিসারের কক্ষে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রেখে জোরপূর্বক দুটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করে। এতে বাদী অস্বীকৃতি জানালে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করেন। আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ওসির ফোনালাপের পর ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টায় রিগ্যান আচার্যকে ছাড়ে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার মামলা দায়েরের সময় আদালতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বার কাউন্সিলের সাবেক সদস্য ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আইনজীবী সমিতির সভাপতি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক নাজিমউদ্দিন চৌধুরী প্রমুুখ উপস্থিত ছিলেন।