• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জৈষ্ঠ ১৪২৯
বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র জমার প্রজ্ঞাপন জারি

বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র জমার প্রজ্ঞাপন জারি

প্রতীকী ছবি

আইন-আদালত

বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র জমার প্রজ্ঞাপন জারি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২১ ডিসেম্বর ২০১৮

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে সব ধরনের বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র জমা দেওয়ার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আদেশক্রমে জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব আবদুল জলিল এই আদেশ জারি করেন।

এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চিঠিতে বলা হয়েছিল, ৩০ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনের আগে সব বৈধ অস্ত্র জমা নেওয়ার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তবে সরকারি বা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা এই নির্দেশনার বাইরে থাকবে। সব অস্ত্র সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দিতে হবে। পরে ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে লাইসেন্সধারী বৈধ অস্ত্র জমা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।

গতকাল নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে পাঠান ইসির যুগ্মসচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান। নির্দেশনার অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে পাঠানো হয়েছে।

স্ব-স্ব থানায় সংশ্লিষ্টদের অস্ত্র জমা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের সব বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র জমা দিতে হবে। জরুরি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এই নির্দেশনার বাইরে থাকবে। যারা বৈধ অস্ত্রের মালিক তারা নির্দিষ্ট সময়ে আগ্নেয়াস্ত্র জমা না দিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয় চিঠিতে।

বৈধতার আড়ালে : এদিকে, বৈধ অস্ত্রের দোকান থেকে কেনা হচ্ছে নানা রকম অস্ত্র। আর তা হাতবদল হয়ে চলে যাচ্ছে সন্ত্রাসী ও জলদস্যুদের কাছে। সম্প্রতি একজন অস্ত্র বিক্রেতা ও চিকিৎসককে গ্রেফতারের পর ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল (সিটিটিসি) ক্রাইম ইউনিট জানতে পারে এসব তথ্য। বৈধ ডিলারের কাছ থেকে অস্ত্র কিনে অবৈধভাবে বনদুস্যদের কাছে বিক্রি করে আসছিলেন তারা। গত ১৫ মে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে ডা. জাহিদুল আলম কাদিরকে ও তার স্ত্রী মাসুমা আক্তারকে গাবতলী এলাকা থেকে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেফতার করা হয়। জাহিদুল আলম কাদিরের ময়মনসিংহের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় বেশকিছু অস্ত্র ও গুলি।

সিটিটিসির একজন কর্মকর্তা বলেন, অস্ত্র ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী বাবুলের আগ্নেয়াস্ত্রের বৈধ ডিলারশিপ থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে অবৈধপন্থায় অস্ত্র কেনাবেচা করে আসছিলেন। ময়মনসিংহ ছাড়াও তিনি রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও বিশেষ করে খুলনার সুন্দরবনের বনদস্যুদের কাছে অস্ত্রগুলো বিক্রি করতেন। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তিনি নিজেই পৌঁছে দিতেন সব অস্ত্র-গুলি। গ্রেফতারের দিনও তিনি যাচ্ছিলেন অস্ত্র বিক্রি করতে।

সূত্র জানায়, মেসার্স নেত্রকোনা আর্মস কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলী বাবুলকে মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে গ্রেফতার করে সিটিটিসির স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপ। তার কাছে পাওয়া যায় বৈধ কাগজপত্রহীন ১০টি আগ্নেয়াস্ত্র ও এক হাজার ১৮৫ রাউন্ড গুলি। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, অবৈধ অস্ত্র ও গুলি মজুত ও বিক্রির তথ্য। এসব অস্ত্রের বেশির ভাগ ব্যবহার করেছে সুন্দরবনের জলদস্যুরা।

বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র তিন লাখ : পুলিশের খাতায় বৈধ অস্ত্রের সংখ্যা তিন লাখ। রাজননৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী, বিশিষ্ট নাগরিকসহ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে রয়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার ৯১৮টি। এ ছাড়া বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থাপনা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের নামে রয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৩২৯টি। এ ছাড়া যে দল যখন ক্ষমতায় থাকে সেই দলের মন্ত্রী, এমপি ও নেতাদের তদবিরে যোগ্যতার বাছবিচার ছাড়াই অনেকইে বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্স বাগিয়ে থাকে বলে অভিযোগ আছে। পুলিশ সদর দফতরে ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ পরিসংখ্যান থাকলেও মাঠ পর্যায়ে এর কোনো হিসেব নেই। কোন থানা এলাকায় কার কাছে কয়টি আগ্নেয়াস্ত্র আছে সেটা জানে না মাঠ পর্যায়ের পুলিশ। এবার বৈধ অস্ত্র জমা নেওয়ার নির্দেশ দিলেও গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বৈধ অস্ত্র জমা নেওয়া হয়নি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads