• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জৈষ্ঠ ১৪২৯

আইন-আদালত

সাত দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবে দণ্ডপ্রাপ্তরা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৫ অক্টোবর ২০১৯

ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ১৬ আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ জজ মামুনুর রশিদ রায় ঘোষণা করেন। নিয়ম অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডের রায় (ডেথ রেফারেন্স) হাইকোর্টে আসার কথা। রায়ের শেষাংশে বলা হয়েছে, আসামিরা চাইলে বা ইচ্ছা করলে সাত কার্যদিবসের মধ্যে এ দণ্ডের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল আবেদন করতে পারবেন।

রায়ে আরো বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারায় মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য মহামান্য হাইকোর্টে পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে রায়ের অনুলিপি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেল সুপার ফেনী বরাবর পাঠাতে বলা হয়েছে।

হত্যার পর প্রায় সাত মাসের মধ্যে বিচারকাজ শেষ হলো। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, এমনই হওয়া উচিত। গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলোর স্বল্প সময়ে রায় হওয়া উচিত। তিনি আরো বলেন, এ রায় চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হবে হাইকোর্টে। কতজনের ফাঁসি থাকবে বা থাকবে না এটা হাইকোর্টের জন্য বিবেচ্য বিষয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে সন্তোষ প্রকাশ করছি, কারণ খুব অল্প সময়ের মধ্যে বিচারকাজটা সম্পন্ন হলো।

দেশব্যাপী আলোচিত এ হত্যা মামলার রায়ে সংক্ষুব্ধ পক্ষ হাইকোর্টে আপিল করবেন আইনের বিধান অনুযায়ী। বিচারিক আদালতের রায়ের কপি হাইকোর্টে আসতে ফৌজদারি কার্যবিধির কয়েকটি ধারা অনুসরণ করা হবে। ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হাইকোর্টের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণের) নথিপত্র হাইকোর্টে আসবে রায় ঘোষণার সাত দিনের মধ্যে। তামাদি আইনের ১৫০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে হয় সাত দিনের মধ্যে। এরপর নিয়ম অনুযায়ী ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য তৈরি হবে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত)।

সাধারণত ডেথ রেফারেন্স শুনানি হয় বিভিন্ন উচ্চ আদালতের নিয়ম অনুযায়ী। তবে প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দিলে পেপারবুক প্রস্তুত করা হবে দ্রুত সময়ের মধ্যে। ইতঃপূর্বে বিভিন্ন মামলার ডেথ রেফারেন্স শুনানির ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতি এ রকম নির্দেশ দিয়েছিলেন। হাইকোর্ট ডেথ রেফারেন্স শুনানি করে মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহাল রাখতে বা কমাতে পারেন।

আসামিরাও চাইলে সাজা থেকে খালাসের জন্য আপিল করতে পারবেন। আপিল করলেই বিচারিক আদালতের সাজা স্থগিত হয়ে যাবে। এটি আইনের বিধান। ডেথ রেফারেন্স শুনানি শেষে রায় ঘোষণা করবেন হাইকোর্ট। এরপর এ মামলার কোনো পক্ষ সংক্ষুব্ধ হলে আপিল করতে পারবেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে। এখানে আপিল আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। এরপরই চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হবে।

ফৌজদারি কার্যবিধির কতিপয় ক্ষেত্রে সংবিধানের ১০৩ অনুচ্ছেদে হাইকোর্ট বিভাগ থেকে সুপ্রিম কোর্টে আপিলের বিধান করা হয়েছে। আপিল বিভাগে যাওয়ার আগে লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) প্রয়োজন হতে পারে। সেটি গ্রহণ করা হলে আপিল করতে পারবেন সংক্ষুব্ধ আসামি বা বাদীপক্ষ। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৪২ (ক) ধারা অনুযায়ী আপিল নিষ্পত্তি করতে হবে। আপিল দায়েরের পর ৯০ দিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করতে হয়। আপিলে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে পারবেন আসামিরা। দণ্ডবিধির ৫৫ (ক) ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি আসামিদের ক্ষমা করে প্রাণভিক্ষাও দিতে পারেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads