• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯
মরব তবু রাজপথ ছাড়ব না

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গতকাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে আমরণ অনশনে শিক্ষকরা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

জাতীয়

মরব তবু রাজপথ ছাড়ব না

অসুস্থ ৯২ শিক্ষক-কর্মচারী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৩০ জুন ২০১৮

স্বীকৃতপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবিতে চলমান ‘আমরণ অনশন কর্মসূচি’র পঞ্চম দিন গতকাল শুক্রবারেও সরকারি কোনো সিদ্ধান্ত পাননি বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনকারীরা। সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে দাবি পূরণের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী ‘নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশন’-এর নেতারা।

এদিকে, কর্মসূচির পঞ্চম দিনে ৯২ জন শিক্ষক-কর্মচারী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের ৬৭ জনকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে, ১১ জনকে ভর্তি করা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সরকার দ্রুত তাদের দাবি মেনে নিলে তারা অনশন ছেড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যাবেন এবং শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করবেন। যতই ঝড়-তুফান আসুক না কেন, দা‌বি না মানা পর্যন্ত আমরা অনশন চা‌লি‌য়ে যাব।’

চলমান কর্মসূচিতে ৯২ শিক্ষক-কর্মচারী অসুস্থ হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে নিজেও অসুস্থ এ শিক্ষক নেতা বলেন, ‘গত ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির পর থেকে আমরা বিভিন্নভাবে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের চেষ্টা করেছি। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে আমাদের সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। তবে আমরা বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হলেই সমস্যার সমাধান হবে।’ তবে কর্মসূচির পাশাপাশি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে আলোচনা চললেও গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো সমাধান হয়নি বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে, গতকাল ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আমরণ অনশনের পঞ্চম দিনেও শিক্ষকদের উপস্থিতি বেড়েছে। ‘সকল স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবিতে আমরণ অনশন’ লেখা টি-শার্ট গায়ে ও ‘এমপিওভুক্তির দাবিতে আমরণ অনশন’ লেখা ফিতা মাথায় বেঁধে সহস্রাধিক শিক্ষক কর্মসূচিতে অংশ নেন। আমরণ অনশনের কারণে অভুক্ত শিক্ষকরা ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছেন।

গত ১০ জুন থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষকরা। দাবি পূরণ না হওয়ায় পূর্বঘোষণা অনুযায়ী গত ২৫ জুন, সোমবার থেকে তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন শুরু করেন।

অনশনে অংশ নেওয়া শিক্ষকরা বলেন, তারা ১৫ থেকে ২০ বছর যাবৎ সারা দেশে পাঁচ হাজারের বেশি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২০ লাখের বেশি শিক্ষার্থীকে বিনা বেতনে পাঠদান করে আসছেন। অনেকের চাকরির মেয়াদ আছে ৫-১০ বছর। বেতন-ভাতা না পাওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীরা অত্যন্ত কষ্টকর ও মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

তারা জানান, গত ১২ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল-কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ জারি করা হয়েছে। এই নীতিমালা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান অনুমতি ও স্বীকৃতির সময় আরোপিত শর্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। চলতি ২০১৮-১৯ বাজেটে নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য বরাদ্দের কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা নেই। যার ফলে নন-এমপিও শিক্ষক কর্মচারীরা অত্যন্ত হতাশ ও আশাহত হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় মহামান্য রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপে সারা দেশের নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একযোগে এমপিওভুক্তি হলে সকলেই সন্তুষ্ট চিত্তে বাড়ি ফিরে যাবে।

২০১০ সাল থেকে সব ধরনের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তি বন্ধ রয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads