• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
শিশুকে মায়ের দুধ দেওয়ার সূচকে অগ্রগতি নেই

শিশুকে মায়ের দুধ দেওয়া

সংরক্ষিত ছবি

জাতীয়

শিশুকে মায়ের দুধ দেওয়ার সূচকে অগ্রগতি নেই

  • হাসান শান্তনু
  • প্রকাশিত ০১ আগস্ট ২০১৮

দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে শিশুদের মায়ের দুধ পান করানোর প্রবণতা ও হার বাড়ছে। তবে বাংলাদেশে এ হার তেমন বাড়ছে না। সচেতনতা সৃষ্টিতে সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগের পরও সূচকে অগ্রগতি নেই। ফলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না, যার প্রভাব পড়েছে শিশুপুষ্টির ওপর। দেশে অপুষ্টির শিকার শিশুর সংখ্যাও বাড়ছে। মায়ের দুধের অভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা না বাড়ায় দেশে রোগাক্রান্ত শিশু ও শিশুমৃত্যু বাড়ছে। বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মায়েদের সচেতনতার অভাব, চাকরিজীবী মায়েদের কাজে ব্যস্ততা, অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে বাজারের কৌটার দুধে মায়েদের আসক্তি, শিশুর ‘বিকল্প খাদ্যের’ ব্যবসা বন্ধ করতে যথাযথ উদ্যোগের অভাব আর অনেক মায়ের ‘সৌন্দর্য চর্চার’ কারণে মাতৃদুগ্ধ পান করানোর হার বাড়ছে না। যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ হচ্ছে, যেকোনো দেশে মাতৃদুগ্ধ পান করানোর হার হওয়া উচিত ৯০ শতাংশ।

কর্মজীবী নারীর সংখ্যা বাড়তে থাকলেও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নেই ‘ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার’। এসব প্রতিষ্ঠানে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনের সরকারি ঘোষণা থাকলেও তা কার্যকর হচ্ছে না। ‘ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশন’-এর তথ্যমতে, ২০০৯, ২০১০, ২০১১ ও ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার গড়ে তুলতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেন। অনেক প্রতিষ্ঠানে নির্দেশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় মায়েরা শিশুদের সময়মতো দুধ খাওয়াতে পারেন না। ফলে নিশ্চিত হচ্ছে না শিশুর পুষ্টি।

এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস করার নির্দেশ আছে সরকারের। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, অধিকাংশ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস করা হয়নি। কিছু ব্যাংক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ গুটিকয়েক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস করা হলেও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই মাতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া হয় তিন-চার মাস। এমনকি অনেক প্রতিষ্ঠানে মাতৃত্বকালীন ছুটিই নেই বলে অভিযোগ আছে। এতে নবজাতক বঞ্চিত হয় মাতৃদুগ্ধ পানের সুযোগ থেকে।

এমন পরিস্থিতিতে আজ বুধবার শুরু হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে ‘বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ ২০১৮’। অন্যান্য বারের মতো এবারো বিভিন্ন আয়োজনে বাংলাদেশে পালন করা হবে সপ্তাহটি। এ বছর এর প্রতিপাদ্য ‘মায়ের দুধ পান সুস্থ জীবনের বুনিয়াদ’। এ উপলক্ষে শিশুর বুকের দুধ পান করার সুফল তুলে ধরে নানা ধরনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। আজ দুপুর ১২টায় ঢাকার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে সপ্তাহটির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

গত মে মাসে প্রকাশিত ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে নবজাতকদের মাত্র ৫১ শতাংশকে জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করা হয়। ছয় মাসের কম বয়সের ৫৫ শতাংশ শিশুকে শুধু বুকের দুধ খাওয়ানো হয়।’ তবে ওই প্রতিবেদনের সঙ্গে একমত নন ‘ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশন’ এর চেয়ারপারসন ডা. এসকে রায়। তিনি বলেন, ‘মায়ের দুধ পানের হার ৫৫ শতাংশের কথা বলা হলেও বাস্তবে তা আরো বেশি। এ হার আরো বাড়াতে হবে।’

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads