• শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪২৯
দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে বাড়ানোটা সময়ের দাবি

চাকরিতে ঢোকার বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে আন্দলনরত শীক্ষার্থীরা

সংরক্ষিত ছবি

জাতীয়

চাকরিতে ঢোকার বয়সসীমা

দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে বাড়ানোটা সময়ের দাবি

অনেক দেশে ঢোকার বয়স ৩৮-এর ওপর

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২০ ডিসেম্বর ২০১৮

ক্ষমতায় এলে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা তুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আর আওয়ামী লীগ বলছে, তারাও সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়াবে। তবে সেটি কত তা স্পষ্ট করা হয়নি দলটির নির্বাচনী ইশতেহারে। অপরদিকে বিএনপি বলছে, শর্ত সাপেক্ষে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময়সীমা বাড়ানো হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর এমন ঘোষণায় স্বপ্ন দেখছেন বেকাররা। তবে এ নিয়েও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।   

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের বেকার সমস্যা, শিক্ষা পদ্ধতি, চাকরির সুযোগ বিবেচনায় সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোটা সময়ের দাবি। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষিত বেকারদের একটি অংশ এ নিয়ে আন্দোলন করে আসছে। বর্তমান সরকার বয়সসীমা বাড়াতে ফাইল চালাচালি শুরু করে। তবে শেষ মুহূর্তে অদৃশ্য কারণে তা আটকে যায়।

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ালে কারো ক্ষতির আশঙ্কা নেই। বরং যারা সরকারি চাকরিতে নিজেদের মেধা প্রয়োগ করতে চান, তাদের বাড়তি সুযোগ তৈরি হবে। এটা দেশের জন্য কল্যাণের। আমেরিকা, দক্ষিণ আফ্রিকা, নেপালসহ বিশ্বের অনেক দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৮-এর ওপর। বাংলাদেশের চাকরিপ্রত্যাশীরা চান মাত্র ৩৫ বছর। পৃথবীর কোথাও কোথাও এটি আবার উন্মুক্ত।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমায় ভিন্নতা রয়েছে। উত্তর আমেরিকায় ৫৯ বছর বয়সেও একজন নাগরিক সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করতে পারেন। শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়ায় সরকারি চাকরিতে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ বছর। ভারতে এই বয়সসীমা ৩৫ বছর। ইতালি, কাতার ও তাইওয়ানেও একই বয়সসীমার মানুষ সরকারি চাকরিতে যোগ দিতে পারেন। কিন্তু বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়স ৩০ বছর। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩২ বছর।

অনেকে বলছেন, একটি সময় দেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৬০ বছরের নিচে। তখন চাকরি থেকে অবসরের সময় ছিল ৫৭ বছর। এখন সেই অবসরের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৯ বছর। আলোচনা চলছে অবসরের সময়সীমা আরো বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে। তাই প্রবেশের সময় বাড়ানোটা জরুরি। তাছাড়া শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়নেও এটি দরকার। আমাদের দেশে লেখাপড়ার ক্ষেত্রে আগে স্নাতক ছিল দুই বছরের। এখন হয়েছে তিন বছর। আগে স্নাতক (সম্মান) ছিল তিন বছরের কোর্স, এখন চার বছরের। আগে স্নাতকোত্তর শেষ করতে প্রয়োজন হতো চার বছর, এখন পাঁচ বছর। স্কুলিং এক বছর করে বাড়লেও চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়েনি। অন্যদিকে দেশে বেকারের সংখ্যা অনেক। তাই বেড়ে গেছে প্রতিযোগিতা।

এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ঘোষণায় সরকারের একজন যুগ্ম সচিব তার ফেসবুকে লিখেছেন, চাকরিতে বয়সসীমা না থাকলে ভালোই হয়। ৯২ বছর বয়সে পিয়নের চাকরির জন্য আবেদন করা যাবে। কী মজা।

তানভীর আহমেদ নামে একজন লিখেছেন, বয়সসীমা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভালো। এটি দিয়েই শুরু হোক। পরিস্থিতি বুঝে না হয় নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।

আওয়ামী লীগ বলছে, দলটি ফের ক্ষমতা পেলে তরুণরা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোয় তাদের প্রয়োজন এবং যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরির জন্য আবেদন করার আহ্বান জানাতে পারবে। ২০২৩ সাল নাগাদ অতিরিক্ত ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরির জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এই সময়ের মধ্যে নতুনভাবে ১ কোটি ১০ লাখ ৯০ হাজার মানুষ শ্রমশক্তিতে যুক্ত হবে।

অপরদিকে বিএনপি বলছে, তাদের দল ক্ষমতায় এলে প্রথম তিন বছরে সরকারি চাকরিতে ২ লাখ লোকের কর্মসংস্থান করা হবে। দুর্নীতিমুক্ত ব্যবস্থায় মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে এসব নিয়োগ দেওয়া হবে। আগামী ৫ বছরে ১ কোটি লোকের কর্মসংস্থান করতে চায় বিএনপি। শিক্ষিত বেকারদের এক বছর মেয়াদে ভাতা দেবে। আর শর্ত সাপেক্ষে তারা সরকারি চাকরিতে ঢোকার বয়সসীমা উন্মুক্ত করে দেবে।

একটি হিসাব বলছে, দেশে প্রতিবছর ২০ লাখ লোক কর্মসংস্থানের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। কিন্তু সরকারিভাবে গড়ে ২৫ হাজার লোকের চাকরি হচ্ছে। যার প্রায় ২ হাজার গেজেটেড প্রথম শ্রেণির চাকরি। আর ২৩ হাজার নন-গেজেটেড।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads