শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেছেন, বর্তমান সরকার ব্যবসাবান্ধব। শিল্পায়ন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে সরকারের নীতি ও সহায়তা অব্যাহত থাকবে। শিল্পায়নে বেসরকারি খাতের ভূমিকা মুখ্য। নতুন নতুন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেসরকারি খাত সরকারের ইশতেহার বাস্তবায়ন করতে পারে। গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশের (আইবিএফবি) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ব্যবসা সহজীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে। শিল্প খাতে বিরাজমান পুঞ্জীভূত সমস্যা রাতারাতি সমাধান সম্ভব নয়। পর্যায়ক্রমে এগুলোর বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ সময় আইবিএফবি দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প- ২০২১ ও ২০৪১, সরকারের ইশতেহার এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জনে সমন্বিত জাতীয় শিল্পনীতি প্রণয়নের তাগিদ দেয়। এ নীতিতে নতুন করে অগ্রাধিকার খাত চিহ্নিত করার মাধ্যমে রফতানি আয় বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। একে কাগজে সীমাবদ্ধ না রেখে আইনি রূপ দিতে হবে।
বৈঠকে আইবিএফবির নেতারা ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে কিছু প্রস্তাব দেন। তারা বলেন, বিনিয়োগের শর্ত শিথিল করতে হবে। শিল্প-কারখানা স্থাপনে ভিন্ন ভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তে শুধু শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনের ব্যবস্থা করতে হবে। এ লক্ষ্যে তারা শিল্প মন্ত্রণালয়ে একটি ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালুরও পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে শিল্প খাতে অর্থায়নের জন্য সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণের ব্যবস্থা করতে শিল্পমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
প্রতিনিধিদলের সদস্যরা আরো বলেন, নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঊর্ধ্বমুখী পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক অগ্রগতির মাধ্যমে সরকার ইতোমধ্যে বিরাট চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম হয়েছে। ফলে আগামীতে আমাদের দেশে বড় বড় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আসবে। বিনিয়োগ প্রসার এবং রুগ্ণ শিল্প পুনরুদ্ধারে অ্যাডভোকেসি ও গবেষণাসেবা প্রদানের আগ্রহ প্রকাশ করেন তারা। এ ছাড়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ সহায়ক নীতিমালা তৈরিরও পরামর্শ দেন।
বৈঠকে সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন রশীদ, সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান খান, পরিচালক মতিউর রহমান, লুৎফুন্নিসা সাউদিয়া খান, আলী আফজাল, মুস্তাফিজুর রহমান, মুজিবুর রহমান, আনোয়ার শহিদ, ইকবাল হোসেন, সাজেদুর সিরাজ, তৌহিদা সুলতানা, উৎপল কুমার দাস, অজয় সংকর পারিয়াল, মোহাম্মদ আলী দ্বীন, হেলাল আহমেদ চৌধুরী ও প্রীতি চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন।
দেশি পেইন্ট শিল্পের স্বার্থ রক্ষা হবে : দেশি পেইন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পের স্বার্থ সুরক্ষায় সরকার প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। মঙ্গলবার বাংলাদেশ পেইন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএমএ) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ কথা জানান। মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার দেশীয় শিল্প বিকাশের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আমদানিবিকল্প পণ্য উৎপাদনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। দেশে রঙের চাহিদা বাড়ায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার ক্ষেত্রে এ শিল্পে বিনিয়োগকারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
ক্রাফট কমপ্লেক্সের জন্য স্থান বরাদ্দের দাবি : দেশে উৎপাদিত হস্ত ও কারু শিল্পপণ্যের প্রদর্শন ও বিপণনের জন্য একটি ক্রাফট কমপ্লেক্স গড়ে তুলতে স্থান বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হস্ত শিল্প প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বাংলাক্রাফট)। সংগঠনটির নেতারা শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকে এ দাবি জানান। শিল্প মন্ত্রণালয়ে এ বৈঠক হয়।
