• রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪২৯
সারা দেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালিত

পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে রাষ্ট্রীয় শোক পালিত

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

সারা দেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালিত

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে গতকাল সোমবার সারা দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালিত হয়েছে। শোকের আবহে ছিল দেশের সব সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান।

দেশের সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, দফতর, অধিদফতর, পরিদফতরে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও বুকে ধারণ করেন শোকের কালো ব্যাজ। পাশাপাশি সারা দেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও শোক পালন করা হয়েছে।

গতকাল রাষ্ট্রীয় শোকের অংশ হিসেবে সুপ্রিম কোর্ট, সচিবালয়সহ সব সরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত দেখা যায়। সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ঘুরে দেখা গেছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকেই কালো ব্যাজ পরে অফিস করছেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ভবনের (১ নম্বর ভবন) ওপর উড়ছে অর্ধনমিত জাতীয় পতাকা। এছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, তথ্য অধিদফতর ঘুরে দেখা গেছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বুকে কালো ব্যাজ রয়েছে।

শোক জানাতে অনেকেই চুড়িহাট্টার সেই ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও সহমর্মিতা প্রকাশ করেন তারা। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে বাবার হাত ধরে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় এসেছিল ছোট্ট জারা হায়াত খান। রাষ্ট্রীয় শোকের দিনে চুড়িহাট্টার রাস্তায় পড়ে থাকা পোড়া একটি গাড়ির গায়ে সে পুঁতে দিয়ে গেছে কালো পতাকা।

রাজধানীর পাইকারি পণ্যের বাজার চকবাজারে নিয়মিত যাতায়াত ছিল জারার বাবা কেএম শাহ নেওয়াজের। চকবাজার থেকে প্রসাধন সামগ্রী কিনে চিটাগং রোডের দোকানে বিক্রি করতেন তিনি। স্ত্রী আর মেয়েকে নিয়ে গতকাল সকালে তিনি চুড়িহাট্টায় আসেন শোক জানাতে।

তিনি বলেন, যেদিন ঘটনাটা ঘটল, সেদিনও আমি চকবাজারে এসেছিলাম ব্যবসার কাজে। আমরা খুব কষ্ট পাচ্ছি। রাষ্ট্রীয় শোকের দিন তাই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসেছি।

জারার মা জাহানারা বলেন, সাত বছর বয়সী জারা সিদ্ধিরগঞ্জের একটি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। ও হয়তো এখনো শোক ব্যাপারটা সেভাবে বোঝে না। কিন্তু বড় হয়ে নিশ্চয় বুঝতে পারবে। সেজন্যই জারাকে এখানে নিয়ে এসেছি।

গত বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে ৬৭ জন নিহত হন। আহত হন অর্ধশতাধিক। এখনো বেশ কয়েকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের প্রতি গভীর শোক জানিয়ে গত রোববার জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। এ দিনের কার্যক্রমের শুরুতেই স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী শোক প্রস্তাবটি উপস্থাপন করে বলেন- চকবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে যারা নিহত হয়েছেন তাদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। তাদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। এ ঘটনায় যারা আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন, তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। এরপর শোক প্রস্তাবটি সংসদ সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

রাষ্ট্রীয় শোক পালনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে গত রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে আদেশ জারি করা হয়। এতে বলা হয়, চকবাজারের নন্দকুমার দত্ত রোড ও চুড়িহাট্টা শাহী জামে মসজিদ রোড এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিদুর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে নিহতদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা প্রকাশের লক্ষ্যে ২৫ ফেব্রুয়ারি এক দিনের শোক পালিত হবে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads