• সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪২৯
গোপালগঞ্জে ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল নির্মাণেও দুর্নীতি

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

গোপালগঞ্জে ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল নির্মাণেও দুর্নীতি

গণপূর্তের দুর্নীতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

গণপূর্ত অধিদপ্তরের ২০১১-১২ অর্থবছরের আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় সংসদের সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মস্থান গোপালগঞ্জ জেলায় একটি প্রতিষ্ঠান নির্মাণে ১ কোটি ৮০ লাখ ৪১ হাজার ৯৬৫ টাকার দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে বলেও জানিয়েছে ওই কমিটি। গতকাল রোববার জাতীয় সংসদ ভবনের কেবিনেট কক্ষে কমিটির ১২তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে চলমান প্রকল্পে যাতে দুর্নীতি না হয়, সেজন্যও সতর্ক করা হয়েছে।

বৈঠকে পূর্ত অডিট অধিদপ্তরের দেওয়া গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন গণপূর্ত অধিদপ্তরের ২০১১-১২ অর্থবছরের হিসাব সম্পর্কিত বাংলাদেশের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের বার্ষিক অডিট রিপোর্ট ২০১২-১৩-এ অন্তর্ভুক্ত সাতটি অডিট আপত্তির ওপর বিস্তারিত আলোচনা-পর্যালোচনা হয়। একই সঙ্গে দুটি আপত্তি নিষ্পত্তির বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া অনিষ্পন্ন আপত্তিগুলোর ক্ষেত্রে আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিধি মোতাবেক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া, দ্রুততার সঙ্গে ক্ষতিপূরণ আদায় এবং ভবিষ্যতে প্রাক্কলন তৈরি ও চুক্তি সম্পাদন তথা সামগ্রিক কার্য সম্পাদনে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বনের সিদ্ধান্ত দেন সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মস্থান গোপালগঞ্জ জেলায় একটি প্রতিষ্ঠান নির্মাণে ১ কোটি ৮০ লাখ ৪১ হাজার ৯৬৫ টাকার দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে চক্ষু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের আওতায় চারতলা ভবন নির্মাণে এ দুর্নীতির তথ্য সংসদীয় কমিটিতে উত্থাপিত হলে ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করা হয়। এ অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির জন্য মন্ত্রণালয় ও প্রধান প্রকৌশলী সুপারিশ করলেও অডিট বিভাগ নারাজি দিয়েছে। ২০১১-১২ আর্থিক বছরের নিরীক্ষায় এ দুর্নীতি ধরা পড়ে।

এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. রুস্তম আলী ফরাজী গণমাধ্যমকে জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মস্থান গোপালগঞ্জ জেলায় প্রতিষ্ঠান নির্মাণও দুর্নীতির বাইরে নয়। এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জেলা। প্রধানমন্ত্রীর মায়ের নামে প্রতিষ্ঠান। দুর্নীতিবাজদের লজ্জা থাকা উচিত। এ জন্য কমিটি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

তিনি আরো বলেন, চলমান প্রকল্পগুলোতে যেন দুর্নীতি না হয়, সেজন্য টেন্ডার প্রক্রিয়ায় শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ যেন উজ্জ্বল হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।

বৈঠকে উত্থাপিত কার্যপত্র থেকে জানা যায়, শেখ হাসিনার মাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের নার্সদের জন্য ইউনিটের ৮০০ বর্গফুটের কোয়াটার নির্মাণকাজে দ্বিতীয় দরপত্রদাতাকে রেস্পন্সিভ করে প্রথম দর দাখিলকারীকে সংশোধন করে দ্বিতীয় নিম্নদর অপেক্ষা উচ্চ মূল্যে চুক্তি সম্পাদন করা হয়েছে। এতে সরকারের ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ৮০ লাখ ৪১ হাজার ৯৬৫ টাকা।

নিরীক্ষায় দেখা যায়, বর্ণিত কাজে মো. আবদুল খালেক ৮ কোটি ৬৪ লাখ ৩৫ হাজার ৪২ টাকা সর্বনিম্ন দরদাতা ছিলেন। দ্বিতীয় দরদাতা ইহা ডেল্টা অ্যান্ড বেনজির কনস্ট্রাকশনের দরপত্র মূল্য ৯ কোটি ৭৯ লাখ ৬৩ হাজার ৮০ টাকা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ অনিয়মিতভাবে দ্বিতীয় দরপত্র নন রেস্পন্সিভ করে দরপত্রের মূল্য সংশোধন করে উচ্চ দরে মোহাম্মদ আবদুল খালেকের সঙ্গে ১০ কোটি ৬৪ লাখ ৭৭ হাজার ৭ টাকা চুক্তি সম্পাদন করে। তবে দরপত্রসমূহ নিরীক্ষায় তা উপস্থাপন হয়নি।

নিরীক্ষার সুপারিশে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ দায়-দায়িত্ব নির্ধারণপূর্বক সংশ্লিষ্টদের নিকট থেকে এ টাকা আদায় করা প্রয়োজন।

ওই বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন- কমিটির সদস্য আবুল কালাম আজাদ, মো. আফছারুল আমীন, মো. শহীদুজ্জামান সরকার, জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন, আহসানুল ইসলাম টিটু, মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, ওয়াসিকা আয়েশা খান, মো. জাহিদুর রহমান প্রমুখ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads