• শনিবার, ৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪২৯
নির্ধারিত সময়েই ভর্তি পরীক্ষা

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

আন্দোলন কর্মসূচি শিথিল

নির্ধারিত সময়েই ভর্তি পরীক্ষা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৩ অক্টোবর ২০১৯

পাঁচ দফা দাবি পূরণ করায় ৪৮ ঘণ্টার জন্য আন্দোলন কর্মসূচি শিথিল করেছেন বুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা নির্বিঘ্ন করতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে আগামীকাল সোমবার (১৪ অক্টোবর) বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে বুয়েটের শহীদ মিনারের সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

এদিকে বুয়েটে হলে হলে উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি হলের তিনটি কক্ষ সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। অবৈধ ও বহিরাগতদের হল ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শনিবার বিকালে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ৩০১২ নম্বর কক্ষটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। এ কক্ষে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাসেল থাকতেন। এর আগে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জামি-উস সানি ও বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাসেলের অফিস কক্ষ সিলগালা করা হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রশাসন ইতোমধ্যে আমাদের পাঁচ দফা দাবি মেনে নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছে। এটা আমাদের প্রাথমিক বিজয়। তাই আমরা ১৩ ও ১৪ অক্টোবরের জন্য আন্দোলন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি এ সময়ের মধ্যেই বাকি দাবিগুলো মেনে নেবে। আমরা চাই ভর্তি পরীক্ষা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হোক। পরীক্ষা বানচালের দায় আমরা নিতে চাই না। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। ভিসি স্যারকেও ধন্যবাদ।

দাবি বাস্তবায়ন শুরু হওয়ায় আন্দোলন আপাতত শিথিল। পাশাপাশি পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আসলে পাঁচ দফার অগ্রগতি হয়েছে। তবে আমাদের ১০ দফার আন্দোলন চলবে। অবৈধ সিট দখলকারীদের উৎখাত করা শুরু হয়েছে। সিসিটিভি লাগছে।

এর আগে আবরার ফাহাদ হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও দাবি আদায়ে বুয়েট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সকাল থেকেই জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন মেনে নেওয়া পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো-হত্যাকারীদের বুয়েট থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এ মর্মে নোটিশ প্রদান, সাংগঠনিক রাজনীতি নিষিদ্ধের জন্য অবৈধ ছাত্রদের সিট বাতিল করা, সাংগঠনিক অফিস সিলগালা করা, ফাহাদের মামলার খরচ বহনসংক্রান্ত নোটিশ দেওয়া ও ভিন্নমত দমানোর নামে নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করা এবং এ ধরনের ঘটনা প্রকাশে একটি কমন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে সব হলের সিসিটিভির ফুটেজে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা। এদিকে বুয়েট হলে হলে উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি হলের তিনটি কক্ষ সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। অবৈধ ও বহিরাগতদের হল ছেড়ে চলে যেতে নির্দেশনা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শনিবার বিকালে শেরেবাংলা হলের বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাসেল কক্ষটি (৩০১২)  সিলগালা করে দেওয়া হয়।

এর আগে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জামি-উস সানির কক্ষ ও বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাসেলের অফিস কক্ষ সিলগালা করা হয়। বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, আমরা আহসান উল্লাহ হলের দুটি এবং শেরে বাংলা হলে একটি কক্ষ সিলগালা করেছি। অবৈধ ও বহিরাগতরা হল ছেড়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। যারা এখনো যায়নি, তাদের আবারো হল ছেড়ে চলে যাওয়ার তাগাদা দেওয়া হবে। তাদের আগামীকাল (আজ) দুপুর ১২টার মধ্যে অবশ্যই হল ছেড়ে চলে যেতে হবে। শনিবার সকাল থেকে হলে হলে অভিযান শুরু হয়। প্রশাসনের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার বুয়েট প্রশাসন থেকে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারির পর এ অভিযান শুরু হয়।

উল্লেখ্য, ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে আবরার ফাহাদকে গত ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরে বাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার সিঁড়ির করিডর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরদিন ৭ অক্টোবর দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। লাশের ময়নাতদন্ত করা ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, ছেলেটিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরদিন সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ। আবরার হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনে নামেন। এরপর গত শুক্রবার বুয়েট অডিটরিয়ামে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। তিনি সে সময় ঘোষণা দেন, বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি থাকবে না। একই সঙ্গে অভিযুক্ত ১৯ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের ঘোষণা দেন। এছাড়া আবরারের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, মামলার খরচ বুয়েট কর্তৃপক্ষ বহন, বিচারকাজ দ্রুত শেষ করতে সরকারকে চিঠি দেওয়াসহ বুয়েটে র্যাগিং বন্ধেরও ঘোষণা দেন উপাচার্য।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads