• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জৈষ্ঠ ১৪২৯

জাতীয়

তনু-মিতু হত্যারও বিচার চান নারীনেত্রীরা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৫ অক্টোবর ২০১৯

নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডের রায় প্রকাশের পরে নারী অধিকারকর্মীরা স্বস্তি প্রকাশ করে বলেছেন, হত্যাসহ নারীর বিরুদ্ধে সব ধরনের সহিংসতার ঘটনার দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হোক। পাশাপাশি তিন বছর আগে সোহাগী জাহান তনু ও মাহমুদা আক্তার মিতুসহ অপর হত্যাকাণ্ডগুলোর বিলম্বিত বিচার দ্রুত করারও দাবি জানান তারা।

তারা বলেন, চূড়ান্ত বিচার নিশ্চিত করতে উচ্চ আদালতে ডেথ রেফারেন্স ও রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের এই সাজা যাতে বহাল থাকে সে বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষকে সতর্ক থাকতে হবে। নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু বলেন, পরিকল্পিতভাবে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের পর অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে গণবিক্ষোভের চাপের কারণেই এত দ্রুত বিচার হয়েছে এবং এতে জড়িত রাজনৈতিক নেতারাও রক্ষা পাননি। নুসরাত আর ফিরে আসবে না- এটা সত্য। কিন্তু অন্তত বিচারটা যে হলো এটাই স্বস্তির। এরকম আরো অপরাধ আছে সেগুলোরও তদন্ত ও বিচার হওয়া দরকার- তনু হত্যা মিতু হত্যার। প্রতিটিতেই মানুষের জীবনহানি হচ্ছে। প্রতিটি হত্যার দ্রুত বিচার হতে হবে। না হলে এভাবে চলতেই থাকবে।

নাসিমুন আরা বলেন, উচ্চ আদালতেও নুসরাতের হত্যাকারীদের শাস্তি যেন বহাল থাকে, যেন অপরাধীরা রেহাই না পায়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমনের জন্য কঠোরভাবে শাস্তি নিশ্চিত করা দরকার।

মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির বলেন, আসামিরা যেভাবে নুসরাতকে হত্যা করেছে তাতে ১৬ জনই সর্বোচ্চ শাস্তি পাওয়ার যোগ্য। হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলেও নিম্ন আদালতের রায়টি যেন বহাল থাকে সেজন্য সচেতন থাকতে হবে। রায়ের পর আমাদের হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। আসামিরা উচ্চ আদালতে আসবে। আমাদের প্রত্যেকটি জায়গা থেকে, প্রতিটি স্তর থেকে সচেতন থাকতে হবে।

নুসরাত হত্যাকাণ্ডের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মানবাধিকারকর্মী সংসদ সদস্য আরমা দত্ত বলেন, এই রায় নারী নির্যাতনের একটি ঐতিহাসিক রায়; এর জন্য বিচার বিভাগকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। এটি বর্তমান সময়কালের শ্রেষ্ঠ বিচার হয়েছে। এই বিচারের জন্য হয়তো লাখ লাখ মেয়ের জীবন বেঁচে যাবে। যেসব পুরুষ মনে করেন মেয়েরা ভোগের পাত্র, তাদের সঙ্গে যা খুশি করে ফেলা যাবে, পার পাওয়া যাবে তাদের জন্য একটা সতর্ক বার্তা। সারা বিশ্ব এই রায়কে রেফারেন্স হিসেবে নিতে পারবে।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সহসভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, সব ধরনের হত্যার রায় যেন এভাবে হয়। যেহেতু এখানে আরো আপিলের প্রক্রিয়া বাকি আছে, সেখানেও যেন এভাবে দ্রুত রায় আসে সেটাই আমরা আশা করি।

কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, এ রায় তো ফ্যান্টাস্টিক! নারী নির্যাতনে দুর্যোগের মুহূর্তে এ রায় দৃষ্টান্তমূলক।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরের একটি ঝোপ থেকে কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর (১৯) লাশ উদ্ধার করা হয়। তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ হয়। সেনানিবাসের মতো সুরক্ষিত জায়গায় কীভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকে। থানা পুলিশ হয়ে সিআইডি এর তদন্ত করে।

একই বছর ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় খুন হন চট্টগ্রামে বিভিন্ন জঙ্গিবিরোধী অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু।

দুই হত্যাকাণ্ডের তিন বছর পেরিয়ে গেলেও পুলিশ মামলার অভিযোগপত্র দিতে না পারায় শুরু হয়নি বিচার। এর মধ্যে তনু হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে বিক্ষোভও হয়েছে। তবুও এ ঘটনায় এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads