• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

প্রথম মাসে টিকা দেওয়া হবে ৩৫ লাখ মানুষকে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম জানিয়েছেন, করোনার গণটিকাদান পরিকল্পনায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। টিকা দেওয়ার হার প্রথম মাসে পূর্বঘোষণার অর্ধেকে নামিয়ে আনা হচ্ছে। ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে টিকাদান শুরু করে প্রথম মাসে ৬০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার কাজ চলছিল। কিন্তু এখন মাসে ৩৫ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের সব জেলায় টিকা পৌঁছেছে।

খুরশীদ আলম গতকাল বৃহস্পতিবার বলেন, গত বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে টিকা বিতরণ সম্পর্কিত একটি বৈঠক হয়েছে। বৈঠক থেকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানোর পর পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক সরবরাহ পরিস্থিতিও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। যদি কোনো কারণে সাপ্লাই চেইন অব্যাহত রাখতে না পারি, তাহলে টোটাল ব্যবস্থাপনা ভেস্তে যাবে। সেজন্য আমরা হাতে থাকা টিকা অর্ধেক করে পুরোপুরি কমপ্লিট ডোজ দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রথম ডোজ দেওয়ার চার থেকে বারো সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যায়। সিদ্ধান্ত হয়েছে, ৩৫ লাখ মানুষকে প্রথম ডোজ দেওয়ার পর দ্রুত দ্বিতীয় ডোজ দিয়ে দেওয়া হবে। ৭০ লাখ টিকার অর্ধেক দিয়ে বাকি অর্ধেক রেখে এক মাস পর দেব। এতে অন্তত ৩৫ লাখ লোককে আমরা কমপ্লিট ভ্যাকসিনেশনে আনব। একটা নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে আমরা সুরক্ষিত করে দিই। প্রথম ডোজ দিলাম, কিন্তু দ্বিতীয় ডোজ যদি পেতে দেরি হয়, তাহলে পুরো বিষয়টি নষ্ট হয়ে যাবে। এর মধ্যে যদি আমাদের দ্বিতীয় লট চলে আসে, তাহলে আগের পরিকল্পনায় চলে যাব।

টিকা পাওয়া নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে কি না জানতে চাইলে ডা. খুরশীদ বলেন, টিকা নিয়ে সারা বিশ্বে অত্যন্ত ক্রুশিয়াল পলিটিক্স চলছে। ইউরোপের কয়েকটি দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সবারই টিকা দরকার। দেশের চাহিদা যদি না মেটাতে পারে, তাহলে সরকার তো অনুমতি দেবে না রপ্তানির। আমরা এ আশঙ্কাটা করছি। যদিও বেক্সিমকো আমাদের এখন পর্যন্ত বলছে সঠিক সময়েই তারা টিকা দেবে। তারপরও আমরা সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করছি।

বাংলাদেশে দেওয়া হচ্ছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা। প্রত্যেককে এই টিকার দুটি ডোজ দিতে হবে। ইতোমধ্যে সরকারের কেনা ৫০ লাখ ডোজ এবং উপহার হিসেবে ভারতের পাঠানো ২০ লাখ ডোজ টিকা দেশে এসেছে। অর্থাৎ এখন সরকারের হাতে আছে ৭০ লাখ ডোজ টিকা।

সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে সরকারের করা চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে আগামী জুনের মধ্যে বাকি আড়াই কোটি ডোজ টিকা দেশে পৌঁছানোর কথা। এ ছাড়া চলতি বছরের প্রথমার্ধে কোভ্যাক্স থেকে আরো সোয়া এক কোটি ডোজ টিকা পাওয়ার কথা বাংলাদেশের। সেটাও সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ডের টিকা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নেতৃত্বাধীন এই প্ল্যাটফরম। চলতি মাসের শেষের দিকে এ ভ্যাকসিন আসা শুরু হতে পারে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে।

গত বুধবার বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন বণ্টনের তালিকা প্রকাশ করেছে কোভ্যাক্স। এতে বলা হয়েছে, জুনের শেষ নাগাদ বাংলাদেশ ১ কোটি ২৭ লাখ ৯২ হাজার ডোজ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন পেতে যাচ্ছে। এ ছাড়া ভারতকে ৯ কোটি ৭২ লাখ, পাকিস্তানকে ১ কোটি ৭২ লাখ, নাইজেরিয়াকে ১ কোটি ৬ লাখ, ইন্দোনেশিয়াকে ১ কোটি ৩৭ লাখ ও ব্রাজিলকে ১ কোটি ৬ লাখসহ বিভিন্ন দেশকে বিভিন্ন পরিমাণে ভ্যাকসিন দেবে কোভ্যাক্স। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস বা গ্যাভি এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনসের গড়া প্ল্যাটফরম হলো কোভ্যাক্স, যা বিশ্বের সব মানুষের সংক্রামক রোগের প্রতিষেধক পাওয়া নিশ্চিত করতে গঠিত হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads