• রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪২৯
মুক্তিযুদ্ধে জিয়া ছিলেন বদলি দপ্তরি: তথ্যমন্ত্রী

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

মুক্তিযুদ্ধে জিয়া ছিলেন বদলি দপ্তরি: তথ্যমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৮ মার্চ ২০২১

বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে জিয়ার ভূমিকা ছিল ‘বদলি দপ্তরির’ মতো। গতকাল বুধবার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কৃষক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, আজকের ইতিহাস বিকৃত করা হয়। আজকে খলনায়ককে নায়ক বানানোর চেষ্টা করা হয়। স্কুলের দপ্তরিকে স্কুলের হেডমাস্টার বানানোর চেষ্টা করা হয়। আমি আগেও বলেছি আজকেও বলব, যেকোনো স্কুল ছুটির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে হেডমাস্টার। স্কুলের ঘণ্টা বাজায় দপ্তরি। জিয়াউর রহমান ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সময় বদলি দপ্তরি।

জিয়া কীভাবে বদলি দপ্তরি তার ব্যাখ্যাও তুলে ধরেন হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা করার পর, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা ২৬ মার্চ সকাল থেকে তৎকালীন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান, চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে বারবার ঘোষণা করেছিলেন। জিয়াউর রহমান ২৭ মার্চ তারিখ স্বাধীনতার পক্ষে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা পাঠ করে শোনান। তাহলে ২৬ তারিখ যেহেতু একবার ঘণ্টা (স্বাধীনতার ঘোষণাকারী) বেজে গেছে, ২৭ তারিখ যে ঘণ্টা বাজায় সে হলো বদলি দপ্তরি।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, তখন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের বেয়ারার ছিলেন নুরুল হক। ২০০৫ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর আগে তার যে ভিডিও সে বক্তব্য আমরা ধারণ করে রেখেছি, এটি সংরক্ষিত আছে। যখন চট্টগ্রাম শহরে হত্যাযজ্ঞ চলছে, তখন জীবনকে হাতে নিয়ে নুরুল হক বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা রিকশায় করে মাইকিং করেছেন। চট্টগ্রাম শহরে শুনিয়েছেন।

স্মৃতিচারণ করে হাছান মাহমুদ বলেন, সে সময় আমি অনেক ছোট ছিলাম। তবে সে সময়ের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি এখনো আমার মধ্যে জ্বলজ্বল করে। বঙ্গবন্ধু গ্রেপ্তার হওয়ার পূর্বে ২৫ মার্চ রাতে স্বাধীনতার ঘোষণা করে গিয়েছেন, যা পৃথিবীর অনেক পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। নিউইয়র্ক, লন্ডন, জাপান, অস্ট্রেলিয়ার পত্রিকায়। এমনকি পাকিস্তানের পত্রিকায়ও ছাপানো হয়।

বিএনপিকে ইতিহাস মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি আশা করেছিলাম, আজকে বিএনপি বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন করবে। বিএনপিকে বলব, ইতিহাসকে মেনে নিন। ইতিহাসকে মেনে না নিলে, ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না।

বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি কিন্তু বিএনপি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য আমাদের একটিবার ধন্যবাদ জানাতে পারেননি। বিএনপিকে উদ্দেশ করে হাছান মাহমুদ বলেন, আমি জানি আপনাদের খুব লজ্জা বঙ্গবন্ধুর কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। আপনাদের যদি সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে লজ্জা লাগে আপনারা তো জাতিকে একটি ধন্যবাদ দিতে পারতেন। সেটি দিতেও আপনারা ব্যর্থ হয়েছেন। আমি আহ্বান জানাব, বিএনপিসহ যারা মানুষকে বিভ্রান্ত করেন এই পথ পরিহার করুন। আপনারা সরকারের সমালোচনা করুন। আমরাও চাই সমালোচনা হোক। একটি বহুমাত্রিক সমাজে আমরা বসবাস করি। সেই জন্য সমালোচনা যেন অন্ধ কিংবা বোবাদের মতো সমালোচনা যেন না হয়।

তিনি বলেন, রাজনীতিবিদদের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণকে আশার আলো দেখানো। জনগণকে ক্রমাগত হতাশ করা কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা রাজনীতিবিদের দায়িত্ব নয়। আমাদের দেশে আরো কিছু লোক আছে আমি তাদের নাম দিয়েছি ভুল ধরা পার্টি। তাদের কাজই হচ্ছে কোনো জায়গায় কোনো অর্জন হলে ভুল ধরা। এই যে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হলাম, এটিতে কী অসুবিধা হবে, এটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে তারা ব্যস্ত।

তিনি আরো বলেন, জাতির অর্জন তাদের পছন্দ নয়। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এটি তাদের পছন্দ নয়। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এটি পাকিস্তানিদেরও পছন্দ নয়। পাকিস্তান আজকে হা-হুতাশ করছে বাংলাদেশ আমাদের পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে গেল। সুতরাং পাকিস্তানিদের সঙ্গে বিএনপির অনেক মিল আছে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ্র চন্দ। এ সময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতিসহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads