• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জৈষ্ঠ ১৪২৯
চিরচেনা রূপে ফিরল ঢাকা 

ছবি: বাংলাদেশের খবর

জাতীয়

চিরচেনা রূপে ফিরল ঢাকা 

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৭ মে ২০২১

মহামারী ঠেকাতে ‘সর্বাত্মক লকডাউনে’ টানা ২২ দিন বন্ধ থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার মহানগর ও জেলার মধ্যে গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে রাজধানীতে চিরচেনা যানজটের রূপ ফিরে এসেছে। যদিও সড়কে বাসের সংখ্যা খুব বেশি ছিল না। তবে ব্যক্তিগত পরিবহনসহ অন্যান্য যানবাহনের সঙ্গে বাস যোগ হওয়ায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করা বাসগুলোতে যাত্রী সংখ্যা ছিল কম। এখান থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলোতে চালক, হেলপার এবং যাত্রীদের মুখে মাস্ক দেখা গেছে। শিয়া মসজিদ-বনশ্রী রুটের আলিফ পরিবহন বাসের চালক আবদুল্লাহ বলেন, যাত্রী অহনও কম। আমাগো মাস্ক ছাড়া মানুষ উডাইতে মানা করছে। আমরা উডাইতেছি না। সেনিটাইজারও রাখছি।

দীপন পরিবহনের চালক মোশারফ বলেন, লকডাউনের কারণে পরিবার নিয়ে চলতে অনেক সমস্যা হচ্ছিল। এখন আমরা বাস চালানোর সুযোগ পেয়েছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা যাত্রী পরিবহন করছি এবং করব। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী দুই সিটে একজন করে যাত্রী দেখা গেছে বেশ কয়েকটি বাসে। সকাল থেকে যাত্রীর চাপ কিছুটা কম থাকায় পরিবহনের চালক ও হেলপাররা অতিরিক্ত যাত্রী ওঠানোর সুযোগ পায়নি।

গণপরিবহন চালুর প্রথম দিনে আজিমপুর থেকে ঠিকানা পরিবহন, দেওয়ান পরিবহন ও ভিআইপি পরিবহনসহ কয়েকটি বাস সকাল থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে। দেওয়ান পরিবহনের চালক আলাউদ্দিন বলেন, যাত্রী অনেক কম। তবে অর্ধেকের বেশি আসনে আমরা যাত্রী উঠাচ্ছি না এবং স্বাস্থ্যবিধি মানছি।

মহাখালীর আমতলী থেকে তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড়ের দূরত্ব মাত্র দেড় কিলোমিটার। যানজটের কারণে বাসে যেতে সময় লেগেছে প্রায় ৩০ মিনিট। একইভাবে সাতরাস্তা থেকে বনানী পর্যন্ত সড়কেও বেশ যানজট দেখা গেছে।

সদরঘাটগামী স্কাইলাইন পরিবহনের চালক মাসুদ জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাসের অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখেই তারা যাত্রী পরিবহন করছেন। তবে সড়কে আগের মতোই যানজট।

সমন্বিত পরিকল্পনা ছাড়া এ যানজট থেকে উত্তরণের পথ নেই। নগর পরিকল্পনাবিদ ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা এমনটাই মনে করেন।

ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের মতে, ঢাকার ট্রাফিক-ব্যবস্থা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তাই যানজট সমস্যার স্বল্পমেয়াদি কোনো সমাধান নেই। দীর্ঘমেয়াদি ও সমন্বিত পরিকল্পনা এবং নীতিগত সিদ্ধান্ত ও এর বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ সমস্যার কিছুটা সমাধান সম্ভব। তারই অংশ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা গণপরিবহন-ব্যবস্থাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন।

নগর পরিকল্পনাবিদেরা বলছেন, রাজধানীতে যানজটের অন্যতম প্রধান কারণ ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি (প্রাইভেট কার)। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে ২ লাখ ১৩ হাজার ৪৮৯টি কার চলাচল করে। অথচ গণপরিবহন হিসেবে বিবেচিত বাসের সংখ্যা ২২ হাজার ৮১৪ এবং মিনিবাসের সংখ্যা ৯ হাজার ৯৯৫।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনে গত ১৪ এপ্রিল থেকে গণপরিবহন বন্ধ ছিল। টানা বিধিনিষেধ (লকডাউন) শেষে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে অর্ধেক যাত্রী এবং ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়ায় গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়। তবে আন্তঃজেলা বাস চালু হচ্ছে না এখনই। আগামী ১৬ মে মধ্যরাত পর্যন্ত বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়িয়ে বুধবার (৫ মে) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, শুধু জেলার গাড়ি জেলার মধ্যেই চলাচল করতে পারবে। আন্তঃজেলা বাসের পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে যাত্রীবাহী ট্রেন ও নৌযানও।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads