• বুধবার, ৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪২৯
সরকারি কর্মকর্তাদের স্যার বলার রীতি নেই : জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী

ফাইল ছবি

জাতীয়

সরকারি কর্মকর্তাদের স্যার বলার রীতি নেই : জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

সরকারি কর্মকর্তাদের স্যার বা ম্যাডাম বলতে হবে এমন কোনো রীতি নেই বলে জা‌নি‌য়ে‌ছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হো‌সেন। তি‌নি ব‌লেন, স্যার শব্দের বাংলা অর্থ মহোদয়, আর ম্যাডাম শব্দের অর্থ মহোদয়া। রুলস অব বিজনেসে এটা নেই। জনগ‌ণের সঙ্গে দুর্ব‌্যবহার করা যা‌বে না। দুর্ব‌্যবহারও একপ্রকার দুর্নী‌তি। সরকা‌রি কর্মকর্তা‌দের ম‌নে রাখ‌তে হ‌বে তারা জনগ‌ণের সেবক।

গতকাল মঙ্গলবার স‌চিবাল‌য়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলা‌দেশ সে‌ক্রেটা‌রি‌য়েট রি‌পোর্টার্স ফোরাম আ‌য়ো‌জিত সংলা‌প অনুষ্ঠা‌নে সাংবা‌দিক‌দের তি‌নি এ কথা বলেন।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কীভাবে কাজ করতে হবে-সে বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা তুলে ধরে ফরহাদ হো‌সেন বলেন, জাতির পিতার নির্দেশনা ছিল যারা সেবা নিতে আসেন তাদের দিকে তাকাও, তারা তোমার বাবার মতো, ভাইয়ের মতো, আত্মীয়ের মতো। সেবা নিতে আসে জনগণ। তাদের টাকায় তোমাদের বেতন হয়।

বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা আমরা বাস্তবায়ন করতে চাই জা‌নি‌য়ে প্রতিমন্ত্রী ব‌লেন, জনগণের সঙ্গে মিশে যেতে হবে। বিভাগীয় কমিশনার থেকে মাঠ প্রশাসনকে আমরা সেই নির্দেশনা দেই। জনগণের সঙ্গে মিশে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে এখানে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। হাসিমুখের আচরণ খুব ইম্পটেন্ট। দুর্ব্যবহার দুর্নীতির শামিল, এটা কখনো করা যাবে না। আইনের মধ্যে থেকে সাধ্যমতো সেবা দেওয়ার আচরণ থাকতে হবে।

দেশে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩২ মাসে প্রশাসনে এক লাখ ৪০ হাজার ৮৬০টি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থা ও মন্ত্রণালয়ে ব্যাপকভাবে পদ সৃজন করেছি। পদ সৃজনের কাজটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় করে থাকে। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে গত ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমরা প্রশাসনে এক লাখ ৪০ হাজার ৮৬০টি পদ সৃজন করেছি। নিয়োগের জন্য ৭ হাজার ৯৪৮টি পদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। চার হাজার ৭২৬টি যানবাহন টিও অ্যান্ড ই-তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ৪৮ হাজার ৫১০টি পদ বিলোপে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্মতি দিয়েছে।

 

ফরহাদ হোসেন বলেন, এই সময়ে ৩৭তম বিসিএসের মাধ্যমে এক হাজার ৪৯টি, ৩৮তম বিসিএসের মাধ্যমে দুই হাজার ৩৪টি ও ৩৯তম বিসিএসের মাধ্যমে ছয় হাজার ৭২৭টিসহ মোট ১০ হাজার ১১০টি পদে ক্যাডার কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে গত ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ক্যাডার সার্ভিসের পাঁচ হাজার ৭৪৪ জনকে দেশে ও ৪৭৭ জন কর্মকর্তাকে বিদেশে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিসিএস প্রশাসন একাডেমির প্রশিক্ষণ মডিউল যুগোপযোগী করেছি।

তিনি আরো বলেন, ডিজিটালাইজেশনের সুবিধা ব্যবহার করে দ্রুত কাজ করার জন্য ১৯টি সফটওয়্যার প্রস্তুত করা হচ্ছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ৮০৩টি আইন ও বিধিবিধানের বিষয়ে বিধিগত মতামত প্রদান করেছি ও ৪৮৪টি নিয়োগবিধি প্রবিধানের সংশোধনও করা হয়েছে এই সময়ের মধ্যে।

ফরহান হোসেন বলেন, সাধারণ মানুষকে তার প্রাপ্য সম্মান-মর্যাদা দিয়ে তাদের সেবক হিসেবে কাজ করবে-এই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি। সেজন্য আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে আমরা যুগোপযোগী পদায়ন নীতিমালা তৈরি করতে চাই। আমরা দক্ষ, জবাদিহিতামূলক প্রশাসন গড়ে তুলতে চাই। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি মন্ত্রিসভার সদস্যরাও সম্পদের হিসাব জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।  সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি মন্ত্রীদের সম্পদের হিসাব দেওয়া উচিত।  সরকারের এক মেয়াদে মন্ত্রীরা চাইলে দুবার সম্পদের হিসাব দিতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমরা প্রতি বছর রিটার্ন জমা দিয়ে থাকি। সম্পদের হিসাবও দেওয়া যায়।  এখন থেকে আমি আমার সম্পদের হিসাব জমা দেব।  সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি মন্ত্রীরাও সম্পদের হিসাব জমা দেবেন। সাংবাদিকরা চাইলে তথ্য অধিকার আইনে সম্পদের হিসাব চাইতে পারেন।

তিনি আরো বলেন, প্রতি তিন বছর পর পর সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার নিয়ম থাকলেও অতীতে কোনো সরকারের আমলে সেটা হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকারই বলেছে, সবাইকে নিয়মিত সম্পদের হিসাব দিতে হবে। এজন্য প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে, দপ্তরে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  আশা করি এখন থেকে তারা নিয়মিত সম্পদের হিসাব জমা দেবেন।

বাংলা‌দেশ সে‌ক্রেটা‌রি‌য়েট রি‌পোর্টার্স ফোরাম সভাপ‌তি তপন বিশ্বাসের সভাপ‌তি‌ত্বে, সাধারণ সম্পাদক মাসউদ উল হ‌কের সঞ্চালনায় সংলা‌পে প্রধান তথ‌্য কর্মকর্তা শাহনূর মিঞাসহ কমি‌টির নেতারা উপ‌স্থিত ছি‌লেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads