• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জৈষ্ঠ ১৪২৯

জাতীয়

অনুমোদনের পরও চালু হচ্ছে না অ্যান্টিবডি টেস্ট

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৩ অক্টোবর ২০২১

শরীরে ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা কতটুকু তা বুঝতে প্রয়োজন অ্যান্টিবডি টেস্ট। বিশেষজ্ঞরা দেশে করোনার অ্যান্টিবডি পরীক্ষা চালু করতে বার বার তাগিদ দিয়েছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীও পরীক্ষা চালু করার ঘোষণাও দিয়েছিলেন। গত জানুয়ারিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় অ্যান্টিবডি পরীক্ষার জন্য নীতিমালার অনুমোদন দেয়। তারপরও দেশে করোনার অ্যান্টিবডি পরীক্ষা চালু হয়নি।

করোনা আক্রমণের শুরু থেকেই বিশেষজ্ঞরা করোনা শনাক্তসহ মহামারি নিয়ন্ত্রণে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিতে আরটি-পিসিআরসহ অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্ট শুরু করার ওপর গুরুত্বারোপ করে আসছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা চালু করার ঘোষণা দেয় সরকার। এরপর গত ২৪ জানুয়ারি সচিবালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, অনেক দিনের দাবি ছিল অ্যান্টিবডি টেস্টের। আজ থেকেই এটা চালু হয়ে গেল। দেশে এখন কেবল গবেষণা কাজের জন্য অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করছে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, আইইডিসিআরের সঙ্গে যৌথভাবে আইসিডিডিআরবি-সহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। তবে সেটা পুরোটাই গবেষণা কাজের জন্য। ব্যক্তিপর্যায়ে অ্যান্টিবডি পরীক্ষা এখনো হচ্ছে না।

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এ ঘোষণার পর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সরকারি হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে চিঠি দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এরপর গত ১১ মার্চ সরকারি ও বেসরকারিভাবে অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করার নির্দেশিকাও অনুমোদন করা হয়। এরপর এখন পর্যন্ত চালু হয়নি অ্যান্টিবডি টেস্ট।

গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি তাদের সভায় অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্টের ওপর গুরুত্বারোপ করে। কমিটি মনে করে, তিন পদ্ধতিতে (পিসিআর, অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্ট) কোভিড-১৯ পরীক্ষা কার্যক্রম পাশাপাশি থাকলে তা মহামারি মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

অ্যান্টিবডি টেস্টকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং অবশ্যই এখন সময়ের দাবি উল্লেখ করে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা গনমাধ্যমকে বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জিজ্ঞেস করা উচিত অ্যান্টিবডি টেস্ট তারা সাধারণ মানুষের জন্য কবে চালু করবে?

পরামর্শক কমিটির আরেক সদস্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, টিকা দেওয়ার কারণে মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে। আবার যারা আক্রান্ত হয়েছেন কিন্তু উপসর্গ না থাকায় জানেন না, তাদের শরীরেও অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে। মোট এই হিসাব পাওয়ার পর মহামারির এই সময়ে পরিকল্পনা করতে সুবিধা হবে।

আমাদের হার্ড ইমিউনিটি হতে আর কত ইমিউনিটি দরকার হবে, কত মানুষের, কত পেশার কত মানুষের ইমিউনিটির দরকার হবে, সেটা হিসাব করা যাবে উল্লেখ করে অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, যদি ৬০ শতাংশ মানুষের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে যায় তাহলে আরো ২০ থেকে ২৫ শতাংশ মানুষের অ্যান্টিবডি তৈরি করতে হবে। কিন্তু এখনো যদি কিছুই না জানি, তাহলে আমরা কোথায় আছি-সেটাই তো বোঝা যাবে না। সরকারের উচিত এখন ব্যক্তিপর্যায়ে অ্যান্টিবডি পরীক্ষার অনুমোদন দেওয়া।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads