দেশে হঠাৎ করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত বেড়েছে। গত একদিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে ৫০৯ জনের দেহে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৫ লাখ ৮৫ হাজার ২৭ জনের দেহে। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৮ হাজার ৭০ জনের।

আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসটিতে গত একদিনে মৃত্যুর সংখ্যা চলতি বছরের ২৫ নভেম্বরের পর সর্বোচ্চ। সেদিন এক দিনে ৯ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর । শনাক্তের এই সংখ্যাও গত ১৩ অক্টোবর বা দেড় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। সেদিন একদিনে শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৫১১ জন।

পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হারও ঊর্ধ্বমুখী। গত একদিনে যত জনের করোনা পরীক্ষা হয়েছে, তাদের মধ্যে ২.২৫ শতাংশের মধ্যে ভাইরাসটির উপস্থিতি দেখা গেছে। শনাক্তের হার ছিল ২.২৭ শতাংশ। এক সপ্তাহ আগেও ধারাবাহিকভাবে এক শতাংশের মধ্যে ছিল। সম্প্রতি তা ২ শতাংশ ছাড়ায়।

২০২০ সালের মার্চে দেশে শনাক্ত হওয়া ভাইরাসটি দুইবার ব্যাপক আকারে মানুষের মধ্যে ছড়ায়। প্রথমবার প্রায় ১১ মাস মানুষকে ভোগানোর পর মহামারি নিয়ন্ত্রণে আসে গত ৪ ফেব্রুয়ারি। তত দিনে মারা যায় ৮ হাজার ১৬১ জন। শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৩৬ হাজার ৫৪৫ জন।

তবে নিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতি বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। মার্চের শেষেই আবার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানে দেশে। এই পরিস্থিতি চলে গত ৩ অক্টোবর পর্যন্ত। ৪ অক্টোবর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় দ্বিতীয় ঢেউ ছিল আরও প্রাণঘাতী। যেদিন এই ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসে, সেদিন পর্যন্ত দেশে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৭ হাজার ৫৯১ জনে। সেদিন পর্যন্ত শনাক্ত ছিল ১৫ লাখ ৫৮ হাজার ৭৫৮ জন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার টানা দুই সপ্তাহ ৫ শতাংশের নিচে হলে কোনো দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে ধরা হয়। সে হিসেবে বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। তবে ইউরোপ-আমেরিকায় করোনার সংক্রমণ ক্রমেই বেড়ে চলা আর প্রতিবেশী ভারতে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বেগ আছে দেশে। এরই মধ্যে দেশেও বেশ কয়েকজনের শরীরে ওমিক্রন ধরা পড়েছে। গত একদিনে ৮৫২টি ল্যাবে ২২ হাজার ৬৬৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নতুন মারা যাওয়া ব্যক্তির চারজন পুরুষ, তিনজন নারী। তাদের বয়স চল্লিশোর্ধ্ব একজন, ষাটোর্ধ্ব ছয়। মারা যাওয়া ব্যক্তির পাঁচজন ঢাকার বাসিন্দা। বাকি দুইজন চট্টগ্রাম ও রাজশাহীর।
গত এক দিনে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩৯৫ জন। এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৫ লাখ ৪৮ হাজার ৮১১ জন। সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৭২ শতাংশ।