• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯
তিন স্তরের নিরাপত্তায় প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

তিন স্তরের নিরাপত্তায় প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ

  • ইমরান আলী
  • প্রকাশিত ০১ মে ২০২২

জাতীয় ঈদগাহ ময়দান ঘিরে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা পুলিশ ও র্যাব। পুরো ঈদগাহ ময়দানকে ঘিরে তিন স্তরের নিরাাপত্তার চাদরে ঢাকা হয়েছে।

এদিকে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায়ের আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি  মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। গতকাল জাতীয় ঈদগাহ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন তিনি।

তিনি বলেন, আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে মহামারি করোনা কাটিয়ে দুই বছর পর আবারো জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করতে পারবো। সে আয়োজন আমরা করেছি। এজন্য সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

নিরাপত্তার বিষয় উল্লেখ করে মেয়র তাপস বলেন, আপনারা লক্ষ্য করেছেন জাতীয় ঈদগাহ সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। একই সঙ্গে সুন্দর একটি আয়োজন ও পরিবেশ সৃষ্টি করছি- যাতে করে আসন্ন ঈদুল ফিতরের নামাজ জাতীয় ঈদগাহে ঢাকাবাসী আদায় করতে পারেন।

তিনি বলেন, আমরা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে জেনেছি সকাল সাড়ে আটটায় ঈদের প্রধান জামাত এখানে অনুষ্ঠিত হবে। আমাদের আয়োজনে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের জামাত আদায় করতে পারবে। সমগ্র ঢাকাবাসীকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, যাতে করে জাতীয় ঈদগাহে এসে সবার সঙ্গে ঈদের জামাত আদায় করতে পারেন। এখানে নারীদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার নারী একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন।

বৈরী আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে জাতীয় ঈদগাহের প্রস্তুতির বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র বলেন, আমরা পুরোটাই ত্রিপল (বৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা) দিয়েছি, যাতে করে ঝড়-বৃষ্টি হলেও যেন নামাজের কোনো সমস্যা না হয়। সবকিছু বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এ সময় ঢাকাবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ঈদ আনন্দ আরও পরিপূর্ণ করতে সবাইকে জাতীয় ঈদগাহে জামাতে একসঙ্গে নামাজ আদায় করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।

অন্যদিকে শনিবার সকালে জাতীয় ঈদগাহ ময়দান পরিদর্শন শেষে ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম ও র্যাবের মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের এ সকল তথ্য দিয়েছেন।

পুরো ঈদগাহের নিরাপত্তায় থাকছে-এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব), ঢাকা মহানগর পুলিশ, পুলিশের বিশেষ প্রশিক্ষিত দল সোয়াত, সাদা পোশাকের পুলিশ এবং গোয়েন্দা সদস্য এবং ডগ স্কোয়াড।

রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে নামাজ আদায় করবেন।

এদিকে, মহানগর পুলিশের কমিশনার শফিকুল ইসলাম সকালে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার খোঁজ নিতে যান জাতীয় ঈদগাহ মাঠে।

তিনি এ সময় সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে যেহেতু জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ঈদের নামাজ পড়বেন-সেহেতু ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের ভেতরে ও বাইরে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পুলিশের একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।

ডিএমপি সূত্র বলছে, জাতীয় এই ময়দানে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী পার হয়ে মুসল্লীদের ময়দানে প্রবেশ করতে হবে। প্রবেশ পথে বসানো হয়েছে আর্চওয়ে। তাছাড়া মৎস্য ভবন, প্রেস ক্লাব এবং শিক্ষা ভবন পর্যন্ত নিয়োজিত থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

সূত্রমতে, রাষ্ট্রপতি জাতীয় ঈদগাহে নামাজ আদায় করবেন সেজন্য তাঁর নিরাপত্তায় থাকবে তার নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট প্রেসিডেন্ট গার্ডের সদস্যরা এবং স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সেস (এসএফএফ)। নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রপতির নামাজের বিশেষ জায়গাটি ঘিরে রাখবেন তারা।

এদিকে, শনিবার সকাল থেকেই পুলিশের বিশেষ প্রশিক্ষিত সোয়াতের একটি দল জাতীয় ঈদগাহের নিরাপত্তায় সেখানে অবস্থান নিয়েছে। সোয়াতের ৩০ সদস্যের একটি দলকে মাঠে নামোনো হয়েছে।

সোয়াত সদস্যরা জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের মূল গেটে অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রসহ স্ট্যান্ডবাই থাকবে। ঈদের জামাত শেষ হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে দায়িত্ব পালন করবে।

ঈদগাহ ময়দানের প্রধান গেটের মুখে র্যাব ও পুলিশের পৃথক দুটি নিয়ন্ত্রণক বসানো হয়েছে। থাকছে কোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসি)। এর মাধ্যমে পুরো ময়দান পর্যবেক্ষণ করা হবে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে সোমবার নতুবা মঙ্গলবার মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল ফিতর অনুষ্ঠিত হবে। সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসবের অন্যতম আনুষ্ঠানিকতা হচ্ছে ঈদের নামাজ। আর এজন্য প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ ময়দান।

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের মূল ফটকে থাকবে ৭টি ডগ স্কোয়াড। জার্মান শেফার্ড যার মাধ্যমে ক্ষতিকর দ্রব্য নিয়ে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে এ স্কোয়াড তাকে শনাক্ত করবে। কেউ অস্ত্র বহন করলে তাকে শনাক্তসহ অস্ত্র খুঁজে বের করতে সহায়তা করবে ল্যাবরাডর ডগ স্কোয়াড ।

মাদকদ্রব্য স্কোয়াড মাদক নিয়ে নিয়ে প্রবেশ করলে তাকে শনাক্ত করবে। ঈদগাহ মাঠের মূল ফটকে থাকছে- অত্যাধুনিক ডিটেক্টর। শরীরে স্পর্শ করা ছাড়াই সন্দেহভাজন কিছু শনাক্ত করা যায় এসব ডিটেক্টর দিয়ে।

ঈদগাহ মাঠ পরিদর্শন শেষে র্যাবের মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, সারা দেশে গুরুত্বপূর্ণ ঈদগাহ ময়দানগুলোতে র্যাবের তিন স্তরের নিরাপত্তা থাকবে। জাতীয় এ ঈদগাহ ময়দানকে ঘিরে র্যাব সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। তিনটি প্রবেশ পথেই র্যাবের পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে বিপুল সংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন থাকবে। নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি হবে না।

তিনি আরো বলেন, ঈদের পর মানুষ যেন নির্বিঘ্নে তাদের কর্মস্থলে ফিরতে পারে সেজন্য র্যাবের পক্ষ থেকেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads