• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯
দেশের ৫ কোটি মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ইউরোপের মতো

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি

ফাইল ছবি

জাতীয়

দেশের ৫ কোটি মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ইউরোপের মতো

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৩ জুন ২০২২

দেশের সাড়ে চার থেকে পাঁচ কোটি মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ওয়েস্টার্ন ওয়ার্ল্ড (পশ্চিমা বিশ্ব) ইউরোপের মতো বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এ কথা বলেন। ‘দ্বিতীয় চা দিবস ২০২২’ উপলক্ষে এ ব্রিফিং করা হয়।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে তিন কোটি মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে। আমি কখনই বলিনি ১৭ কোটি মানুষের পয়সা বেশি হয়েছে। রিয়েলিটি (বাস্তবতা) হলো দেশের ২০ ভাগ মানুষের লো ইনকাম (নিম্নআয়), সেটাকে মাথায় রাখতে হবে।

টিপু মুনশি বলেন, ১৭ কোটি থেকে তিন কোটি বাদ দিলে যে ১৪ কোটি থাকে, তাদের মধ্যে সাড়ে চার থেকে পাঁচ কোটি মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ওয়েস্টার্ন ওয়ার্ল্ড (পশ্চিমা বিশ্ব) ইউরোপের মতো। দরিদ্র শ্রেণির তিন কোটি মানুষকে অ্যাডজাস্ট করা দরকার, সেটার চেষ্টাই করে যাচ্ছি। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে, সেটা আপনারাও জানেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেখা দরকার সাধারণ মানুষ সঠিক দামে পণ্য কিনতে পারছেন কি না। ক্রয়ক্ষমতাও দুটি দিক রয়েছে, একটি হলো- যারা উৎপাদনকারী ও যারা ভোক্তা। যদি এমন একটি পর্যায়ে নিয়ে যাই যে, উৎপাদনকারী আর ইন্টারেস্ট পাচ্ছে না। তাহলে কিন্তু প্রভাব পড়বে।

টিপু মুনশি আরও বলেন, আমাদের দেখতে হবে উৎপাদন খরচ, প্রফিট, মার্জিন কতটা থাকা উচিত। সামঞ্জস্যপূর্ণ দামের ক্ষেত্রে যেন কোনোভাবে বড় ধরনের পার্থক্য না থাকে। এটা দেখার জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয় যেভাবে সাহায্য চাইবে, আমরা সাহায্য করবো।

মন্ত্রী বলেন, নিম্নআয়ের মানুষের স্বার্থ দেখাটাই আমাদের লক্ষ্য। যাদের টাকা আছে, তিনি কী করবেন সেটা দেখার বিষয় না। কথা হলো- ন্যায্যমূল্যে যেসব পণ্য পাওয়া উচিত, সেটার দাম অবশ্যই আমরা দেখবো। খাদ্য মন্ত্রণালয় যখন আমাদের ডাকবে, তখন অবশ্যই যাবো। খাদ্যের বিষয়টি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কনসার্ন।

এদিকে, বিশ্ব বাজারে মূল্য হ্রাসের প্রেক্ষাপটে দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমার ‘সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে’ বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

আগামী সপ্তাহে ভোজ্য তেলের মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন তিনি।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, পর্যালোচনায় বাড়ার সম্ভাবনা কম, তবে মূল্য কিছুটা কমতে পারে।

আমদানি থাকলেও খুচরা বাজারে সরবরাহ সঙ্কটের মধ্যে গত ৫ মে সয়াবিন তেলের দাম এক লাফে ৪০ টাকা বাড়িয়ে দেন মিল মালিকরা। ফলে সর্বশেষ নির্ধারিত দর অনুযায়ী, খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটারে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়।

প্রতি লিটার বোতলের সয়াবিন তেলের দাম ১৬০ টাকা থেকে বাড়িয়ে সে সময় ১৯৮ টাকা করা হয়। ৫ লিটারের বোতলের দাম নির্ধারণ করা হয় ৯৮৫ টাকা।

আর পরিশোধিত পাম সুপার তেলের প্রতি লিটারের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ঠিক করে দেওয়া হয় ১৭২ টাকা, যা আগে ছিল ১৩০ টাকা।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী ৫/৬ দিনের মধ্যে আমরা ভোজ্য তেলের মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বসব। আমাদের কাছে খবর আছে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমতির দিকে। পাম অয়েলের দাম ইতোমধ্যে কমেছে। সয়াবিন তেলের দাম কমতির দিকে।

এবারের মূল্য নির্ধারণ গত মাসের দামের ওপর ভিত্তি করে হবে জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, “আজকেও আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কিছুটা কমেছে। তবে এর প্রভাব পড়বে এক মাস পর। এখন আমরা যে দামটা নির্ধারণ করব সেটা মে মাসের ল্যান্ডিং কস্টের উপর ভিত্তি করে হবে।

টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে পণ্য বিক্রির যে সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে, তা ১৫ জুন থেকে শুরু হতে পারে বলে জানান মন্ত্রী।

কোভিড মহামারীর মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরুর পর সয়াবিনসহ ভোজ্য তেলের দর বিশ্ববাজারে চড়তে থাকায় দেশের বাজারেও দাম বাড়ানোর পক্ষে কথা বলে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা।

এর মধ্যে রোজার ঈদের আগে হঠাৎ করেই খুচরা বাজার থেকে সয়াবিন তেল উধাও হয়ে যায়, যদিও আমদানিতে কোনো সঙ্কট ছিল না।

দাম বাড়ানোর জন্য ডিলার ও পাইকারি বিক্রেতারা তেলের মজুদ শুরু করেছিলেন সে সময়। ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানেও বিষয়টি ধরা পড়ে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads